ঢাকা, শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪

জ্বর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২০:৪৭, ৯ জুন ২০১৯

জ্বর নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ডে সফর শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। রোববার বিকেল ৫টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়। সংবাদ সম্মেলন চলে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা পর্যন্ত।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, সৌদি আরবে পবিত্র ওমরাহ করার সময়েই তিনি ঠান্ডা লেগে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ওমরাহ করার পর থেকেই গলায় একটু ঠান্ডা লেগে গেছে। এরপর গলায় ফ্যারিংজাইটিস হয়ে জ্বরের একটু সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ডাক্তাররা বলেন, কথা বলো না। কিন্তু এটা আমার জন্য একটা বড় শাস্তি।
প্রায় সোয়া একঘণ্টা ধরে প্রশ্নোত্তরে অংশ নেওয়ার পর তিনি সংবাদ সম্মেলন শেষ করতে বলেন প্রেস সচিব ইহসানুল করিমকে। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, আর পারছি না। জ্বর নিয়েই তো এসেছি।

পরে প্রধানমন্ত্রী তার লিখিত বক্তব্য আর পুরোটা পড়েননি। তিনি সফরের চুম্বক অংশগুলো উল্লেখ করে বাকি বক্তব্য সাংবাদিকদের পড়ে নিতে অনুরোধ করেন। পরে ধৈর্য ধরে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরই বিদেশ সফরের শেষে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। এবারে ১১ দিনের ত্রিদেশীয় সফর শেষে শনিবার (৮ জুন) দেশে ফেরার পরদিনই তিনি এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করলেন।

গত ২৮ মে জাপান দিয়ে ত্রিদেশীয় এই সফর শুরু করেন শেখ হাসিনা। পরে সেখান থেকে সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ড যান তিনি। সফরে তৃতীয় ও শেষ দেশ ফিনল্যান্ড থেকে শনিবার (৮ জুন) সকালে দেশে পৌঁছান তিনি।

ত্রিদেশীয় এই সফরের শুরুতেই জাপানের টোকিওতে ‘দ্য ফিউচার অব এশিয়া’ সম্মেলনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য জাপানের সঙ্গে আড়াইশ কোটি ডলারের উন্নয়ন সহায়তা চুক্তি সই হয় তার সফরে।

জাপান সফর শেষে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কনফারেন্সের (ওআইসি) চতুর্দশ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ৩০ মে শেখ হাসিনা সৌদি আরবে যান। সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পর পবিত্র ওমরাহ পালন করেন তিনি, জিয়ারত করেন মহানবীর (স.)-এর রওজা।

সৌদি আরব থেকে গত ৩ জুন ফিনল্যান্ড যাত্রা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে ৪ জুন দেশটির প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিস্তোর সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরদিন ৫ জুন অল ইউরোপিয়ান আওয়ামী লীগ ও ফিনল্যান্ড আওয়ামী লীগ তার সম্মানে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। প্রধানমন্ত্রী সেই অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।

মুসলিম দেশগুলোতে মানববিনাশী জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়েও কথা বলেন শেখ হাসিনা। ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করে উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কে ভালো মুসলিম, কে না কে সঠিক, কে সঠিক না কে ভালো কাজ করছে কে করছে না- সেটা বিচার করার দায়িত্ব আল্লাহ আমাদের দেননি। কেন মানুষ আল্লার ক্ষমতা কেড়ে নেবে? শেষ বিচার তো তিনি করবেন।

মানুষ মারলেই একেবারে বেহেস্তে চলে যাবে এটা তো কোনো দিন হয় না। একজন লোক নিরীহ মানুষ মেরে বেহেস্তে চলে যাবে এমন নিয়ম তো আল্লাহ করেননি।

এই তো আমরা হাঁটতে হাঁটতে বেহেস্তে পৌঁছলাম এমন অনেক কথা আমরা শুনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এত নিউজ দেয়, এত আইটেম দেয়, এমন তো কেউ দেয় না যে, আমি এখন মানুষ খুন করে বেহেস্তে বসে আরামে আঙ্গুর ফল খাচ্ছি; এমন কেউ দিতে পেরেছে?

শেখ হাসিনা বলেন, বেহেস্তে যেতে হলে আল্লাহ রাসুলের নাম নাও, মানুষকে সাহায্য কর, তোমার ধন সম্পদ দরিদ্রের মাঝে বণ্টন কর, আল্লাহ তোমাকে এমনিই বেহেস্তে টেনে নেবে। নাহ, সে এগুলো না করে করল কি? মানুষ খুন করে বেহেস্তে যাবে।

আর বেহেস্তে গিয়ে তারা তো একটা মেসেজও দিতে পারেনি। তারা যদি মেসেজ পাঠাত তখন না হয় বুঝতাম।

এনএম//আরকে


Ekushey Television Ltd.


Nagad Limted


© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি