ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

তারকালাপে মুকিত জাকারীয়া

‘দর্শক আমার কণ্ঠও চিনে রেখেছে’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৪:৫৪, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ২৩:৪৩, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮

পুরো নাম আবদুল মুকিত মোহাম্মদ জাকারীয়া। কিন্তু মিডিয়াতে কাজ করতে এসে নামটা ছোট হয়ে আসে। সবাই তাকে চেনেন মুকিত জাকারীয়া নামে। জনপ্রিয় এই মডেল ও অভিনেতা মূলত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।

একটি মুঠোফোনের বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন তিনি। আর এ কারণে এখন যেখানেই যান, সেখানেই মানুষজনের উচ্ছ্বাস মুকিতকে নিয়ে। অনেকেই বলে ওঠেন- আরে, উনারে তো টিভিতে দেহি। উনি তো মিসকল মফিজ। উনিই তো চায়ের দামে শরবত খান।’ বিজ্ঞাপনে তাঁর সংলাপ ‘ভালো তো, ভালো না!’—ব্যাপক জনপ্রিয়।

মূলত শরাফ আহমেদ জীবনের ‘শাড়ি’ নাটক দিয়ে মিডিয়া অঙ্গনে যাত্রা শুরু হয় মুকিতের। এরপর থেকে এ পর্যন্ত তিনি অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। তবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নির্দেশনায় বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে রাতারাতি তারকা বনে যান মুকিত। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনি প্রায় অর্ধশত বিজ্ঞাপনের মডেল হয়েছেন। এর প্রতিটিই দর্শক সমাদৃত হয়েছে।

এছাড়াও তিনি ফারুকীর নির্দেশনায় ‘টেলিভিশন’ ও ‘পিঁপড়াবিদ্যা’, সাইফ চন্দনের ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’ এবং রয়েল অনিকের ‘গেম’ চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) অনলাইন’র সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের কথা বললেন মুকিত জাকারীয়া। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন- সোহাগ আশরাফ

 

ইটিভি অনলাইন : কেমন আছেন মুকিত ভাই?

মুকিত জাকারীয়া : ধন্যবাদ। অনেক ভালো আছি।

ইটিভি অনলাইন : শুরুতেই একটু ভিন্ন ভাবে প্রশ্ন করছি। টিভি নাটক, চলচ্চিত্র ও বিজ্ঞাপন- তিন মাধ্যমেই আপনি কাজ করছেন। কোন মাধ্যমটি বেশি উপভোগ করেন?

মুকিত জাকারীয়া : ধন্যবাদ। অনেক সুন্দর একটি প্রশ্ন করেছেন। আমি সব চেয়ে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি বিজ্ঞাপনে। আমরা যে যাই বলি না কেনো, একটা বিষয় চিন্তা করে দেখেন মাত্র ত্রিশ/পয়ত্রিশ সেকেন্ড এর একটি বিজ্ঞাপনে একটি পণ্যকে একটি গল্পের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া, বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মনের মধ্যে গেঁথে দেওয়া সহজ কথা নয়। আমি আবারও বলছি- এতো অল্প সময়ে একটি ম্যাসেজ দেওয়া চারটি খানেক কথা নয়। তাই এখানেই আমি নিজেকে খুঁজে পাই।

ইটিভি অনলাইন : এ পর্যন্ত তো অনেক বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন। কোন কাজটি বেশি হিট করেছে বলে মনে হয়?

মুকিত জাকারীয়া : আমার সবগুলো কাজই দর্শক গ্রহণ করেছে। তবে এর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য কয়েকটি রয়েছে যেগুলো দর্শক খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।

 

ইটিভি অনলাইন : আপনার কাজগুলো একটু অন্যরকম। দর্শকদের কাছে কমেডি মনে হয়। কিন্তু আসলে কমেডি নয়। চেহার বা চরিত্রটাই অন্যসব কাজের থেকে আলাদা। কিভাবে নিজেকে এমন করে ফুটিয়ে তোলেন?

মুকিত জাকারীয়া : এটি আসলে সম্পূর্ণ ডিরেক্টরের অবদান। এই কৃতিত্বটা আমি তাদেরই দিতে চাই। যখন কোন বিজ্ঞাপনের গল্প লেখা হয় তখন নির্দেশক নিজেই অনুভব করেন যে এই চরিত্রের জন্য কোন মানুষটি পারফেক্ট। যদি আমাকে চিন্তা করা হয় বা ডাকা হয় তখন আমি যাই। আমাকে যখন বলে আপনার জন্য এমন একটি চরিত্র ঠিক করেছি আমি তখন নিজেকে সেভাবেই তৈরি করি। আমাকে নির্মাতারা আলাদা আলাদা চরিত্রের জন্য ভেঙ্গেছে। মানে নতুন নতুন চরিত্রের জন্য নতুন নতুন ভাবে উপস্থাপন করেছেন। যেমন ধরুন – ‘চায়ের দামে শরবত পাইলাম’।

আমি আড়ৎ এ বসে আসি। আমাকে যে সহযোগিতা করে সেই ছেলেটি ভুল করেছে। সে চায়ে বেশি চিনি দিয়ে নিয়ে এসেছে। আমি বললাম- ‘বাহ, ভালো তো’! ওকে উপহাস করলাম। মানুষ এই উপহাসটি কমেডি হিসেবে নিচ্ছে। আমি ছেলেটিকে বকা দিলাম। বললাম- চায়ে এতো চিনি দিছস কেন? চিনি কি বাংলালিংক দামে পাইছোস? এই যে বকা দিলাম এটাতেও দর্শক বিনোদন পেয়েছে।

আসলে কখন কোন মানুষের কাছে, কোন শ্রেণীর কাছে, কোন কথাটি ভালো লেগে যাবে বলা কঠিন। আপনি বিশ্বাস করবেন না- বিশ্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আমাকে দেখে বলেন- বাহ; ভালো তো। চায়ের দামে শরবত পাইলাম।

আবার আরও একটি বিজ্ঞাপনে আমার কিন্তু বেশি সংলাপ নেই। আমি অনেকদিন পর ফিরে আসি। সঙ্গে মানুষটিকে বলি- ‘তোমার ভাবিকে দেখে কিন্তু তুমি আবার পাগল হয়ে যেওনা’। মেহেজাবিন আমার উপর ব্যাগ ও টাকা ছুড়ে মারে। বলে- বাজার নিয়ে আসো। তখন আমি যে ভঙ্গিমাটা দেই এটাই সবার কাছে ভালো লেগে যায়। এটাই মানুষ কমেডি হিসেবে নিয়েছে। অথচ আমি কিন্তু দুঃখে ভরাক্রান্ত হয়ে আছি।

আমার আরও একটি বিজ্ঞাপনে মাঝি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছে। আমি বলছি- তুই বসকে চিনস? সেটিও দর্শকদের কাছে একধরণের কমেডি হয়ে যাচ্ছে। মানুষ এক একজন এক এক রকম ভাবে গ্রহণ করছে।

ইটিভি অনলাইন : আপনার প্রথম কাজ কার সঙ্গে?

মুকিত জাকারীয়া : আমি প্রথম মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সঙ্গে কাজ করি। তিনিই আমাকে আজকের অবস্থানে এনেছেন। এ জন্য সরাজীবন আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ।

ইটিভি অনলাইন : আপনিতো নায়কও না, ভিলেনও না। আপনি মুকিত জাকারিয়া। দর্শকদের ভালোবাসাতেই আজকের এই অবস্থানে এসেছেন। কেমন লাগে?

মুকিত জাকারীয়া : অনেক ভালো লাগে। এতো ভালো লাগে যে বুঝাতে পারবো না। কারণ দর্শক আছে বলেই আমি আছি। তাদের জন্যই আমি মুকিত জাকারিয়া হতে পেরেছি। একটা কথা বলি- দর্শক শুধু আমাকে নয়, আমার কণ্ঠও চিনে রেখেছে।

যেমন ধরেণর একটি ইউনির্ভাসিটির বিজ্ঞাপনে বলেছি- ‘প্যারাসিটামল দুই বেলা’। ওই বিজ্ঞাপনে আমাকে কিন্তু দেখাই যায় না। শুধু হাতটা দেখা যাচ্ছে। মানুষ আমার কণ্ঠ এতো বেশি শুনে ফেলেছে যে তারা আমাকে জিজ্ঞাস করেছে- এটা আপনি? কোন কিছু হলেই আমাকে দেখলে সবাই বলতো- প্যারাসিটামল দুই বেলা। এটা দর্শকদের ভালোবাসা। তাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।

 

ইটিভি অনলাইন : বর্তমানে ব্যস্ততা কি নিয়ে?

মুকিত জাকারীয়া : ব্যাচেলর পয়েন্ট নামে একটি নাটকে কাজ করছি। ১৫২ পর্বের নাটক। হা হা হা। আমি নাটকটিতে বাটপারের চরিত্রে অভিনয় করেছি। বিদেশে পাঠানোর নামে বাটপারি করে টাকা নেই। তবে পুরো গল্পটা এখন বলছি না। এছাড়াও নতুন বছরে আর কয়েকটি ধারাবাহিকে কাজ করছি।

ইটিভি অনলাইন : অনেক ধন্যবাদ মুকিত ভাই।

মুকিত জাকারীয়া : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। একুশে টিভি ও অনলাইনকেও অনেক ধন্যবাদ।

এসএ/


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি