তিন নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ভন্ডপীর গ্রেফতার
প্রকাশিত : ২০:৩৯, ৬ মে ২০১৯ | আপডেট: ২০:৪২, ৬ মে ২০১৯
রাজধানী ঢাকার অদূরে শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় ৩ নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে ভন্ডপীর মনির হোসেন (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সাতদিনের সময় চেয়ে গ্রেফতারকৃতকে আদালতে প্রেরণ করেছে।
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আশুলিয়ার কুরগাঁও আমতলা এলাকার সূর্য্য ভিলা’র ৫ম তলার আস্তানা থেকে ভন্ড পীর মনিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত মনির হোসেন আশুলিয়ার কুড়গাঁও আমতলা এলাকার সূর্য্য ভিলার মালিক মৃত. (অব.) সার্জেন্ট আ. রহিম এর ছেলে। সে নিজেকে পীর পরিচয় দিয়ে কতিপয় দালালের মাধ্যমে বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষকে মুরিদ বানিয়ে তাদের মাধ্যমে মাদক ও অসামাজিককাজে লিপ্ত রেখে অবৈধ অর্থ আদায় করছে।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে এক প্রবাসীর স্ত্রী ভন্ডপীর মনির হোসেনের মুরিদ হন। ফলে ভন্ডপীরের দরবারে নিয়মিত যাতায়াত ছিলো ওই নারীর। এভাবে ধর্মের নানা অপব্যাখ্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে আসছিলো ওই নারীকে। এরপর ভন্ডপীরের নজর পরে তার ছোট বোনের উপর। রড় বোনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে একই কায়দায় ছোট বোনকেও একই কায়দায় ধর্ষণ করত। এখানেই শেষ নয়,ওই বড় বোনের ১৩ বছরের কিশোরী মেয়েও ভণ্ড পীর মনিরের লালসার হাত থেকে রেহাই পাইনি। ভন্ড পীরের আস্তানায় আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকার একটি বাড়ির পাঁচতলাতেই দীর্ঘদিন ধরে আস্তানা তৈরি করে অপকর্ম চালিয়ে আসছিলো ভন্ড পীর মনির।
এঘটনায় আশুলিয়ায় থানায় মামলা করা হয়েছে। যার নং-১৫। মামলায় ৩ জনকে আসামী করা হয়েছে। প্রধান আসামী মনির হোসেন। অন্যান্যরা হলেন, মকবুল ও হাসনাতসহ অজ্ঞাত নামা আরও ২ জন। এরা ভন্ড পীরের প্রধান দালাল হিসেবে পরিচিত।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় মামলার এজাহারে ধর্ষিতারা জানান, ১৫/১৬ বছর আগে ভন্ড পীর মনির তার প্রতিবেশি এক প্রবাসীর স্ত্রীকে মুরীদ বানান। এই সুবাদে ভন্ড পীরের দরবারে নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার এক বড় বোনের। এভাবে ধর্মের নানা অপব্যাখ্যা নিয়ে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে আসছিলো ওই নারীকে। তারপর ভন্ড পীরের নজর পরে ওই নারীর ছোট বোনের উপর। বড় বোনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে একই কায়দায় ছোট বোনকে মুরীদ বানানো হয়। এরপর তাকেও নিয়মিত ধর্ষণ করা হয়। এখানেই শেষ নয় সর্বশেষ বড় বোনের ১৩ বছরের কিশোরী মেয়েও রেহাই পায়নি ভন্ড পীরের কবল থেকে।
এঘটনায় গত ২৬ এপ্রিল কিশোরী (১৩) কে নিয়ে ৪ মে রাত ৯টা পর্যন্ত একটানা আটকিয়ে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এবিষয়টি বিলকিস নামে তার খালাকে জানালে সে আশুলিয়া থানায় উপস্থিত হয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরই ভিত্তিতে পুলিশ ভন্ড পীর মনির হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। ঘটনায় ভুক্তভোগি নারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে আশুলিয়া থানা পুলিশ এই তথ্য নিশ্চিত করেন। পরে পুলিশি জিজ্হাসাবাদের জন্য ১০ দিনের সময় চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশুলিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মোহাম্মদ জিয়াউল ইসলাম জিয়া বলেন, গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে ৯(১)/ ৩০ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর অধীনে নারীকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও সহায়তার করার অপরাধসহ ৪২০/৪০৬/২৯৫ পেনালকোড ১৮৬০ সালের প্রতারণা এবং ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হানার অপরাধ।
এঘটনায় আরো ২ জনকে আসামী করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ। তাদেরকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে সাতদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
কেআই/
আরও পড়ুন