ডিজিটাল সেবার পরিধি আরও বাড়াতে পরামর্শ দিল আসিয়ান
প্রকাশিত : ১৮:৫৫, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০ | আপডেট: ২০:৪৪, ১৬ ডিসেম্বর ২০২০
কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার করতে হলে আসিয়ানের দেশগুলোকে ডিজিটাল সেবার সাথে সম্পৃক্ততা আরও জোরদার করা উচিত বলে মনে করেন আসিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটির ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ড. আলাদ্দিন ডি রিলো। এবং শুধু তা’ই নয়; এর ফলে ২০২৫ সালের মধ্যে জিডিপি এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে বলে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি অনলাইন আলোচনায় তিনি উল্লেখ করেন।
কোভিড-১৯ অতিমারির প্রেক্ষাপটে ফরেন পলিসি কমিউনিটি অব ইন্দোনেশিয়া (এফপিসিআই) হুয়াওয়ে ইন্দোনেশিয়ার সহযোগিতায় নীতিনির্ধারক, শিক্ষাবিদ এবং শিল্প বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ডিজিটাল কানেক্টিভিটির বর্তমান অবস্থা, চ্যালেঞ্জ এবং আসিয়ান অঞ্চলে ডিজিটায়নে সম্ভাবনা শীর্ষক এক সংলাপের আয়োজন করে।
আলাদ্দিন ডি রিলো বলেন, ‘আমি ডিজিটাল কানেক্টিভিটি এবং রূপান্তরকে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্রস-কাটিং বিষয় হিসেবে বিবেচনা করি, যা অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রকে প্রভাবিত করে। তাই, এ ব্যাপারে বিভিন্ন অংশীদারদের সমন্বয়ে কাজ করা প্রয়োজন। এজন্য হুয়াওয়ের মতো বিভিন্ন বেসরকারি খাতের অংশীদারদেরও অংশগ্রহণ প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, আসিয়ানে সকল অংশীদারদের ভূমিকা রাখা প্রয়োজন এবং এখানে ডিজিটাল রূপান্তর স্থায়ীকরণে, দেশ থেকে কিংবা বলা যায় একাডেমিয়া থেকে শুরু করে হুয়াওয়ের মত কোম্পানিসহ বেসরকারি খাতের সকল অংশীদারদের অবদান রাখতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজিটাল ডেটা সংক্রান্ত নীতিমালা প্রচার এবং সাইবার সিকিউরিটি জোরদারকরণ। এটি দুইভাবে সম্পন্ন করা যেতে পারে: নীতিনির্ধারণের জন্য ডেটা শেয়ার করা ও জনসেবা প্রদান এবং দ্বিতীয়ত, দ্রুত পুনরুদ্ধারে সক্ষমতা অর্জনে ডিজিটাল সমাধান প্রদান।
কোভিড-১৯ এর সময় আইসিটি করোনভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই এবং এর বিরূপ প্রভাব থেকে রক্ষায় মূখ্য ভূমিকা পালন করছে। যার ধারাবাহিকতায়, আসিয়ান অঞ্চলের বিভিন্ন খাত অতিমারী পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের গতি ত্বরান্বিত করতে আইসিটি’র ওপর নির্ভর করতে শুরু করেছে। এই ডিজিটাল রূপান্তর আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কানেক্টিভিটি শক্তিশালী করার পাশাপাশি ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নত ব্যবহার নিশ্চিত করবে। যা এ অঞ্চলের ব্যবসা, সরকার ও ৬৫ কোটির মানুষের প্রবৃদ্ধি ও টেকসই বিকাশে সহায়তা করবে।
এফপিসিআই’র প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. ডিনো পাত্তি জালাল বলেছেন, কোভিড-১৯ এর বৈশ্বিক মহামারি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডিজিটাল কানেক্টিভিটি আরো প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, টেকসই কানেক্টিভিটি রয়েছে এমন অবকাঠামোযুক্ত দেশগুলো এই প্রাদুর্ভাবের ফলে সৃষ্ট নেতিবাচক অর্থনৈতিক প্রভাবের পরিমাণ অর্ধেক পর্যন্ত হ্রাস করতে পারে।
এ ব্যাপারে ডিনোর সাথে একমত পোষণ করেন হুয়াওয়ে এশিয়া প্যাসিফিকের ভাইস প্রেসিডেন্ট জে চেন। তিনি বিশ্বাস করেন জ্ঞান, প্রযুক্তি এবং ডেটার সুবিধা নিয়ে, ডিজিটাল সম্পৃক্তকরণ আঞ্চলিক অর্থনীতি উন্নয়নে আসিয়ান সদস্য দেশগুলোর প্রচেষ্টাকে সুসংহত করতে সহায়তা করবে এবং নতুন বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতিতে সত্যিকার অর্থেই স্বায়ত্তশাসিত অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে আসিয়ানের অবস্থান দৃঢ় করার সুযোগ তৈরি করবে।
জে চেন বলেন, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং স্মার্ট ডিভাইসের পণ্য ও সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে আসিয়ানের আঞ্চলিক ডিজিটাল রূপান্তর ও এর সাথে নতুন নতুন সেবা সম্পৃক্ত করার সকল উদ্যোগে সহায়তা প্রদানে সারা বিশ্বের সকল অংশীদারদের সাথে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
‘টুওয়ার্ডস এ মোর ডিজিটালাইজড আসিয়ান: শিফটিং কারেন্টস, অপুরচুনিটিস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জেস ইন টাইম অব প্যান্ডেমিক’- প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় এই অঞ্চলের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। যাদের মধ্যে ছিলেন ইন্দোনেশিয়ান কো-অরডিনেটিং মিনিস্ট্রি ফর ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্সের আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সমন্বয়ক উপমন্ত্রী ড. রিজাল আফান্দি লুকমান, ইন্দোনেশিয়ান কো-অরডিনেটিং মিনিস্ট্রি ফর মেরিটাইম অ্যান্ড অ্যাফেয়ার্সের ট্যুরিজম অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ ইকোনোমির উপ-সমন্বয়ক মন্ত্রী ড. ওডো মানুহুতু, ইউসুফ ইসহাক ইন্সটিটিউট সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস’র আঞ্চলিক অর্থনৈতিক স্টাডিজ প্রোগ্রামের ভিজিটিং সিনিয়র ফেলো এবং এডিবির প্রাক্তন শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ড. জয়ন্ত মেনন এবং হুয়াওয়ের পাবলিক অ্যান্ড গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্সের প্রিন্সিপাল অব ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশন স্যাম চেং কিংজুন।
আরকে//
আরও পড়ুন