তুরস্কে কারাবন্দি নেতাকে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ঘোষণা
প্রকাশিত : ১৬:৪৬, ২৪ মার্চ ২০২৫

তুরস্কের কারাবন্দি বিরোধী নেতা ও ইস্তাম্বুলের মেয়র একরাম ইমামোগ্লুকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেছে তার দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)। সোমবার দলের এক মুখপাত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
৫৮ বছর বয়সী ইমামোগ্লুকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে, যা তিনি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। ১৯ মার্চ তাকে আটক করার পর রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয় এবং আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
সিএইচপি একরাম ইমামোগ্লুকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করায় তুরস্কের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যেই তার গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
সিএইচপি নেতারা দাবি করছেন, ইমামোগ্লুর বিরুদ্ধে আনিত দুর্নীতির অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন দল একেপি অবশ্য বলছে, ইমামোগ্লুর সঙ্গে কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন পিকেকের গোপন আঁতাত রয়েছে।
একসময় তুলনামূলক কম পরিচিত রাজনীতিবিদ ইমামোগ্লু ২০১৯ সালের ইস্তাম্বুলের মেয়র নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয় পান। প্রথমবারের ভোট বাতিল হলেও পুনর্নির্বাচনে আরও বড় ব্যবধানে জয়ী হন তিনি। এরপর থেকে তিনি জাতীয় রাজনীতির আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন।
২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়, যা সরকারবিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
ইমামোগ্লুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে তুরস্কের ৮১টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ৫৫টিতে বিক্ষোভ হয়েছে। রবিবার রাতে পরিস্থিতি সবচেয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যেখানে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই বিক্ষোভ ২০১৩ সালের গাজি আন্দোলনের পর সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী গণপ্রতিরোধ।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইমামোগ্লুকে ইস্তাম্বুলের কুখ্যাত সিলিভ্রি কারাগারে রাখা হয়েছে। যদিও তিনি জেল থেকেও সমর্থকদের উদ্দেশে বলেছেন, “আমি মাথা নত করব না।”
তুরস্কের রাজনীতিতে ইমামোগ্লুর গ্রেপ্তার এবং তার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়া নতুন এক মোড় এনে দিয়েছে, যা আগামী নির্বাচনের সমীকরণ বদলে দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এমবি//