ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

জ্বর কিম্বা ভাইরাল ফ্লুতে খেতে পারেন যেসব খাবার

আফসানা নীলা

প্রকাশিত : ১৬:১৯, ১০ মার্চ ২০২০ | আপডেট: ১৬:৪১, ১০ মার্চ ২০২০

Ekushey Television Ltd.

জ্বর.... সামান্য এই অসুখটা কখনো আতংকের নাম। আসছে নানা রূপ ধরে। সেসব রোগ আর ওষুধ নিয়ে উপদেশ, নিয়ম কানুন জানতে-শুনতে ক্লান্ত আমরা। কোনটা মানবো, কোনটা শুনবো, কোনটা করবো না- বুঝে উঠতে পারি না। একবার মনে হয় সবাই সব জানি, আবার মনে হয় আরো জানা দরকার, আরো ভালো থাকা দরকার। 

রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে সুষম খাবার ও নিয়ন্ত্রিত জীবন। তাই শুধু ওষুধ নির্ভর না হয়ে আগে থেকেই রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। পাশাপাশি অসুখে পড়ে গেলেই দরকার উপযুক্ত পথ্য, যা রোগ সারাতে সহায়ক। 

বিজ্ঞান বলে, রোগ ও খাদ্যের মধ্যে সম্পর্কটাকে ভালো করে চিনে নিলেই সুস্থ থাকা সম্ভব। বেশ কিছু খাবার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে, রোগের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া কেউ আক্রান্ত হলে আরোগ্য লাভে সহায়তা করে পথ্য রূপে। তেমন কিছু কথাই আজ আমাদের আলোচনার বিষয়।

জ্বর বা ভাইরাল ফ্লুতে স্যুপ জাতীয় খাবার খান। যা আপনার প্রোটিন ও পানির চাহিদা পূরণ করবে। পাশাপাশি সবজি- মাশরুম, বিট এসব সুপ্যে যোগ করা গেলে খাদ্যের এন্টিঅক্সিডেন্ট রোগ সারাতে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হবে। ভাইরাসজনিত জ্বরের সংক্রমণ থেকে শরীরকে বাঁচাতে এই পথ্যের ভূমিকা বেশি। জ্বরে মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়, তাই বড়রা আমলকী, চালতা কিম্বা করলার স্বাদ নিতে পারেন। শিশুদের দেয়া যেতে পারে নরম খিচুরী, সাগু, পুডিং, ফলের জুস, দই এমন খাবার। এসব খাবার বড়রাও খেতে পারেন যা পর্যাপ্ত ক্যলরির যোগান দেবে। বেশির ভাগ জ্বর, সর্দি-কাশি দিয়ে শুরু হলেও শেষ হয় রোগিয়ে দূর্বল করে। তাই এসময় প্রচুর ক্যালরি বহুল খাবার প্রয়োজন। 

সর্দি-কাশি/ গলাব্যাথা, ঠান্ডা জনিত সমস্যা থাকলে খেতে পারেন গরম পানিতে লেবুর রস ও মধুর মিশ্রণ। হাঁচি-কাশির জন্য গলা শুকিয়ে যায় বলে এসময় প্রচুর পানি খাওয়া দরকার। আদা, লং, এলাচ দেয়া লাল চা বেশ উপকারী। খেতে পারেন তুলসী চা, গ্রিন টির মত পানীয়। এছাড়াও ভিটামিন -ডি’র অভাব থাকলে সহজেই হানা দেয় সর্দি -কাশি । তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি গ্রহণ করা উচিত। থাকতে হবে সূর্যালোকের সংস্পর্শেও । 

অ্যাজমা কিম্বা শ্বাসকষ্ট ধূলির শহরে স্বাভাবিক ঘটনা। সেই সাথে যদি থাকে রোগের শংকা তাহলেই বিপদ। দেহে ভিটামিন-ডি কমে গেলে শ্বাসকষ্ট বাড়ে। জ্বরের সময় শ্বাসকষ্ট থাকলে ফর্টিফাইড দুধ, সামুদ্রিক মাছ, কমলার রস, ডিম দেয়া যেতে পারে রোগীকে। খাদ্য তালিকায় থাকতে হবে ভিটামিন ই জাতীয় খাবারও। সরিষা শাক, খেজুর-আখরোট, কুমড়ার বিচি, বিটা ক্যারেটিনসমৃদ্ধ গাজর, সবুজ শাক, পালংশাক এসব খাবার শ্বাসকষ্ট প্রতিরোধে সহায়তা করে। অন্যদিকে, সালফাইট আছে এমন খাবার যেমন পুঁইশাক, চিংড়ি, আচার, বোতলজাত জুস, এসবে বাড়তে পারে শ্বাসকষ্ট । 

মূলত খাবারের নিয়ম-কানুন আমরা প্রায় সবাই জানি, তবে তা মানা না হলেই দেখা দেয় বিপত্তি। যেমন - ধূমপায়ীরা জ্বরে আক্রান্ত হলে, তাদের শ্বাসকষ্ট হওয়াটাই স্বাভাবিক। শুধু তাই নয় একজন ধূমপায়ীর নিজের যেমন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে, তার সন্তানরাও জন্ম নেয় কম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে। তাই নিজের জন্য তো বটেই সন্তানের স্বার্থে আজই ছেড়ে দিন ধুমপান। আবার সন্দেহ নেই যে সুষম খাবার আমাদের দেহ-মনকে সুস্থ-সবল রাখতে পারে। কিন্তু খেতে গেলে নিজেরাই ঝুঁকে পড়ছি ফাস্ট ফুড, মিষ্টি, তৈলাক্ত খাবারে। রোগ সারাতে বাধা দেয় এসব গুরুপাক খাবার। 

এবার তাই জানা জ্ঞান গুলোকে কাজে লাগাতে নজর দিন নিজের দিকে, পরিবারের দিকে। রোগের সঙ্গে লড়াই করার শক্তিটাও জমা করুন শরীরে। 

লেখক- সাংবাদিক ও মাস্টার্স ইন ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি