জাবিতে চলছে ‘হিম উৎসব’
প্রকাশিত : ১৪:৪৩, ২৫ জানুয়ারি ২০২৩
‘রুপান্তরের যাত্রাপথে শেকড় হোক সঙ্গী’ প্রতিপাদ্যে দীর্ঘ তিন বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ‘হিম উৎসব-১৪২৯’। উৎসবে থাকছে ভাব গানের আসর, কবিগান, লাঠিখেলা, নৃত্যানুষ্ঠান, সঙ্গীত পরিবেশনা, আর্টক্যাম্প দিনব্যাপী চিত্রাঙ্কন ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীসহ আরও নানান লোকজ সাংস্কৃতিক অনুষঙ্গ।
এবারের হিম উৎসব উৎসর্গ করা হয়েছে নিহত নির্মাণ শ্রমিক শাহের আলীসহ কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডের শিকার সকল শ্রমিককে। এই উৎসবে অবহেলিত লোকজ সংস্কৃতির নানা শিল্পকে উপস্থাপন করা হবে।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে কাঙ্গালিনী সুফিয়াকে সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এসময় কাঙ্গালিনী সুফিয়া তিনটি মৌলিক গান পরিবেশন করেন। এরপর অনুষ্ঠিত হয় ‘নৃত্য-নৈবেদ্য’ শীর্ষক নৃত্যানুষ্ঠান। এতে ভরতনাট্যম, সুফি ফিউশন নাচ প্রদর্শন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে টিএসসির সম্মুখে মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে পরিবেশিত হয় আওয়াজ (বহুস্বরের গান)। এতে গান পরিবেশনা করে ব্যান্ড রংখেক রংসাক, হীভ ক্ল ও রেড টোয়াইলাইট।
দ্বিতীয় দিন (২৫ জানুয়ারি) টিএসসির মাঠে (মুক্তিযোদ্ধা চত্তর) বিকাল ৪টায় লাঠিখেলা, সন্ধ্যা ৬টায় কবিগান এবং দিনব্যাপী পারফরম্যান্স আর্ট পরিবেশিত হবে।
উৎসবের শেষ দিন (২৬ জানুয়ারি) চারুকলা এক্সটেনশনে সকাল ১০টায় ‘দৃশ্যত’ নামক আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে। বেলা ১১টায় পরিবেশিত হবে ‘তাই জানাই গানে’ নামে কথা ও গান। সন্ধ্যা ৬টায় ছবি চত্তরে অনুষ্ঠিত হবে ভাব সঙ্গীতের আসর ‘কোথায় পাবো তারে’।
এছাড়াও অনুষ্ঠানের তিনদিন জুড়ে থাকছে জহির রায়হান অডিটোরিয়ামের পার্শ্বে ‘আলেখ্যদর্শন’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে হারিয়ে যেতে বসা লোকজ সংস্কৃতির চর্চা, বিকাশ ও সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ‘পরম্পরায় আমরা’ নামক উন্মুক্ত প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা হয়। যারা প্রতিবছর আয়োজন করে আসছে হিম উৎসবের। করোনার জন্য ৩ বছর বন্ধ থাকার পূর্বে এ পর্যন্ত ৫ বার বসেছে ‘হিম উৎসব’র আসর।
‘হিম উৎসব-১৪২৯’ নিয়ে এর অন্যতম আয়োজক রিফাত খান অনিক বলেন, “এবারের হিম উৎসবটা নিউ নরমালের হিম উৎসব। কারণ এটা করোনার তিন বছর পর হচ্ছে। এই তিন বছরে আমাদের আচার আচরণ, আমাদের সংস্কৃতি অনেকটা পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গেছে যেটাকে আমরা বলছি রূপান্তর। একারণেই ট্যাগ লাইন হচ্ছে, রূপান্তরের যাত্রাপথে শেকড় হোক সঙ্গী।”
তিনি আরও বলেন, “এই যে নিয়ত রূপান্তরের মধ্য দিয়ে আমরা যাচ্ছি এরমধ্যেও আমাদের শেকড়কে ভুলিনি। আমাদের শীতকালীন যে সংস্কৃতি চর্চা ছিল যেমন, কবিগান বাউলগান এগুলো আমরা রেখেছি। এর পাশাপাশি এই সময়কে রিফ্লেক্ট করে এমন একটা সেগমেন্টও রেখেছি যেটার নাম আওয়াজ। সেখানে ভিন্ন ভাষা জনগোষ্ঠীর মানুষ তাদের ভাষায় গান পরিবেশন করেছে। এখানে একটা মান্দি ব্যান্ড ছিল, মান্দি নাচও ছিল। লালনের গানে ভাব নৃত্য ছিল। এই কারণেই এই নিউ নরমালের হিম উৎসবটা বিশেষ।”
এএইচ
আরও পড়ুন