ডাকাতদলকে আটক করে গণপিটুনি, ৩ জনের মৃত্যু
প্রকাশিত : ২১:৫১, ১ মার্চ ২০২৫

শরীয়তপুরের কীর্তিনাশা নদীতে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় ৮ ডাকাতকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে আহত ডাকাত সদস্যদের শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে দুজনের মৃত্যু হয়। আর উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এদিন সন্ধ্যায় আরো একজনের মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মোট ৩ ডাকাতের মৃত্যু হলো।
এর আগে শনিবার (১ মার্চ) সকালে শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাসার ইউনিয়নের আড়িগাঁও এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা আন্ত জেলা ডাকাতচক্রের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতি, হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পালং মডেল থানা পুলিশ।
আটককৃতদের মধ্যে চারজনের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।
তারা হলেন মুন্সীগঞ্জের মহেষপুর এলাকার সানাউল্লাহ গাজীর ছেলে রাকিব গাজী (৩৮), একই জেলার কালিরচর এলাকার বাচ্চুর ছেলে রিপন (৪০), শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুণ্ডেরচর এলাকার মোহাম্মদ দেওয়ানের ছেলে আনোয়ার দেওয়ান (৫০) ও মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুর এলাকার হারুন তালুকদারের ছেলে সজিব তালুকদার (৩০)। এদের মধ্যে রিপন ও সজিব তালুকদার গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। আর পরে ঢামেকে মৃত্যুবরণ করা আরেক ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
স্থানীয়, পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে একদল ডাকাত মাদারীপুরের রাজারচর এলাকায় বাল্কহেডে ডাকাতির চেষ্টা করে। পরে তাদের ধাওয়া দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ডাকাতরা পালিয়ে শরীয়তপুরের তেঁতুলিয়া এলাকায় এলে স্থানীয়রা বাল্কহেড দিয়ে তাদের স্পিডবোটের গতিপথ রোধ করে।
এ সময় ডাকাতরা হাতবোমা ও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে ৫ জন আহত হয়। পরে ডাকাতরা স্পিডবোট ফেলে পালানোর সময় সাতজনকে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তাদের মধ্যে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
অন্যদিকে, ডাকাতদের ছোড়া গুলিতে ৫ জন আহত হয়ে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়।
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মুনতাসির খান বলেন, ডাকাতদের গুলিতে আহত ৪ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছে। বাকি তিনজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ৮ জন আহত ডাকাতের মধ্যে দুজন মারা গেছে। বাকি ৬ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, গণপিটুনিতে আহত হয়ে যাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে মারা যান তিনি। তবে ওই ব্যক্তির নাম ও পরিচয় জানা যায়নি।
সত্যতা নিশ্চিত করে শরিয়তপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান বলেন, গণধোলাইয়ের শিকার ৫ জনকে চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ৮ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছে। ডাকাতির ঘটনায় একটি কাটা রাইফেল ও শর্টগানসহ দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এসএস//
আরও পড়ুন