ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪

ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়া জ্বরে করণীয়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৬:২৯, ৩০ এপ্রিল ২০১৮ | আপডেট: ০৯:৩৯, ২ মে ২০১৮

প্রতিবছর বর্ষা এলেই যে রোগ নিয়ে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে তা হচ্ছে ডেঙ্গু জ্বর। মশার কামড়ের মাধ্যমে এ রোগ বিস্তার লাভ করে। জীবাণুযুক্ত এডিস মশার কামড়ের ২-৭ দিনের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। প্রথম এক বা দুদিন শরীর ম্যাজম্যাজ করে ও মাথাব্যথা হয়ে থাকে। এরপরই প্রচণ্ড জ্বর, পিঠে ব্যথা, গ্রন্থিসমূহে ব্যথা, মাথাব্যথা, সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, চোখের নড়াচড়ায় ব্যথা ও পানি পড়া, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, বমি, বিষণ্ণতা ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। জ্বর সাধারণত একটানা ৭-৮ দিন পর্যন্ত চলতে থাকে। তবে চতুর্থ বা পঞ্চম দিনে কিছুটা কমতে পারে।


ডেঙ্গু জ্বরে শরীরে এক ধরনের র‌্যাশ হয়ে থাকে। জ্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় দিনে র‌্যাশ হয়ে তা মিলিয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে তৃতীয় থেকে পঞ্চম দিনে পূনরায় র‌্যাশ হতে থাকে যা হাত ও পায়ের তালু ছাড়া পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া ডেঙ্গু জ্বরের মারাত্মক লক্ষণটি হচ্ছে রক্তক্ষরণ। শরীরের বিভিন্ন জায়গা বিশেষ করে ত্বক, নাক, মাড়ি, পাকস্থলী বা পেটের অন্ত্র থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরে রক্তক্ষরণের কারণ অজ্ঞাত। তবে ডেঙ্গু ভাইরাসের (Flavivirus) ৪টি serotype এর যেকোনো একটি দিয়ে আগে ডেঙ্গু জ্বর হয়ে থাকলে এবং দ্বিতীয়বার ভিন্ন serotype দিয়ে ডেঙ্গু জ্বর হলে রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ডেঙ্গুর কারণে রক্তক্ষরণ হলে অত্যাধুনিক চিকিৎসার পরও শতকরা ১০ জন রোগীকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব হয় না।


করণীয়: অন্যান্য ভাইরাস রোগের মতো ডেঙ্গু জ্বরেরও কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। উপরোক্ত লক্ষণ দেখার সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। জ্বর, শরীর ও মাথাব্যথার জন্য প্যারাসিটামল দেওয়া যেতে পারে। তবে এসপিরিন দেওয়া যাবে না। প্রচুর পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। রক্তক্ষরণের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে।

বাসা-বাড়ি, অফিস বা প্রতিষ্ঠানের আশপাশ পরিস্কার রাখতে হবে। ফুলের টব, টায়ার, ড্রাম বা কোনো পাত্রে যেন পানি জমে না থাকতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

ম্যালেরিয়া
মশা বাহিত আরেকটি রোগের নাম হচ্ছে ম্যালেরিয়া। এক সময় বিশ্বাস করা হতো যে ভেজা স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় গেলে ম্যালেরিয়া হতে পারে। কিন্তু বিজ্ঞানের অভাবনীয় অগ্রগতির ফলে আমরা জেনেছি যে, এনোফিলিস জাতীয় স্ত্রী মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে যদি সেই মশার মধ্যে ম্যালেরিয়ার জীবাণু থাকে। বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে ম্যারেরিয়ার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। এছাড়া চট্টগ্রাম ও ঢাকাতেও ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। ম্যালেরিয়া জ্বর প্রচণ্ড কাঁপুনি দিয়ে আসে, রোগী তীব্র শীত অনুভব করেন এবং আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পর প্রচুর ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে যায়। ৪ ধরনের ম্যালেরিয়ার জীবাণু দিয়ে এই জ্বর হয়ে থাকে।

এর মধ্যে সেরেব্রাল ম্যালেরিয়া সবচেয়ে মারাত্মক। এক্ষেত্রে অতি দ্রুত রোগ সনাক্ত করে চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হলে রোগী মারাও যেতে পারেন। আধুনিক চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া পুরোপুরি নিরাময় হয়। তবে প্রতিরোধই উত্তম। আপনার এলাকায় মশার প্রকোপ থাকলে মশারি টাঙ্গিয়ে শোয়ার অভ্যাস করুন। প্রয়োজনে স্প্রে বা কয়েল ব্যবহার করুন। ম্যালেরিয়াপ্রবন এলাকা সফরের সময় সতর্ক থাকুন। প্রয়োজনে সন্ধ্যা বেলায় এবং ভোরে শরীরের খোলা অংশে Odomos cream ব্যবহার করতে পারেন এবং রাতে মশারি ব্যবহার করুন।

এসএইচ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি