দলের প্রয়োজনে টেস্ট খেলতে চান মাশরাফি, বিসিবির না
প্রকাশিত : ১৩:০০, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮ | আপডেট: ১৯:৫৬, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮
বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফি এক অনবদ্য সাফল্যের নাম। একজন লড়াকু সৈনিকের মতো মাটি কামড়ে শেষ পর্যন্ত মাঠে থেকে লড়াই করে যাচ্ছেন। শুরু থেকেই পারফরমেন্স দিয়েই দলে টিকে আছেন। ক্যারিয়ারে বারবার চোটে পড়েছেন। তাই ২০০৯ সালে টেস্ট থেকে বিদায় নেন মাশরাফি। সাকিব ইনজুরিতে থাকায় দল এখন ভারসাম্যহীন। এ মুহূর্তে একজন সিনিয়র খেলোয়ারের নেতৃত্ব শ্রীলংকা বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজে খুবই দরকার। দলের দরকারে মাশরাফি টেস্টে ফিরতে প্রস্তুত। কিন্তু তাঁকে ফেরাতে চায় না বিসিবি।
প্রসঙ্গত, ক্যারিয়ারে ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করেই টিকে থাকতে হয়েছে ম্যাশকে। কতবার যে ছুরি-কাচি চালাতে হয়েছে তার দেহে তার হিসেব নেই। সেটা ক্রিকেটের প্রয়োজনেই। এতকিছুও দমাতে পারেননি মাশরাফিকে। তিনি যে নেতা। নেতা কখনও হারতে জানেন না। নিজের ধারাবাহিক সাফল্যের পাশাপাশি পুরো দলকে এক সুঁতোয় বেঁধে রেখেছেন। নড়াইল এক্সপ্রেসের নেতৃত্ব নিয়ে কারো মনে কোনো প্রশ্ন নেই।
ক্রিকেটের প্রতি দেশের প্রতি ভালোবাসাই মাশরাফিকে এতোদূর নিয়ে এসেছে। পায়ে প্রচন্ড ব্যথা নিয়েও ঝুঁকি নিয়ে ফিল্ডিং করেন। চেষ্টার সর্বোচ্চটুকু নিংড়ে দিয়ে বল করেন। বোলারদের মার খাওয়ার সময় হলে নিজ হাতে বল তুলে নেন। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন।
মাশরাফির কোনো ক্লান্তি নেই। বয়স হয়ে যাচ্ছে কিন্তু তারুণ্যে ভাটা পড়েনি এতটুকু। প্রাণপ্রাচুর্য্যে গোটা দলকে উজ্জীবিত রাখেন। সেরা পারফরমেন্স বের করে আনেন। সহ খেলোয়ারদের বিপদে সবার আগে পাশে দাঁড়ান। ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এমনটা সম্ভব হতো না।
এদিকে গ্রুপ পর্বে দুরন্ত খেলেও গতকাল ফাইনালে হেরেছে বাংলাদেশ। ফাইনালে হারটা বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। আরেক দুঃসংবাদ, ফাইনালে চোট পাওয়া সাকিব আল হাসান টেস্ট সিরিজেই এখন অনিশ্চিত।
ওয়ানডেতে যে দলটি অভিজ্ঞতায় শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে ছিল, টেস্টে কিন্তু ঠিক তার বিপরীত। এমনকি সাকিবের বদলে যাঁর কাঁধে ওঠার কথা নেতৃত্বভার, সেই মাহমুদউল্লাহও আগে কখনোই টেস্ট অধিনায়কত্ব করেননি।
এ সংকটময় মুহূর্তে বাংলাদেশ দলকে এক সুতোয় গাঁথাটাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ। যেটি সবচেয়ে ভালো করতে পারতেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। যদি তাঁকে বলা হয় টেস্টে ফিরতে, ফিরবেন মাশরাফি? গতকাল শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন, ‘যদি দলের দরকার হয় অবশ্যই আমি চেষ্টা করব। এখন মাহমুদউল্লাহ আছে (ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক)। আমার বিশ্বাস যে ও দলকে চালিয়ে নিতে পারবে। আর সব সিনিয়র খেলোয়াড়েরাই তাকে সমর্থন করবে।’
টেস্ট হচ্ছে মাশরাফির সবচেয়ে প্রিয় সংস্করণ। ক্রিকেটের এই সংস্করণের প্রতি তাঁর অসীম ভালোবাসা। কিছুদিন আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে টেস্টে ভালোও করেছেন। ফুরিয়ে যাননি সেটি ভালোমতো প্রমাণ করেছেন মাশরাফি। এ মুহূর্তে দলের দরকারে তিনি টেস্টে ফিরতে প্রস্তুত।
এদিকে বিসিবির ভাবনা কিন্তু ঠিক উল্টো। কাল ফাইনাল শেষে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, টেস্ট মাশরাফির জন্য আদর্শ নয়।
/ এআর /