দক্ষ শ্রমিক সংকটে দেশের পোশাক শিল্প
প্রকাশিত : ১৬:০৯, ১৩ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ১৬:১৭, ১৬ আগস্ট ২০১৭
দক্ষ শ্রমিক সংকটে ভুগছে দেশের পোশাকশিল্প। আর এ সংকট কাটাতে দক্ষ সুইং অপারেটর, কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর, ফিনিশিং অপারেটর ও কোয়ালিটি কন্ট্রোলারের খোঁজে প্রতিদিনই শিল্প এলাকাগুলোয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি টানানো হচ্ছে।
পোশাক শিল্পের ৫০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানীর লক্ষমাত্রা অর্জন করতে হলে ২০২১ সাল নাগাদ শুধু এ খাতে দক্ষ শ্রমিক দরকার ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার। আর ২০২৬ সালে প্রয়োজন হবে ৫০ লাখ ২৭ হাজার দক্ষ শ্রমিকের। কিন্তু বর্তমানে তৈরি পোশাক শিল্পে এখনও ১ লাখ ২০ হাজার দক্ষ শ্রমিকের অভাব আছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ গবেষণা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) ‘বাংলাদেশের শ্রম বাজার ও দক্ষ মানবসম্পদের ঘাটতি’ শীর্ষক একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে ১০টি খাতের দক্ষ শ্রমিকের ঘাটতির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হলো দেশের পোশাক খাত।
বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক রুশিদান ইসলাম রহমান ও গবেষণা সহযোগী ইকবাল হোসেন তৈরি পোশাক খাতের এ প্রতিবেদনটি তৈরি করেন।
বিআইডিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক পোশাকশিল্পের সঙ্গে জড়িত। এ শিল্পে প্রয়োজনের তুলনায় শ্রমিকের ঘাটতি আছে ১ লাখ ৭৬ হাজার। এর মধ্যে দক্শ শ্রমিকের ঘাটতি আছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার।
২০১৬ সালের তথ্যের ভিত্তিতে করা প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছর নতুন ১৬০টি এবং ২০২০ সাল নাগাদ আরও ২৫০টি নতুন শিল্প কারখানা স্থাপনের সম্ভাবনা আছে। সে ক্ষেত্রে শ্রমিকের ঘাটতি আরও বাড়বে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
তবে প্রতিবেদনে শুধু হতাশার দিক নেই আশার দিকও আছে। আশার দিক হলো এ খাতে ধীরে ধীরে অদক্ষ থেকে দক্ষ শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১০ সালে যেখানে মোট শ্রমিকের ২৮ শতাংশ অদক্ষ ছিল, সেখানে ২০১৫ সালে তা ১৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। মূলত কাজে যোগদানের পর অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই অদক্ষ শ্রমিকদের দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।
কাজের ধরন অনুযায়ী শ্রমিকের ঘাটতি তুলে ধরে বলা হয়, বর্তমানে পোশাকশিল্পে ৮৩ হাজার সুইং অপারেটর, ২১ হাজার কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর, সাড়ে ১৪ হাজার ফিনিশিং অপারেটর ও ৫৭ হাজার কোয়ালিটি কন্ট্রোলারের ঘাটতি আছে।
অন্যদিকে, ৫৪ শতাংশ শ্রমিকই অদক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। ৩৬ শতাংশ নিয়োগ দেয়া হয় ব্যানার টাঙানোর মাধ্যমে। মূলত এসব শ্রমিকই দক্ষ। পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রশাসনিক বা উচ্চ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। এ সংখ্যা ১ দশমিক ৩ শতাংশ। বাকি শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয় প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও শ্রমিকদের ঠিকাদারের মাধ্যমে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সাল নাগাদ এ শিল্পে ৫৪ লাখ ৫১ হাজার শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ৩৬ লাখ ৬৬ হাজার দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন হবে। আর ২০২৬ সালে ৭৪ লাখ ৫০ হাজার শ্রমিক প্রয়োজন হবে। এর মধ্যে ৫০ লাখ ২৭ হাজার দক্ষ শ্রমিক দরকার হবে।
আর/ডব্লিউএন
আরও পড়ুন