তামাকের কারণে কী ক্ষতি হয়?
প্রকাশিত : ১৬:১৭, ১৭ জুলাই ২০২৩
তামাক অত্যন্ত নেশাদায়ক পদার্থ। তামাকে আগুন দিয়ে সিগারেট, বিড়ি, চুরুট, হুঁকা, ও অন্যান্য ধূমপানের মাধ্যম প্রস্তুত করা হয়। ধূমপান ছাড়াও তামাক নানা রকম ভাবে ব্যবহার হয়, যেমন চিবিয়ে (জর্দা, যা পানের সাথে খাওয়া হয়), ঠোঁটের ফাঁকে গুঁজে (যেমন গুল), বা নাকে ঠুসে (নস্যি)।
তামাকজাত এই সব ধরনের দ্রব্যই ক্ষতিকর।
মুখে ক্যান্সারের কারণ তামাক সেবন। মুখ বলতে বোঝায় ঠোঁট, চোয়াল, তালু, জিহ্বা, দাঁত, মাড়ি, মুখের তলদেশ, টনসিল ও পাশের এলাকা। আমাদের দেশে পান, চুন ও জর্দা বা সাদাপাতা সেবন খুব জনপ্রিয়। এগুলোয় নিকোটিন থাকায় সাময়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং একটি সুখবোধ অনুভূত হয়; কিন্তু এর সঙ্গে আছে কার্সিনোজেন। এটি ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।
তামাকজাতদ্রব্য ধূমপানের কারণে মুখ ছাড়াও ফুসফুস স্বরনালী, গলনালী, পাকস্থলী, অগ্ন্যাশয়, কিডনি, ব্লাডার ও জরায়ু মুখের ক্যান্সার হতে পারে।
এ ছাড়া মেয়েদের ব্রেস্ট ক্যানসার বা স্তন ক্যানসার সেটাও কিন্তু পরোক্ষভাবে ধূমপানের কারণে হচ্ছে। এখন যে স্বামী ঘরে বসে ধূমপান করেন তার স্ত্রী কিন্তু স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে। তাদের সন্তান ব্রংকাইটিস, হুপিং কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে।
তামাক থেকে সরকার প্রতি বছর গড়ে রাজস্ব আয় পায় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এদিক থেকে তামাকের কারণে যে স্বাস্থ্য ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। সুতরাং বলাই বাহুল্য তামাকের আয়ের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি।
যেসব বস্তুর ব্যবহার বাদ দিলে অকাল মৃত্যু ঝুঁকি হ্রাস করা যায় তামাক এর মধ্যে শীর্ষে। বিশ্বে যত লোক তামাক ব্যবহার করে তার প্রায় অর্ধেক এর ক্ষতিকর প্রভাবে মৃত্যুবরণ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব মতে প্রতিবছর সারাবিশ্বে প্রায় ৬০ লাখ লোক তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবে মারা যায়, যার প্রায় ৬ লাখ পরোক্ষ ধূমপানের স্বীকার।
বিংশ শতাব্দীতে তামাক প্রায় দশ কোটি ব্যক্তির মৃত্যু ঘটিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড প্রিভেনশন (CDC) সেন্টারও এটাকে সারাবিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এসবি/