ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ০৬ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জুলাই গণহত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা এখন কে কোথায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:০৫, ৫ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ১০:০৯, ৫ মার্চ ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

গত আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেকেই নানা মাধ্যমে তদবির করে নিজেদের সুরক্ষিত রেখেছেন। বিচারের কাঠাগড়ায় দাঁড় করানোর পরিবর্তে উলটো তাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। 

জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক ও বর্তমান ৯৫২ পুলিশ আসামি হলেও মাত্র ২৮ জন গ্রেফতার হয়েছেন। গ্রেফতারের হার মাত্র ২.৯৪ শতাংশ। ৫ আগস্ট-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশের বয়স ৭ মাস হতে চললেও গণহত্যায় জড়িত সেই ‘কালপ্রিট’ কর্মকর্তাদের আইনের আওতায় না আনায় হতাশ শহীদ পরিবারের সদস্যরা।

শহীদ পরিবারের সদস্যরা বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ‘পুলিশ লীগের’ জড়িত কর্মকর্তা ও সদস্যদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। এখনই গ্রেফতার করা না হলে বাকিরাও আত্মগোপন বা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। চাকরিতে বহাল থাকলে জুলাই হত্যা মামলায় জড়িত অপরাধীদের রক্ষায় অপচেষ্টা চালাবে তারা। 

এ অবস্থায় গণহত্যায় ‘হুকুমদাতা’ ও ‘সরাসরি জড়িত’ পুলিশ কর্মকর্তাসহ জড়িত সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা। এমনকি নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদেই খুনিদের বিচারের নিশ্চয়তাও চান তারা। 

সেই কর্মকর্তারা কে কোথায়?

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, রমনার ডিসি আশরাফুল ইসলাম জুলাই হত্যা মামলার আসামি। তিনি বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ অফিসে সংযুক্ত আছেন। ৫ আগস্টের পর এডিসি আখতারকে সিলেটের ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করা হয়। সম্প্রতি গ্রেফতারের বিষয়টি টের পেয়ে কর্মস্থল থেকে পালিয়েছেন তিনি। অন্যদের কেউ এপিবিএনে, কেউ কক্সবাজারের উখিয়ায় (এপিবিএন), কেউ গাজীপুরে শিল্প পুলিশে কর্মরত আছেন। শাহবাগ থানার সাবেক ওসি মোস্তাজিরুর রহমান বর্তমানে বরিশালে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারে কর্মরত আছেন। একইভাবে ডিবির কর্মকর্তারাও বিভিন্ন জেলায় কর্মরত আছেন। রমনায় জুলাই হত্যা মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন ডিবির ডিসি হুমায়ুন কবীর, এডিসি ফজলে এলাহী, এসি জাবেদ ইকবাল প্রীতম ও এসি রেফাতুল। এর মধ্যে জাবেদ ইকবাল ট্রাইব্যুনালের একটি মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকিরা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে কর্মরত আছেন।

হত্যায় জড়িত পুলিশ 

জোন বা অঞ্চল হিসাবে চাঁনখারপুল এলাকা পুলিশের রমনা ও লালবাগ বিভাগের আওতাধীন। আন্দোলনের কেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শহিদ মিনারমুখী হওয়ায় চাঁনখারপুলের একাংশসহ বেশির ভাগ এলাকা শাহবাগ থানার অধীন। ৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের সময় রমনা বিভাগে পুলিশের ডিসি (ক্রাইম) মো. আশরাফুল ইসলাম, রমনা জোনাল টিমের এডিসি শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম, এসি মো. ইমরুল দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়া রমনা বিভাগের আওতাধীন নিউমার্কেট জোনাল টিমের এডিসি হাফিজ আল আসাদ, এসি রেফাতুল ইসলাম এবং ধানমন্ডি জোনাল টিমের এডিসির দায়িত্বে ছিলেন মো. ইহসানুল ফিরদাউস, শাহবাগ থানার ওসি মোস্তাজিরুর রহমান ও পরিদর্শক (অপরাশেন) ছিলেন আরশাদ হোসেন।

একই সময়ে রমনা গোয়েন্দা বিভাগে ডিসি (ডিবি) মো. হুমায়ুন কবীর, এডিসি (অ্যাডমিন) মো. আজহারুল ইসলাম মুকুল, রমনা জোনাল টিমের এডিসি মিশু বিশ্বাস, এসি জাবেদ ইকবাল প্রীতম ও ধানমন্ডি জোনাল টিমের এডিসি ছিলেন মো. ফজলে এলাহী। এছাড়া অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিমের এডিসি ছিলেন নাজিয়া ইসলাম। বিভিন্ন পত্রিকা ও টেলিভিশন সংবাদের ভিত্তিতে এসব পুলিশ কর্মকর্তার পরিচয় জানা গেছে।

গণহত্যায় জড়িতদের বিচার প্রসঙ্গে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম বলেন, ট্রাইব্যুনালের মামলার তদন্ত ও বিচার প্রক্রিয়া ভিন্ন। জুলাই হত্যা মামলার তদন্ত পর্যায়ে পুলিশ বা অন্য কারও মাধ্যমে সন্দেহভাজন আসামিরা তথ্য পেয়ে যাচ্ছে। ফলে গ্রেফতারের আগেই তারা পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি শহিদপরিবারের দাবি পূরণে ট্রাইব্যুনালের গ্রেফতারি ক্ষমতার বিষয়টি বিবেচনা করার কথা বলেন।

এসএস//
 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি