ডেঙ্গু রোধে ডাবের খোসা-চিপসের প্যাকেট কিনে নেবে ডিএনসিসি
প্রকাশিত : ১৯:০২, ৪ এপ্রিল ২০২৪ | আপডেট: ২০:১৮, ৪ এপ্রিল ২০২৪
ডেঙ্গু মোকাবিলায় শহরজুড়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এডিস মশার প্রজনন স্থল এবং পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, ডাবের খোসা, অব্যবহৃত টায়ার, কমোড ও অন্যান্য পরিত্যক্ত জিনিস নগদ মূল্যে সংগ্রহ করার উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান-২ নগর ভবনের হলরুমে দ্বিতীয় পরিষদের ২৬ তম করপোরেশন সভার আলোচনায় ডিএনসিসি মেয়র মেয়র আতিকুল ইসলাম এ কথা জানান।
মেয়র বলেন, প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে যে কেউ এসব দ্রব্যাদি জমা দিয়ে নগদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবে। প্রতিটি ওয়ার্ডের কেনা পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা নিকটবর্তী এসটিএস (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন) এ অপসারণ করবে।
তিনি বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রতিটি ওয়ার্ডকে পরিচ্ছন্ন করার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ। আশা করি এর ফলে জনগণ অব্যবহৃত এসব দ্রব্যাদি যত্রতত্র ফেলা বন্ধ করবে এবং ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি সংগ্রহ করে সিটি করপোরেশনে জমা দেবে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের পর থেকেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরদের নেতৃত্বে জনগণকে সচেতন করতে ক্যাম্পেইন শুরু করতে হবে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, রাজনীতিবিদ, ইমাম, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাইকে নিয়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে মতবিনিময় সভা করতে হবে, সচেতনতামূলক র্যালি করতে হবে।
‘সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ওষুধ প্রয়োগ করা, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতা জরুরি৷ জনগণের মাঝে বার্তা ছড়িয়ে দিতে হবে এডিসের লার্ভা যেন জন্মাতে না পারে সেজন্য নিজেদের ঘর বাড়ি, অফিস পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ছাদে, বারান্দায়, পরিত্যক্ত টায়ার, ডাবের খোসা, মাটির পাত্র, খাবারের প্যাকেট, অব্যবহৃত কমোড এগুলোতে পানি জমতে দেয়া যাবে না।’
সভায় কাউন্সিলরদের সম্মতিক্রমে পরিত্যক্ত দ্রব্যাদি ও সেগুলো সংগ্রহের জন্য মূল্য নির্ধারণ করা হয়। চিপসের প্যাকেট/সমজাতীয় প্যাকেট (১০০টি) ১০০ টাকা, আইসক্রিমের কাপ, ডিসপোজেবলব গ্লাস/কাপ (১০০টি) ১০০ টাকা, অব্যবহৃত পলিথিন (প্রতি কেজি) ৫০ টাকা, ডাবের খোসা (প্রতিটি) ২ টাকা, মাটি/প্লাস্টিক/মেলামাইন/সিরামিক ইত্যাদির পাত্র (প্রতিটি) ৩ টাকা, পরিত্যক্ত টায়ার (প্রতিটি) ৫০ টাকা, কনডেন্সড মিল্কের কৌটা (প্রতিটি), পরিত্যক্ত কমোড/বেসিন ইত্যাদি (প্রতিটি) ১০০ টাকা, অন্যান্য পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি (প্রতি কেজি) ১০ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
ঈদের পরে কাউন্সিলরের কার্যালয় থেকে এটি বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নিয়োজিত কোন স্কেলভুক্ত মাস্টাররোল কর্মী এবং দৈনিক মজুরীরি ভিত্তিক (মাস্টাররোল) শ্রমিক/কর্মী কর্মরত অবস্থায় মারা গেলে তার পরিবারকে এককালীন অনুদান আট লাখ টাকা প্রদানের বিষয় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়াও পরিচ্ছন্নতা কাজের স্বার্থে ৫৯ বৎসর জনিত শূন্য পদে ওই ক্লিনারের বৈধ ওয়ারিশানকে তাৎক্ষণিক ভাবে সৃষ্ট শূন্য পদে দৈনিক ভিত্তিক মাস্টাররোল পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকরিতে নিয়োগ প্রদান এবং কর্মরত অবস্থায় অকাল মৃত্যুতে ও সড়ক দুর্ঘটানায় আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ বা শারীরিক অক্ষমতায় ওই ক্লিনারের বৈধ ওয়ারিশনকে তাৎক্ষণিক ভাবে সৃষ্ট শূন্য পদে দৈনিক ভিত্তিক মাস্টাররোল পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে চাকুরিতে নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নিয়োজিত সব দৈনিক মজুরি ভিত্তিক (মাস্টাররোল) শ্রমিক/কর্মীর পবিত্র ঈদ/দূর্গা পূজা/বড়দিন/বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে উৎসব ভাতা ৩ হাজার বদলে ৫ হাজার টাকা উন্নীত করণের সিদ্ধান্ত হয়।
এমএম//
আরও পড়ুন