টাকা দিয়ে ভোট কিনতে গিয়ে ধরা খেলেন ইউপি চেয়ারম্যান
প্রকাশিত : ১১:০৬, ৬ জানুয়ারি ২০২৪
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা শেষ হয়েছে। এখন শুধু ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তার কর্মী-সমর্থকরা। উদ্দেশ্য একটাই ভোটারের সংখ্যা বাড়ানো। এমন অবস্থায় ভোট কেনার চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। আর টাকা দিয়ে ভোট কিনতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা খেয়েছেন সাঈদ হাসান তরফদার শাকিল (৩৫) নামের এক ইউপি চেয়ারম্যান।
শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে নির্বাচনী এলাকা মহাদেবপুরে। শাকিল নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী (ট্রাক প্রতীক) ছলিম উদ্দিন তরফদার সেলিমের ভাগ্নে এবং মহাদেবপুর উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি সদর থানা এলাকার এরশাদ আলীর ছেলে।
ভোটারদের মাঝে টাকা বিতরণ করা হচ্ছে এমন অভিযোগে শুক্রবার রাত ১২টার দিকে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাগ্নে সাঈদ হাসান তরফদার শাকিলকে জনতা আটক করে রাখে। খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ। এরপর ওই রাতেই মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে সাঈদ হাসানকে ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
মোবাইল কোর্টের বিচারক এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আরা, জাতীয় সংসদের নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর ধারা অনুযায়ী তাকে এ অর্থদ্বণ্ড করেন। এসময় থানার অফিসার ইনচার্জ রুহুল আমিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, চেয়ারম্যান শাকিলকে আটকের পর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে সচেতন মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে রাতের বেলা লোকজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে এই যে টাকা, শাকিল চেয়ারম্যান ভোট কিনতে এসেছিলেন টাকা দিয়ে। নিচে পড়ে থাকা টাকা লাইট মেরে দেখাচ্ছিল একে অপরকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতা ও স্থানীয়রা জানান, স্বতন্ত্র প্রার্থী এমপি ছলিম তরফদারের ট্রাক প্রতীক জেতানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে চলেছেন। অভিযোগ আছে, ভোটারদের মধ্যে টাকা বিতরণ করছেন। নির্বাচনে জেতার জন্য বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা।
তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার রাতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের খোলাশপুকুর এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা এবং একই সময় কিছুদুরে অলংকারপুরে এমপির ভাগ্নে শাকিল চেয়ারম্যানসহ আরও কয়েকজনকে স্থানীয় জনতা আটক করে রাখে।
এ বিষয়ে সাইদ হাসান শাকিল বলেন, ট্রাক প্রতীকের কর্মীদের সাথে কথা বলার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের কয়েকজনকে উদ্দ্যেশ প্রণোদিতভাবে আটক করে তারা টাকা দিয়ে ভোট কেনার প্রচার চালায়। আদৌও তা সত্য নয়।
এই বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার ( ভূমি) বলেন, সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাঈদ হাসান তরফদার (শাকিল) টাকা বন্টন করছেন স্থানীয়দের মাঝে, এমন অভিযোগে স্থানীয় লোকজন তাকে আটক করে রাখে। আমরা খবর পেয়ে সেখানে যাই কিন্তু সেখানে এমন কাউকে পাইনি যাকে সে টাকা দিয়েছে। বা তার কাছেও কোনো টাকা পাওয়া যায়নি।
তবে খড়ের উপর ছয় হাজার টাকা পড়ে ছিল। যেটা দিয়ে প্রমাণ করা যায়না। যেহেতু একটি নির্দিষ্ট সময় পর নির্বাচনী প্রচারণা করা যাবেনা, সেই কারণে আচরণবিধি লংঘন করার জন্য তাকে ত্রিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এএইচ
আরও পড়ুন