ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪

টাকা পাওনা রেখে কাউকে ছাড় নয়: অর্থমন্ত্রী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:০৯, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | আপডেট: ১৭:৫১, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

টাকা পাওনা রেখে কাউকে ছাড় নয় বলে মন্তব্য বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। মোবাইল অপারেটর গ্রামীন ও রবির দেনা পাওনা বিষয়ে ইঙ্গিত করে মন্ত্রী আজ সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। 

অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে মোবাইল অপারেটর গ্রামীন ও রবির দেনা পাওনা বিষয়ে উইন উইন সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে। টাকা পাওনা রেখে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। 

মোবাইল অপারেটর গ্রামীনের বর্ষিক রাজস্ব ৫ হাজার কোটি টাকা। এর বাইরে বকেয়া ৪ হাজার কোটি এবং বিটিআরসির পাওনা ৮ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে অপারেটর রবির কাছে এনবিআর এর পাওনা ৮৬৭ কোটি টাকা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি আর রাজস্ব বোর্ড এনবিআর এর সাথে মোবাইল অপারেটর দুটির টানাপোড়েন চিঠি চালাচালির এক পর্যায়ে আদালত পর্যন্ত পৌঁছায়।
 
সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষায়, ট্যাক্স ও ডিসপুটস বিষয়ে ভূল বুঝাবুঝি সমাধানে অ্যামিকেবলি সলিউশন বা আলোচনার টেবিলে সমাধানের বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছেছে সব পক্ষ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সকল প্রকার সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমে নিতে চাই। গ্রামীণফোন এখানে ব্যবসা করুক। আমাদেরকে পাওনা বুঝিয়ে দিলেই হবে। তাহলে আমরা তাদের ব্যবসার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করব। এটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে রাজস্ব হারাব। আমরা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করব এবং গ্রামীণফোন তাদের প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা করবে। আগামী ২ থেকে ৩ সপ্তাহের মধ্যে এটির সমাধান হবে। তাদের পাওনা সংক্রান্ত মামলা প্রত্যাহার হবে। সুদসহ ৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা রয়েছে গ্রামীণফোনের কাছে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কীভাবে করব এ মুহূর্তে বলব না। এখানে অনেক সুদ রয়েছে। তাদের পক্ষ থেকেও আপত্তি রয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে টাকা আদায় করা হবে। তারাও মামলা প্রত্যাহার করবে। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। নো ফারদার আরগুমেন্ট।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘২২ বছরের পথচলায় গ্রামীণফোনসহ অন্যান্য অপারেটরের কাছে এনবিআর ও বিটিআরসি’র অনেক পাওনা রয়েছে। তারা এটি আলোচনার ভিত্তিতে পরিশোধ করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ব্যবসা করতে বাধা দিতে চাই না। কোনো পক্ষকে হারিয়ে দিতে চাই না। আমরা নিজেরাও হারতে চাই না। অপারেটরদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমরা আশা করি এটিও নিষ্পত্তি করতে পারব।’

গ্রামীলণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি বলেন, ‘আমরা সত্যিই কৃতজ্ঞ যে, আমাদেরকে একত্রিত করে এটির সমাধান খোঁজা হচ্ছে। কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি অপ্রত্যাশিতভাবে ঘটে গেছে। আমরা বিশ্বাস করি. এখন আলোচনার ভিত্তিতে সমস্যার সমাধান হবে।’

এর আগে, প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পাওনা আদায়ের তৃতীয় ধাপ হিসেবে মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবি’র টুজি ও থ্রিজি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না— সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিটিআরসি। তারও আগে, বকেয়া পরিশোধ না করায় গ্রামীণফোন (জিপি) ও রবি আজিয়াটার (রবি) ব্যান্ডউইথ সক্ষমতাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া আদায় না হওয়া পর্যন্ত অপারেটর দু’টিকে কোনো এনওসি (নতুন সেবা প্রদান) করার সিদ্ধান্তও আসে। সর্বশেষ ধাপ হিসেবে গ্রামীণফোন ও রবিতে প্রশাসক বসানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল বিটিআরসি।

গ্রামীণ ও রবির বকেয়া আদায়ের বিষয়ে এক প্রেস ব্রিফিং ডেকেছিল বিটিআরসি। যা দুপুরে তাদের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আকস্মিকভাবে স্থান পরিবর্তন করে তা অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা করতে চায় সরকার। আর আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে বিটিআরসির নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা থেকে সরে আসারও ইঙ্গিত মিলেছে।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি