টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক
প্রকাশিত : ১৮:০০, ২৫ অক্টোবর ২০১৮
`তুমি কী দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়। গহীন সাগরে অরুণ রোদনে তিলে তিলে যার ক্ষয়…’ গানের কথাগুলোর মতো টাকার অভাবে ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে না পারায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। তিনি অধ্যাপক মো. গোলাম ফারুক। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের শিক্ষক। হাসপাতালের বেডে তাঁর দিন কাটছে হাজারো অনিশ্চয়তায়।
এই জ্ঞানতাপস সারাজীবন ছাত্রদের শিখিয়েছেন কারো কাছে হাত পেতো না, নিজের পায়ে দাঁড়াও। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আর রূঢ় বাস্তবতা এই যে, জীবন সায়াহ্নে এসে তাঁকেই কি না চিকিৎসার জন্য অন্যের মুখপানে চেয়ে থাকতে হচ্ছে। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের এই শিক্ষককে যখন টাকার অভাবে চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত হয় তখন প্রশ্নের মুখোমুখি হয় মানবতা। বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়ায় আমাদের বিবেক।
যিনি সারাজীবন সুস্থ সমজা ও মানুষ গড়ার পেছনে নিজের শ্রম ও মেধা দিয়েছেন তিনিই আজ টাকার অভাবে চিকিৎসা নিতে পারছেন না। তাকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চেয়েছেন স্ত্রী কামরুন্নাহার স্বপ্না।
পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১৬ সালে উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গোলাম ফারুক। তখন তার বাইপাস সার্জারী হয়। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
ডাক্তাররা জানান, তার দুটি কিডনিই অকেজো হয়ে গেছে। ‘মরার উপর খাড়ার ঘাঁ’ এর মতো ঠিক এই সময়ে তার ব্রেন স্ট্রোক হয়। অর্থাভাবে তাকে চেন্নাই থেকে দেশে ফিরে আসতে হয়। পরে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হয়। ভর্তি করানো হয় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে।
এই অবস্থায় তিনি প্যারালাইসিস ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসকরা জানান, আজীবন তাকে সপ্তাহে তিনটা করে হেমোডায়ালাইসিস নিতে হবে। একই সঙ্গে ডাক্তাররা তাকে পায়ের অস্ত্রোপচারটা দ্রুত করে ফেলার তাগিদ দিচ্ছেন।
শিক্ষকতার সীমিত আয় দিয়েই তাঁর সংসার চলত। তার উপর তিনি (গোলাম ফারুক) সংসারের একমাত্র উপার্যনক্ষম ব্যক্তি। তাঁর উপর নির্ভরশীল পুরো পরিবার। গোলাম ফারুকের শিক্ষকের চিকিৎসার পেছনে প্রতি মাসে তার পরিবারকে গুণতে হয় এক লাখ টাকারও বেশি। কোথেকে আসবে এই টাকা? কীভাবে চলবে চিকিৎসা? টাকার অভাবে কী থমকে যাবে এই গুণী মানুষটির জীবন?
দেশের অন্য সব মানুষের মতো গোলাম ফারুকের পরিবারও বিশ্বাস করে, প্রধানমন্ত্রী চাইলে গোলাম ফারুক তার জীবন ফিরে পাবে। গোলাম ফারুকের পরিবার যেমন পাবে একজন কর্মক্ষম মানুষ তেমনি প্রধানমন্ত্রীর মহত্ত্বের মাত্রায় যোগ হবে নতুন মাত্রা।
অা অা// এআর