ঢাকা, সোমবার   ২১ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

টেলিকমে সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নির্মাণে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:২৬, ২৯ জুলাই ২০২০ | আপডেট: ০১:১৬, ৩০ জুলাই ২০২০

Ekushey Television Ltd.

কোভিড-১৯ সঙ্কটকালে বিশ্বজুড়ে টেলিকম ক্যারিয়ারদের নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর চারটি মূল বিষয় এবং ব্যবসায়িক উন্নয়নে মনোযোগী হয়ে একসাথে কাজ করা উচিৎ। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও ভূমিকা নিয়ে আয়োজিত ‘বেটার ওয়ার্ল্ড সামিট ২০২০’ -এ এমন মত ব্যক্ত করেন টেলিযোগাযোগ ও অন্যান্য খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

ভার্চুয়াল মাধ্যমে হুয়াওয়ে আয়োজিত এ সামিটটি অনুষ্ঠিত হয় ২৭ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত। সামিটে বাণিজ্যিক সাফল্যে লক্ষাধিক ফাইভজি বেজ স্টেশন স্থাপনের কার্যকরী উপায়ের ওপর আলোকপাত করা হয়। এছাড়াও, সম্মেলনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন হুয়াওয়ের বক্তাগণ ক্যারিয়ারগুলোর একসাথে কাজের সুযোগ, নেটওয়ার্ক সম্ভাবনার চারটি মূল বিষয় এবং ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করেন।

সম্মেলনে দ্বিতীয় দিনে মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন হুয়াওয়ের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ও ক্যারিয়ার বিভাগের প্রেসিডেন্ট রায়ান ডিং এবং তৃতীয় দিন মূল বক্তা হিসেবে ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ক্যাথেরিন চেন। সম্মেলনে অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন রেডিও কমিউনিকেশন সেক্টর (আইটিইউ-আর), গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস (জিএসএমএ), ইউরোপিয়ান কম্পিটিটিভ টেলিকমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (ইসিটিএ), সাউথ আফ্রিকান ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশনস অ্যান্ড ডিজিটাল টেকনোলজিস, থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল ডিজিটাল ইকোনোমি অ্যান্ড সোসাইটি কমিশন, চীনের অ্যাকাডেমি অব ইনফরমেশন অ্যান্ড

কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (সিএআইসিটি), জার্মানি অ্যাসোসিয়েশন অব দ্য ইন্টারনেট ইন্ডাস্ট্রি (ইসিও) এবং এডিএল –এর প্রতিনিধিগণ। এছাড়াও এ সামিটে অনলাইনের মাধ্যমে বিশ্বের ৮০টির বেশি দেশ থেকে সহস্রাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।

রায়ান ডিং বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারির সঙ্কটে নেটওয়ার্কের সম্ভাবনা উন্মোচনে এবং ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ত্বরাণ্বিত করতে ক্যারিয়ারগুলোকে নেটওয়ার্ক নির্মাণ এবং ব্যবসার উন্নয়নে কিছু মূল বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে।‘ তিনি বলেন, ‘ক্যারিয়ারগুলোকে বিদ্যমান নেটওয়ার্কের সর্বোচ্চ উপযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। সফটওয়্যার ব্যবহার করে কিংবা আরআরইউ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এটা করা যেতে পারে। যা তাদের বৈশ্বিক মহামারির সময় ডাটা চাহিদা মেটাতে এবং সাইট টিসিও -এর সর্বোচ্চ উপযোগিতা নিশ্চিতে সহায়তা করবে।’

এক্ষেত্রে, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে রায়ান ডিং তার বক্তব্যে ক্যারিয়ারগুলোকে ভবিষ্যতমুখী এবং লক্ষ্যনির্ভর নেটওয়ার্ক নির্মাণে জোর দিতে বলেন। তিনি বলেন, ‘টেলিযোগাযোগখাতকে ভাবতে হবে কীভাবে তাদের নেটওয়ার্ক ব্যক্তি, পরিবার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের নিয়ত পরিবর্তনশীল চাহিদা মেটাতে পারে এবং ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।’

ক্যাথেরিন চেন বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও খাতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থাদের কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারি উদ্ভূত প্রতিকূলতা শনাক্তে এবং সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যৎ গঠনে একসাথে কাজ করতে হবে। বিগত ৩০ বছরে তথ্য প্রযুক্তির (আইটি) অভাবনীয় অগ্রগতি সাধিত হয়েছে যা মানুষের জীবন ও কাজকে অনেক সহজ করেছে। 

একইসাথে কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারি আমাদের দেখিয়েছে যে প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল অবকাঠামো নির্মাণে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। আইটিইউ’র তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষের ইন্টারনেট কিংবা অন্য ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি সংযুক্ত, বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন ও উদ্ভাবনী ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি।‘ ক্যাথেরিন চেন আরও বলেন, ‘তবে, সব কিছুর আগে আমাদের সবার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই ও উজ্জ্বল
ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।‘

বিশ্বের অনেক দেশই সফলভাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর বিস্তার হ্রাস করতে পেরেছে, যার ফলে অর্থনীতি পুনরায় সচল হতে শুরু করেছে এবং পরিস্থিতি আগের চেয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরছে। বিভিন্ন দেশের সরকার এ বৈশ্বিক মহামারি প্রতিরোধে নানা প্রণোদনা নিয়ে এসেছে এবং আবশ্যিকভাবে এ পরিকল্পনায় আইসিটি (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি) বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। ক্যাথেরিন চেন বলেন, ‘অর্থনীতি সচল করতে আমাদের সুষ্ঠু পরিকল্পনা এবং এক্ষেত্রে সৃষ্টিশীল হওয়া প্রয়োজন।‘ তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল রূপান্তরের সাথে সরকারি নীতির সামঞ্জস্য সকল খাতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা পৌঁছে দিবে, কর্মদক্ষতা বাড়াবে এবং প্রবৃদ্ধি ফিরিয়ে আনবে।’

সম্মেলনে অন্যান্য বক্তারাও ভবিষ্যতের জন্য উন্নত বিশ্ব গঠনে তাদের মত ব্যক্ত করেন। আইটিইউ, জিএসএমএ এবং এসিটিএ’র মতো আন্তর্জাতিক সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সবাই একসাথে বৈশ্বিকভাবে আইসিটি মানদণ্ড তৈরি, ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসার, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ত্বরাণ্বিত করা এবং অর্থনীতির নতুন স্বাভাবিকতা মেনে নেয়া নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধিরা খাত সংশ্লিষ্ট সেরা পন্থাগুলোর ওপর আলোকপাত করেন। দক্ষিণ আফ্রিকা, থাইল্যান্ড, চীন ও
জার্মানির নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতিনিধি এবং বৈশ্বিক বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাদের বিভিন্ন প্রচেষ্টা এবং নীতি বিষয়ক উদ্যোগের কথা বলেন। বিভিন্ন খাতে ডিজিটাল অবকাঠামো এবং ডিজিটাল রূপান্তরে বিনিয়োগে তারা এসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। ডিজিটাল অর্থনীতি কীভাবে মূল অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ভূমিকা রাখতে পারে সম্মেলনে তা নিয়ে আলোচনা করেন অংশগ্রহণকারী জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষকগণ।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি