ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

তিন বিসিএসে বঞ্চিত ৮৪ জনকে নিয়োগের নির্দেশ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৮:২৭, ৫ জানুয়ারি ২০২২

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশের পরও তিনটি বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে উত্তীর্ণ ৮৪ নিয়োগবঞ্চিতকে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।  

৩৬, ৩৭ ও ৩৯-এ বিভিন্ন ক্যাডারে উত্তীর্ণ ৮৪ জন প্রার্থীর চারটি রিটে দেওয়া রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার (৫ জানুয়ারি) এ রায় দেন বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। 

রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ্ মিয়া ও মিজানুর রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

আইনজীবী ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া পরে বলেন, 'বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশ থাকার পরও কোনো কারণ উল্লেখ না করেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাঁদের নিয়োগবঞ্চিত করেছে, যা রিটকারীদের মৌলিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছে। এমনকি রিটে রুল জারির পর রাষ্ট্রপক্ষ বারবার সময় নিয়েও ৮৪ জনকে নিয়োগবঞ্চিত করার কারণ আদালতকে দেখাতে পারেনি। তাই আদালত রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন।'

এ রায়ের ফলে ৮৪ জনের নিয়োগে কোনো বাধা থাকছে না বলে জানান এই আইনজীবী। তিনি বলেন, রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে তাঁদের নিয়োগ দিতে বলেছেন হাইকোর্ট।

তবে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত বলেন, 'রুলটি যথাযথ ঘোষণা করে রায় দিলেও আদালত নির্দেশনা দিয়ে বলেছেন, এই ৮৪ জনের ব্যক্তিগত রিপোর্ট যদি নেতিবাচক হয় সে ক্ষেত্রে নিয়োগ কার্যকর হবে না। আর এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করা হবে।'

নিয়োগবঞ্চিত ৮৪ জনের মধ্যে ৩৬তম বিসিএস-এর ১০ জন, ৩৭তম বিসিএস-এর ৩৮ জন ও ৩৯তম বিসিএসের ৩৬ জন। ৩৯তম বিসিএসের নিয়োগবঞ্চিতরা সবাই চিকিৎসা ক্যাডারে উত্তীর্ণ। বাকিরা শিক্ষা, প্রশাসন, খাদ্যসহ বিভিন্ন ক্যাডারে উত্তীর্ণ।  

২০১৫ সালের ৩১ মে, ২০১৬ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ও ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন যথাক্রমে ৩৬, ৩৭ ও ৩৯তম বিসিএস থেকে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপন দিলে রিটকারীরা আবেদন করেন। 

পরে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর  ৩৬তম বিসিএসের দুই হাজার ৩২৩ জন, ২০১৮ সালের ১২ জুন ৩৭তম বিসিএসের এক হাজার ৩১৪ জন ও ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল চার হাজার ৭৯২ জনকে স্বাস্থ্য ক্যাডারে (সহকারী সার্জন) নিয়োগের সুপারিশ করে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৩৬তম বিসিএস থেকে দুই হাজার ২০২ জনকে নিয়োগ দেয়। এ বিসিএস থেকে নিয়োগবঞ্চিত করা হয় ১২১ জনকে। 

২০১৯ সালের ২০ মার্চ ৩৭তম বিসিএস থেকে নিয়োগ দেওয়া হয় এক হাজার ২৪৮ জনকে। এই বিসিএসের রিটকারী ৩৮ জনসহ মোট ৬৬ জনকে নিয়োগবঞ্চিত করা হয়। 

আর ২০১৯ সালের ১৮ নভেম্বর ৩৯তম বিসিএস থেকে চার হাজার ৭২০ জনকে নিয়োগ দেয়। এ বিসিএস থেকে রিটকারী ৩৬ জনসহ মোট ৭৪ জনকে নিয়োগবঞ্চিত করা হয়।

পরে নিয়োগবঞ্চিতরা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বারবার যোগাযোগ করে সাড়া না পেয়ে ২০২০ সালে বিভিন্ন সময় হাইকোর্টে চারটি রিট করেন। 

বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশ থাকার পরও ৩৬, ৩৭ ও ৩৯তম বিসিএস থেকে আবেদনকারীদের নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং তাদের নিয়োগ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। সে রুল যথাযথ ঘোষণা করেই রায় দিলেন উচ্চ আদালত।

আরকে//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি