জাবিতে মাদক সেবনকালে নেপালী শিক্ষার্থী আটক
প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রকাশ্যে মাদক সেবনরত অবস্থায় এক নেপালী শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা আড়াইটার দিকে হলের ৩১৬/বি কক্ষ থেকে মাদকসেবনরত অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে আটক করে মীর মশাররফ হোসেন হল প্রশাসন।
আটককৃত আশির্বাদ যাদব ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (কুষ্টিয়া) এর ইলেক্ট্রনিক এন্ড ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র। তার বাড়ি নেপালের কাঠমন্ডুতে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৩১৬/বি কক্ষ থেকে গাজার দুর্গন্ধ পেয়ে আমরা হল প্রাধ্যক্ষকে জানাই। পরে প্রাধ্যক্ষ স্যার হলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে ওই কক্ষে অভিযান চালায় এবং তাকে গাজাসহ হাতেনাতে আটক করে। এসময় তার কাছে ৪ প্যাকেটে ১০ গ্রাম গাজা ও গাজা খাওয়ার সরঞ্জাম পাওয়া যায়।
এদিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের হলের ৩১৬/বি কক্ষে আবাসিক ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বাস্কেটবল খেলোয়াড় কামরুল থাকেন।
আটককৃত আশির্বাদ যাদবের সাথে কথা বলে জানা যায়, সে গতকাল রাতে কুষ্টিয়া থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে মার্কেটিং ৪৭ ব্যাচ শিক্ষার্থী খালেদ সিয়ামের সাথে যোগাযোগ করে মীর মশাররফ হোসেন হলে রাত্রি যাপনের জন্য আসে। পরে, খালেদ সিয়াম তাকে হলের ৩১৬/বি কক্ষে থাকার ব্যবস্থা করে। ওই কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বাস্কেট বল খেলোয়াড় কামরুল থাকেন। তিনি জানান, বাস্কেটবল খেলার সূত্রে তারা তিনজন পূর্বপরিচিত।
হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা মাদক বিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইনফরমারদের তথ্যমতে ৩১৬/বি তে অভিযান চালাই। সে প্রথমে অস্বীকার করে কিন্তু অভিযানে তাকে গাজা সহ পাওয়া যায়। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, সে হলে এর আগেও এসেছে। আমরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোর অধ্যাপক রাশিদুল আলম এর উপস্থিতিতে আশুলিয়া থানায় সোপর্দ করি।
এ বিষয়ে ৩১৬/বি কক্ষের আবাসিক ছাত্র কামরুল বলেন, আমি হল ছেড়েছি গত সেপ্টেম্বর। হল থেকে মালামাল নিয়ে আসিনি। তাই আমার চাবিটা খালিদের কাছে দিয়ে আসি। আমি আশির্বাদ যাদবকে চিনি। তবে সে যে গতকাল আমর রুমে ছিলো এটা আমি জানি।
এবিষয়ে জানতে খালিদ সিয়ামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে, তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। পরে হল প্রাধ্যক্ষকে মুঠোফোনে তিনি বলেন, মাসখানেক আগে বাস্কেটবল খেলারসূত্র ধরে আমাদের পরিচয় হয়। আজকে ভোরবেলা সে আমার কাছ থেকে চাবি নিয়েছে। আমি এখন ঢাকায় আছি।
কামরুলের কক্ষে মাদকসেবনের বিভিন্ন উপকরণ পাওয়ার বিষয়ে সিয়ামকে জিজ্ঞেস করলে সিয়াম জানান, এটা খুব'ই একটা বাজে কথা বললেন স্যার। কামরুল আমাদের সাথে চলে। সে একাজ করলে জানতাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, তাকে মাদকসহ পাওয়া গেছে। আমরা তাকে এইভাবে ছেড়ে দিতে পারিনা। তাই তাকে আমরা আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করি। এ বিষয়ে অনুসন্ধান করতে তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে হল প্রাধ্যক্ষকে বলেছি।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মাহমুদুল হাসান বলেন, আমরা তাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। এবিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
এমবি
আরও পড়ুন