ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এক্সপ্রেসওয়ে, বাড়ছে দুর্ঘটনা
প্রকাশিত : ১০:৫৭, ১১ এপ্রিল ২০২৩ | আপডেট: ১৪:৫৫, ১১ এপ্রিল ২০২৩
পদ্মাসেতুর এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা ভাবিয়ে তুলছে সংশ্লিষ্টদের। নিরবচ্ছিন্ন চলাচলের অত্যাধুনিক-হাইডেফিনেশন মহাসড়কটি ব্যবহারকারী ও চালকদের কারণেই ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। এখনই এর রাশ টানা প্রয়োজন বলছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা।
এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানো কিংবা নামানো একেবারেই বেমানান। পদ্মাসেতুর জাজিরা প্রান্তে এটা যেন নিয়মিত চিত্র। চলে যাত্রী তোলার প্রতিযোগিতাও। দ্রুতগতির যানবাহন চলে যাচ্ছে কিন্তু সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই কারোরই।
স্থানীয়রা জানান, যাত্রীরা যখন নীচে গাড়ি পায় না তখন সবাই উপরে চলে আসে।
এই মহাসড়কে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চলাচলের সীমা। বাধাহীন মনে করে, কমবেশি সবাই এর ঊর্ধ্বে চালান গাড়ি। আর ওভারটেক ওভারটেক খেলা তো আছেই।
পদ্মাসেতু চলাচলে উন্মুক্ত হবার পর গেল বছর জুন থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত এ সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে ২২২টি। মারা গেছে ২৬৪ জন। ছোট-বড় দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটছে।
স্থানীয়রা জানান, কে কার আগে যাবে, ওভার স্পিডে ১২০ পর্যন্ত উঠিয়ে ফেলে এই রোডে। পুলিশ দেখলে ড্রাইভাররা গাড়ির গতিটা কমিয়ে দেয়, পুলিশ গেলে স্পিড বাড়িয়ে চালিয়ে আসে।
ইমাদ পরিবহনের বাস দুর্ঘটনায় তদন্তে উঠে এসেছে বেশ কিছু কারণ। চালকরা বিশ্রাম ব্যাতিরেকেই একনাগারে দীর্ঘ সময় ঘুম ঘুম চোখে গাড়ি চালান। বাধাহীন রাস্তায় মুঠোফোনে কথা বলেন।
বাস্তবতা হলো, হাইডেফিনেশন সড়ক হলেও কিছু কিছু বাঁক এরইমধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। কিছু কিছু সেতু-কালভার্টে ওঠানামার সময়ে নিয়ন্ত্রণ হারায় গাড়ি। এই রুটে ৯৫ শতাংশ গাড়ির নেই রুট পারমিটও।
পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সামসুল হক বলেন, “মেরুদণ্ডটা তৈরি হলো কিন্তু বেশি গাড়ি-বাস চালিয়ে ক্যাপাসিটিটা নষ্ট করার পাঁয়তারা চলছে। এতে দুর্ঘটনা লেগেই থাকবে।”
লাইসেন্সবিহীন অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন ও অবৈধ গাড়ির দৌরাত্ম না কমালে এই সড়কে যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত দুষ্কর বলছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক্সপ্রেসওয়ে আশা জাগানিয়া একটি সড়ক হলেও এখানে অনবরত দুর্ঘটনা ঘটেই চলছে। যার একমাত্র কারণ হলো দেশে মানসম্মত চালক তৈরি না হওয়া। সেই সাথে এই এক্সপ্রেসওয়েতে কিছু ত্রুটি এখনও রয়ে গেছে। এগুলো সংশোধন করলে তবেই থামানো যাবে এই অত্যাধুনিক মহাসড়কে মৃত্যুর মিছিল।
এএইচ