ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪

অগ্নিঝরা মার্চ

জয় বাংলা স্লোগানে প্রকম্পিত বাংলাদেশ

প্রকাশিত : ০৮:৩২, ২০ মার্চ ২০১৯ | আপডেট: ১৩:০১, ২১ মার্চ ২০১৯

১৯৭১-এর ২০ মার্চ দিনটি ছিল শনিবার। আজ লাগাতার চলা অসহযোগ আন্দোলনের ১৯তম দিবস অতিবাহিত হয়। আজও রাজধানীর সরকারি-বেসরকারি সব বাসভবন এবং যানবাহনে কালো পতাকা উত্তোলিত ছিল। যেসব অফিস খোলা রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নির্দেশ দিয়েছিলেন, সেগুলো ছাড়া আর সব সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বর্জন কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে পালিত হয়। স্বাধীনতার দাবি এবং বঙ্গবন্ধু ঘোষিত অসহযোগের সমর্থনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গণসংগঠনের সভা-সমাবেশ, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ মিছিল ও স্লোগানে রাজধানীসহ সারা দেশের রাজপথ আগের মতোই প্রকম্পিত থাকে। গতকালের পর আজ সকাল ১০টায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চতুর্থ দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এবারের আলোচনায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দলীয় ৬ জন শীর্ষস্থানীয় সহকর্মী ছিলেন। তারা হচ্ছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামান, খন্দকার মোশতাক আহ্‌মাদ এবং ড. কামাল হোসেন। পক্ষান্তরে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সহকর্মী তিনজন ছিলেন যথাক্রমে বিচারপতি এআর কর্নেলিয়াস, লে. জেনারেল পীরজাদা ও কর্নেল হাসান। আজকের আলোচনা প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা স্থায়ী হয়। সমগ্র পাকিস্তানসহ বিশ্বনেতৃবৃন্দ ও সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি এ আলোচনার প্রতি নিবদ্ধ ছিল। গতকালের জয়দেবপুরের ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট ভবনের বাইরে বিপুল সংখ্যক জনসমাবেশ ঘটে। দেশবাসীও অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিল। আলোচনা শেষে প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে বঙ্গবন্ধু বের হয়ে এ সংগ্রামী জনতা `জয় বাংলা` রণধ্বনি দিয়ে নেতাকে স্বাগত জানায়। পরে ধানমণ্ডিস্থ বাসভবনে ফিরে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে বঙ্গবন্ধু বলেন, `আমাদের আলোচনা অব্যাহত আছে। আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। আগামীকাল পুনরায় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসব। ইতিমধ্যে আমার উপদেষ্টাগণ প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টাদের সঙ্গে সময় ঠিক করে মিলিত হবেন।` সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, `আমাদের আলোচনা এগিয়ে চলছে, কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার বলার নাই। সময় আসলে অবশ্যই আমি বিস্তারিত বলব।` বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়েছে কি-না- জানতে চাওয়া হলে বঙ্গবন্ধু বলেন, `আলোচনা চলছে, আলোচনা শেষ হলেই কর্মপন্থা স্থির হবে।` আলোচনায় তিনি সন্তুষ্ট কি-না? এ রূপ প্রশ্নের জবাবে বঙ্গবন্ধু বলেন, `কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে- আমার এ মন্তব্য হতেই আপনাদের বুঝে নিতে হবে।` কতদিন এ আলোচনা চলবে- জনৈক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, `আলোচনা অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে পারে না।` এ সময় নেতাকে অত্যন্ত গম্ভীর ও প্রশান্ত দেখাচ্ছিল। সাংবাদিকদের প্রতিটি প্রশ্নের জবাবদানে তিনি ছিলেন অত্যন্ত সতর্ক ও সংযত। সংখ্যাগরিষ্ঠের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত নেতা হিসেবে জনগণ কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব তার কাছে ছিল পবিত্র আমানত।

বঙ্গবন্ধু তার রাজনৈতিক জীবনে কোনোদিন কথা ও কাজের বরখেলাপ করেননি। জনগণের কাছে যা অঙ্গীকার করেছেন, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। বাঙালি জাতিকে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার চেতনায় উন্নীত করার সংগ্রামে শুরু থেকেই তিনি ছিলেন জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের প্রধান নেতা। সারাদেশের মানুষ অগ্নিঝরা স্লোগানে স্বাধীনতার দাবিতে দেশকে অগ্নিগর্ভ করে তুলেছে, তখন সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক দীর্ঘ বিবৃতিতে তিনি বলেন, "বর্তমানের গণআন্দোলন প্রতিটি গ্রাম, শহরের নারী-পুরুষ-শিশু নির্বিশেষে সকলকে বাংলাদেশের দাবির পিছনে সুসংগঠিত করেছে। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতাপ্রিয় প্রতিটি দেশের মানুষের হৃদয় জয় করেছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বের দরবারে এক অনুপ্রেরণাদায়ী দৃষ্টান্ত হিসেবে পরিগণিত এবং এটা হচ্ছে আপন লক্ষ্যে দৃঢ় পদক্ষেপে অগ্রসরমান, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও ঐক্যবদ্ধ জনসাধারণের সংগ্রামের দৃষ্টান্ত। জীবনের সর্বস্তরের মানুষ- মাঠের কৃষক, কারখানার শ্রমিক; ব্যাংক, অফিস, বন্দর ও সরকারি চাকরীতে নিযুক্ত কর্মচারীবৃন্দ-যারা আমাদের নির্দেশাবলির কাঠামোর মধ্যে অর্থনীতিকে রক্ষা করার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে, তাদের সকলের প্রতি আমার অভিনন্দন। এসব নির্দেশ কার্যকর করার ব্যাপারে ছাত্র, শ্রমিক এবং কর্মচারী সংগঠনগুলোর সজাগ দৃষ্টির জন্য তারা বিশেষভাবে অভিনন্দনযোগ্য। আমাদের জনসাধারণ প্রমাণ করেছে যে, তারা তাদের নিজেদের বিষয় অত্যন্ত আদর্শ পদ্ধতিতে পরিচালনা করতে সক্ষম। স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বাঁচার উদ্দেশ্যে জনসাধারণ সকল প্রকার ত্যাগ স্বীকারে বদ্ধপরিকর। তাই মুক্তির লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে জনগণ তাদের আন্দোলন চালিয়ে নিয়ে যাবে- তাদের নিকট এই আমার আবেদন। নাশকতামূলক কার্যে লিপ্ত ব্যক্তিদের দুরভিসন্ধিমূলক ও উস্কানির বিরুদ্ধে আমি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছি। আমাদের জনসাধারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক তৎপরতার প্রতিটি ক্ষেত্রে কঠোর শৃঙ্খলা পালন করে যাবে, যাতে জনসাধারণের অত্যাবশ্যক চাহিদা পূরণের ব্যবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে। গত ১৪ মার্চ ঘোষিত কর্মসূচির পর যেসব নির্দেশ ও ব্যাখ্যা প্রদান করা হয়েছে কিংবা আগামীতে হবে, সেগুলো পালন সাপেক্ষে উক্ত সংগ্রামী কর্মসূচি চালু থাকবে এবং আগামী ২৩শে মার্চ `লাহোর প্রস্তাব দিবস` উপলক্ষে সমগ্র বাংলাদেশে ছুটি থাকবে।"

বঙ্গবন্ধুর সুদীর্ঘ এই বিবৃতিতে জনসাধারণের প্রতি প্রদত্ত নির্দেশ, জনগণের সংগ্রামী দায়িত্ব, কর্তব্যনিষ্ঠা এবং অসহযোগ পালনে নিয়মতান্ত্রিক আচরণের সপ্রশংস পর্যবেক্ষণ রাষ্ট্রনায়কোচিত প্রতিভায় প্রতিফলিত। প্রতিদিনের মতো আজও রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল জনতা শোভাযাত্রা সহকারে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে সমবেত হয়। প্রতিটি শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে একের পর এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেন, `বাংলার জনগণের সার্বিক মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত সত্যাগ্রহ চলবে। আন্দোলনে ভাটা পড়তে দেবেন না। সংগ্রামে শৈথিল্য এলে শত্রুপক্ষই শক্তিশালী হবে। আমার আর কিছুই পাওয়ার নাই। যা আমি পেয়েছি, এর কোনো তুলনা নাই। বাংলার মানুষের এই বিশ্বাস, ভালোবাসা নিয়েই আমি মরতে চাই। আর তার আগে বাংলার মানুষের মুক্তি চাই। যত বাধাই আসুক, এই লক্ষ্য অর্জনের সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।` স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দৃপ্ত কণ্ঠে বলেন, `বাংলাদেশকে কলোনি করে বাজার করে রাখার দিন বাসি হয়ে গেছে। মুক্তিপিপাসু সাড়ে সাত কোটি বাঙালির চূড়ান্ত বিজয়কে পৃথিবীর কোনো শক্তিই প্রতিহত করতে পারবে না।` মিছিলকারীদের মধ্যে ছিল ইস্টার্ন ব্যাংকিং করপোরেশনের কর্মচারী, ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মচারী, ঢাকা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, প্রাদেশিক সরকারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ও সেটেলমেন্ট কর্মচারীদের বিভিন্ন সংগঠন।

অসাধারণ প্রাণশক্তি আর অদম্য মনোবল নিয়ে জনতার সংগ্রামী মিছিলের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু তার অগ্নিঝরা বক্তব্য প্রদান করছিলেন। সারা দেশের মানুষ অপূর্ব নিষ্ঠায় নেতার নির্দেশ প্রতিপালন করছে। আজও বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সমাগম ছিল। পশ্চিম পাকিস্তানের কাউন্সিল মুসলিম লীগপ্রধান মিয়া মমতাজ মোহাম্মদ খান দৌলতানা, শওকত হায়াত খান এবং জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুফতি মাহমুদ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিকেলে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে মিলিত হন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে মিয়া দৌলতানা সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, `জাতীয় পরিষদের একজন সদস্য ও পরিষদে একটি ক্ষুদ্র দলের প্রতিনিধি হিসেবে শেখ সাহেবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা পরস্পর ভাইয়ের মতো। প্রায় ৩০ বৎসর যাবৎ আমরা একে অপরকে জানি। আমরা কখনোই হত্যা-নির্যাতন পছন্দ করি না। সংখ্যাগরিষ্ঠ দলনেতা যখন যেমন চাইবেন আমরা প্রয়োজনমতো উপস্থিত থাকব এবং আমাদের সমর্থন অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই শান্তি সমাধান।` সারা দেশের মানুষ যখন শান্তিপূর্ণ উপায়ে জাতীয় সমস্যার সমাধানে প্রেসিডেন্টকে তাগিদ দিচ্ছে, তখন জেনারেল ইয়াহিয়া ভুট্টোর মদদে সশস্ত্র পন্থায় বাঙালি জাতির মুক্তিসংগ্রামকে স্তব্ধ করে দিতে ষাড়যন্ত্রিক অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় শোনা যাচ্ছে, জুলফিকার আলী ভুট্টো তার ২০ জন উপদেষ্টাসহ আজ ঢাকা আসছেন। এদিকে সদাজাগ্রত সংগ্রামী দেশবাসীর সঙ্গে পরিপূর্ণ একাত্মতা পোষণ করে আজ নৌবাহিনীর সাবেক সৈনিকদের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে আগত সংগ্রামী জনতার উদ্দেশে প্রাক্তন বাঙালি সৈনিকরা বলেন, `বাংলাদেশ থেকে অবিলম্বে পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী প্রত্যাহার করতে হবে।` পরে প্রাক্তন সৈনিকদের সভায় কিছু প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বাংলার মুক্তিকামী মানুষের সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য নৌ, বিমান ও স্থলবাহিনীর সাবেক সৈনিকদের নিয়ে সংযুক্ত মুক্তিবাহিনীর একটি কমান্ড গঠন। এর পর এক দীর্ঘ মিছিল সহযোগে তারা বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে এসে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করে তাদের প্রস্তাবাবলি নেতাকে পাঠ করে শোনান এবং স্বাধীনতা অর্জনে শেষ রক্তবিন্দু দানের প্রতিশ্রুতি দেন। এদিকে জয়দেবপুরের ঘটনায় মওলানা ভাসানী চট্টগ্রাম থেকে এক বিবৃতিতে বলেন, `বুলেট-বেয়নেট দিয়ে দেশ শাসন করা যাবে না। অবিলম্বে শেখ মুজিবের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে তার ৪টি শর্ত মেনে নেওয়া হোক।`

আজ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের সব ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীর প্রধান ও উপপ্রধানদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সারা দেশে সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু নির্দেশিত আন্দোলনের পাশাপাশি সমাজবিরোধীদের প্রতি সতর্ক থাকার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়। স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ জয়দেবপুরের ঘটনায় এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলে, `জয়দেবপুরের বীর বাঙালি সেনাবাহিনীর গতিরোধ করলে সেনাবাহিনী জনতার প্রতি গুলিবর্ষণ করে। আমরা সেনাবাহিনীর এই কার্যের তীব্র নিন্দা জানাই এবং জয়দেবপুরের বীর বাঙালিদের অভিনন্দন জানাই। আমরা নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।`

প্রকৃতপক্ষে আলোচনার দুয়ার খোলা রেখে, একই সঙ্গে সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গড়ার নির্দেশ দিয়ে এবং তা সফলভাবে বাস্তবায়ন করে বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশে নন, সমগ্র পাকিস্তানের জাতীয় রাজনীতিতে মেজরিটি পার্টির নেতা হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে বাঙালির জাতীয় মুক্তির ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত করেন। গত ১৯ দিনের অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাতি হিসেবে বাঙালি বুঝিয়ে দিয়েছে- তারা শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম করে দাবি আদায় করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কিন্তু প্রয়োজন হলে রক্ত দিয়ে দাবি আদায়েও তারা প্রস্তুত। সমগ্র পাকিস্তানে মোট জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ বাঙালি। সুতরাং সংখ্যাগরিষ্ঠের বিচ্ছিন্ন হওয়ার প্রশ্ন নয়। প্রশ্ন জাতীয় আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকারের, জাতীয় মুক্তির। আর বাঙালির সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমগ্র জাতিসত্তাকে জাতীয় মুক্তির চেতনায় নিয়মতান্ত্রিক পন্থায়, শান্তিপূর্ণ কিন্তু সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জাগ্রত করে, সংগঠিত করে সেই চির আকাঙ্ক্ষিত মুক্তির লক্ষ্যেই এগিয়ে নিয়েছেন। ইতিহাসের পৃষ্ঠায় এ সত্যই লিপিবদ্ধ হয়ে আছে।

একে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি