জিকির মোরাকাবা মোহাসাবা
প্রকাশিত : ২৩:১৯, ২০ মে ২০১৮ | আপডেট: ০৯:৫৮, ১০ জুন ২০১৮
হযরত আদমকে (আ.) আল্লাহ তিনটি ইবাদাত শিখিয়েছিলেন- জিকির, মোরাক্বাবা এবং মোহাসাবা। এই তিনটি এবাদাতই ছিল তার নামাজ। হযরত আদম আলেহা আলেহা, আলেহা এই নামে আল্লাহকে ডাকতেন। এই ছিল তার নামাজ। আমাদের রাসূল (সা.) নবুয়তের এলান করার আগে বহু বছর হেরা পর্বতের গুহায় এভাবে জিকির করেছেন। এছাড়া হযরত আদম গর্দান ঝুঁকিয়ে মোরাক্বাবায় বসে থাকতেন- ধ্যানে নিমগ্ন হতেন যেমনটি করেছেন আমাদের হূযুর পাক (সা.) নিজে।
মওলানা আজাদ সুবহানির একটা বই আছে- বিপ্লবী নবী- তাতে লেখক হেরার গুহায় হুযূর পাক (সা.) এ সাধরণ কথাই বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন। মোরাক্বাবা হচ্ছে ধ্যানে সমগ্র সৃষ্টিকে ধারন করা -অন্য কথায় স্রষ্টার সত্তার মাঝে বিলিন হয়ে যাওয়া। এজন্যই কুর`আনে বারবার বলা হয়েছে, স্রষ্টার নিদর্শনের কথা এবং এদের ওপর ধ্যান করার কথা।
আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য, দিন, রাত- এ সবের মাঝেই আছে স্রষ্টার রহস্য। ধ্যান হচ্ছে এ রহস্যের চাবিকাঠি। সূরা সাবার ৪৬ নং আয়াতে লক্ষ করা যায়। এই মোরাক্বাবার কথাই বলা হয়েছে– ‘ক্বুল ইন্নামা আ’য়িজুকুম বেওয়াহিদাতিন আন তাকুমু লিল্লাহে মাসনা ওয়া ফুরাদা সুম্মা তাতাফাক্কারুন অর্থাৎ বলুন, ‘আমি তোমাদের একটি বিষয়ে উপদেশ দিচ্ছি- দুইজন কিংবা এক একজন করে দাঁড়াও, অতঃপর তোমরা চিন্তা করো।’
আর, হযরত আদমের তৃতীয় সাধনা ছিল মোসাহাবা। রাতের গভীরে একাকী নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে নিজের বিচার করাই হলো মোসাহাবা। তিরমিজি শরীফের একটি হাদীসে হুযূর বলেছেন– ‘বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে মৃত্যু আসার আগেই নিজের বিচার করে নেয়।
হুযূর পাক (সা.) বলেছেন, তোমরা যখন আল্লাহর ইবাদাত করবে তখন হয় ভাববে তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ, না হলে ভাববে আল্লাহ তোমাকে দেখছেন। আমাদের নামাজে এই মোরাক্বাবা নেই বলেই আমাদের নামাজ পরিপূর্ণতা লাভ করে না।
হয়রত সৈয়দ রশিদ আহমদ জৈনপুরির (রহ) সংলাপ সমগ্র বইতে থেকে নেওয়া।
কেআই/এসএইচ/