‘ডাক্তারদের ছাড়পত্র পেলেই খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর’
প্রকাশিত : ১৪:০০, ১৪ মে ২০১৯ | আপডেট: ১৪:০৯, ১৪ মে ২০১৯
দুর্নীতির দায়ে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
তবে তা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত ডাক্তারদের ছাড়পত্রের উপর নির্ভর করছে।
বিবিসির দেয়া এক সাক্ষাতকারে এমনটাই জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
তিনি বলেন, ‘তার (খালেদা জিয়া) চিকিৎসা চলছে। ডাক্তাররা যখন বলবে যে তার চিকিৎসা সম্পন্ন হয়ে গেছে, তখন তাকে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হবে।’
কারাগারের ভেতরেই স্থাপিত বিশেষ আদালতে বেগম জিয়ার মামলাগুলোর বিচার কার্যক্রম চলবে জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, তার সব মামলা বিশেষ আদালতে ছিল। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশেই। খালেদা জিয়া দোষী সাব্যস্ত করার আগে থেকেই কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে বিশেষ আদালত স্থানান্তর করে তার বিচারকাজ চলছিল। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যেহেতু কেরানীগঞ্জে চলে গেছে সে জন্য সেখানে বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা বলি নাই যে কালকেই বিচার শুরু হবে, জোর করে তাকে নিয়ে যাওয়া হবে। ডাক্তাররা যতক্ষণ পর্যন্ত ছাড়পত্র না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি হাসপাতালে থাকবেন।
খালেদা জিয়াকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার কি বিশেষ কোনো ঝুঁকি তৈরি হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ থাক আর না থাক, আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। ঝুঁকিপূর্ণ এমন কোনো তথ্যাদি আমাদের কাছে নাই। কিন্তু আমরা সব ব্যাপারেই সিকিউরিটি কনসার্ন।’
তিনি বলেন, বিচারের সুবিধার্থে এবং নিরাপত্তার বিবেচনায় কেরানীগঞ্জে ইতিমধ্যে একটি ভার্চুয়াল কোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার যে ই-জুডিশিয়ারি স্থাপন করছে সেখানে একটি বিধান রাখা হচ্ছে যাতে হাই সিকিউরিটি কারাবন্দিরা কারাগার থেকে সাক্ষ্য দিতে পারে। সে কারণে কেরানীগঞ্জে কারাগারের ভেতরে আদালত স্থাপন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরের ভেতরে বর্তমানে কোনো কেন্দ্রীয় কারাগার নেই। যেহেতু কেন্দ্রীয় কারাগারটি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়েছে, সে জন্য খালেদা জিয়াকেও সেখানে স্থানান্তর করা হবে।
আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওনাকে মুভ করার জন্য আগেও একটা স্পেশাল কোর্ট ছিল জেলখানার কাছে।’
এর আগে গত রোববার খালেদা জিয়ার মামলাগুলোর বিচারে কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত বসানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, নিরাপত্তাসংক্রান্ত কারণে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে ওই কারাগারে স্থানান্তরের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিএনপি নেতা ও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, আদালত কারাগার থেকে কারাগারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এতে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে না।
দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন এখন চিকিৎসার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে রয়েছেন। গত বছর ৮ ফ্রেব্রুয়ারি থেকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন সড়কের পুরনো কারাগারে বন্দি থাকার পর গত ১ এপ্রিল চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন