ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৯ জানুয়ারি ২০২৫

জার্মানিতে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় মের্কেল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৮, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | আপডেট: ২১:১০, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

টানা চতুর্থবারের মত জামার্নির চ্যান্সেলর হলেন অ্যাঙ্গেলা মের্কেলে। তবে তাঁর দল সিডিইউ/সিএসইউ প্রায় ৭০ বছরের মধ্যে নির্বাচনে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে। যদিও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ট আসন পাওয়ায় দলটিকে সরকার গঠনে বেগ পেতে হবে না। খবর বিবিসির।


বিবিসির খবরে বলা হয়, মের্কেলের দল ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জার্মান পার্লামেন্টে সবচেয়ে বড় দল হিসেবেই স্থান অক্ষুণ্ণ রেখেছে। তাঁর জোটের বর্তমান অংশীদার সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি এসপিডি ২০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। তবে আপাতত এই দলটি ম্যার্কেলের সঙ্গে না থেকে বিরোধী দলের আসনে বসার ঘোষণা দিয়েছে।


কট্টর ডানপন্থী, ইসলাম, শরণার্থী ও অভিবাসনবিরোধী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) ১৩ দশমিক ১ শতাংশ আসন পেয়ে তাঁর তৃতীয় স্থান পেয়েছে। কট্টর ডানপন্থি দল অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি-এএফডি ইসলাম ও অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য দিয়ে এবারই সংসদে প্রথম এত আসন পেয়েছে। এছাড়া এফডিপি সাড়ে ১০ শতাংশ, গ্রিনস পার্টি ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ও বাম দল ৮ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট পেয়েছে।


টানা চতুর্থবার জয় পাওয়ার পর মের্কেল সমর্থকদের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর প্রত্যাশা ছিল দল আরও ফল করবে। এএফডি পার্টির উত্থান ঘটায় জনগণের ভয়, উদ্বেগের কথা তিনি শুনবেন বলে জানান।
এদিকে নির্বাচনের এই ফলাফলের পর বিক্ষোভ হয়েছে। কট্টর ডানপন্থীরা মের্কেলের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ করেন। মের্কেলের শরণার্থী স্বাগত জানানোর নীতির কট্টর বিরোধী এই বিক্ষোভকারীরা ব্যঙ্গ করে ‘শরণার্থীদের স্বাগত জানানোর প্ল্যাকার্ডও বহন করেন।


সাপ্তাহিক ছুটির দিন রোববার সকাল আটটা থেকে শুরু হয় জার্মানির পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। সকালের দিকে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভিড় কিছুটা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভোটার উপস্থিত। ভোট চলে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।


নির্বাচনের আগে সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছিল, ম্যার্কেলেই ক্ষমতায় আসছেন। তাঁর দলটি ৩৬ শতাংশ ভোট পেতে পারে। বুথফেরত জরিপও ম্যার্কেলের আবার ক্ষমতায় আসার আভাস দিয়েছিল। বার্লিন, মিউনিখ, হামবুর্গ, স্টুটগার্ট, ফ্রাঙ্কফুর্ট, ডুসেলডর্ফ, কোলন, হ্যানোভার প্রভৃতি বড় শহরের ভোটকেন্দ্রগুলোতে বিপুলসংখ্যক ভোটার উপস্থিতি ছিল।


মের্কেল তাঁর নিজ এলাকা মেকেলবুর্গ ফর পোমেন রাজ্যের রুগেন-গ্রাইফভাল্ডারের ভোটকেন্দ্রে ভোট দেন। অপর দিকে তাঁর অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক দলের মার্টিন শুলজ ভোট দেন নিজ এলাকা নর্থরাইন ভেস্টারফেল রাজ্যের ভুরসলেনে।

কট্টর ডানপন্থী, ইসলাম, শরণার্থী ও অভিবাসনবিরোধী অলটারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) আগের চেয়ে ভালো করবে সেই আভাসও মিলেছিল।


জার্মান পার্লামেন্টে ৫৯৮ আসনের মধ্যে ২৯৯টিতে সরাসরি নির্বাচন হয় আর বাকি ২৯৯ আসনে দলীয় ভোটপ্রাপ্তির শতাংশের হিসাব অনুযায়ী বিভিন্ন দলের তৈরি করা প্রার্থীর তালিকা থেকে পার্লামেন্ট সদস্য হন।

২০০৫ সাল থেকে জার্মানি শাসন করা মের্কেলকে আন্তর্জাতিকভাবেও স্থায়িত্বের প্রতীক মনে করা হয়। ইউরোপজুড়ে অভিবাসী সংকটের সময় জার্মানির দরজা খুলে দেওয়ায় মের্কেল অভ্যন্তরীণভাবে সমালোচনার মুখে পড়লেও পরে সেটি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছেন বলেই নির্বাচনী ফল বলছে।


গত বছর স্থানীয় বিভিন্ন নির্বাচনে কট্টরপন্থী দল এএফডি কাছে হেরে অনেকটা আশাহত হয়েছিলেন অ্যাঙ্গেলা মের্কেল। ২০১৫ সালে ১০ লাখের বেশি শরণার্থীর জন্য জার্মানির সীমান্ত খুলে দিয়ে চ্যান্সেলর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাকে পুঁজি করে আঞ্চলিক নির্বাচনগুলোতে এগিয়ে যায় এএফডি।

ওই দলটির উত্থানে কমিউনিস্টশাসিত পূর্ব জার্মানিতে বড় হওয়া যাজকের মেয়ে মেরকেল পুনর্নির্বাচন করা নিয়েই সংশয়ে ছিলেন। তবে চলতি বছরে অভিবাসী ইস্যুকে নিয়ন্ত্রণে আনার পর আবার উঠেপড়ে লাগেন তিনি এবং অস্থিতিশীল বিশ্বে নিজেকে স্থিতিশীলতার কাণ্ডারি হিসেবে প্রমাণ করেন।

//এআর


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি