ডেঙ্গু নির্মূলে পরমাণু শক্তি কমিশনের ‘কার্যকর’ কৌশল উদ্ভাবন
প্রকাশিত : ০০:০৬, ৪ আগস্ট ২০১৯
ডেঙ্গুর ভয়াবহতা রোধে ভাইরাসের বাহক এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে একটি ‘কার্যকর’ কৌশল উদ্ভাবনের দাবি করেছে সাভারের পরমাণু শক্তি গবেষণা কেন্দ্র। একে বলা হচ্ছে ‘স্টেরাইল ইনসেক্ট টেকনিক’- (এসআইটি)। এ পদ্ধতিতে পুরুষ মশাকে প্রজননক্ষম করে ছাড়া হবে প্রকৃতিতে। ফলে স্ত্রী মশা ডিম পাড়লেও তা নিষিক্ত হবে না।
শনিবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সাভারে পরমাণু শক্তি কমিশন পরিদর্শনে গেলে তার কাছে এই বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরেন বাংলাদেশ পরমানু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা। এ সময় তিনি পদ্ধতিটিকে শীঘ্রই মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর সঙ্গে এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক, সদস্য সানোয়ার হোসেন, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক এম. আজিজুল হক, এনআইবির মহাপরিচালক মো. সলিমুল্লাহ, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ।
প্রতিষ্ঠানের খাদ্য ও বিকিরণ জীববিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের কীট জীব প্রযুক্তি বিভাগের বিজ্ঞানীরা এ ‘কার্যকর’ পদ্ধতিটি উদ্ভাবন করেছেন বলে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয়। এ পদ্ধতিতে দীর্ঘমেয়াদে মশা নিয়ন্ত্রণ হবে বলে আশা করছেন তারা।
পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নত দেশে যেভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে, এই পদ্ধতিটি অনেকটাই সে রকমেরই। বিজ্ঞানীরা জানান, পদ্ধতিটির প্রায়োগিক বিষয়টি গবেষণাগারে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এখন কেবল মাঠ পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পালা।
এসআইটি পদ্ধতিতে পুরুষ জাতীয় এডিস মশাকে গামা রশ্মি প্রয়োগের মাধ্যমে প্রজননক্ষমকরণ করা হয়। এই মশা ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন এলাকায় অবমুক্ত করা হলে তা স্ত্রী জাতীয় এডিস মশার সঙ্গে মিলিত হয়। আর ওই স্ত্রী এডিস মশার ডিম বা লার্ভা নিষিক্ত না হওয়ায় মশার পরিমাণ হ্রাস পেতে থাকে।
এই পদ্ধতিতে শুধু মাত্র প্রজননক্ষম পুরুষ মশাই প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হবে। যেহেতু পুরুষ মশা ডেঙ্গুর জীবাণু বহনে অক্ষম, তাই এর মাধ্যমে ডেঙ্গুর বিস্তার ঘটার কোনও সম্ভাবনা নেই। আবার পুরুষ এডিস মশা মানুষকে কামড়ায়ও না।
কাজেই কমিশনের এসআইটি পদ্ধতিটি দেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা বলেন, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে এটি একটি অত্যন্ত কার্যকর এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি। পাশাপাশি এটি একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি, তাই পরিবেশে এর কোনও বিরুপ প্রভাব নেই।
এনএস/কেআই
আরও পড়ুন