দাবি মেনেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় : রেজিস্ট্রার দীর্ঘ ছুটিতে
প্রকাশিত : ২০:৫৪, ৫ আগস্ট ২০১৭ | আপডেট: ২১:৩৪, ৫ আগস্ট ২০১৭
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে দাবি মেনে নিয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রেজিস্ট্রার মো. শাহুল আফজালকে দীর্ঘ মেয়াদে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে স্কুল অব ল’ বিভাগের শিক্ষক ফারহান উদ্দিন আহমেদের অব্যাহতিপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া শিক্ষককে লাঞ্ছিতকারী দুই কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক পদত্যাগ করানো হচ্ছে।
আজ (শনিবার) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। এ বিজ্ঞপ্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেজে লাইভে পড়ে শোনান উপাচার্য সৈয়দ সাদ আন্দালিব।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, রেজিস্ট্রার শাহুল দীর্ঘ ছুটির আবেদন করলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটি অনুমোদন করেছে। ৬ আগস্ট থেকে সেটি কার্যকর হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে সিকিউরিটি গার্ডের দ্বারা শিক্ষার্থী হয়রানির যে অভিযোগ আনা হয়েছিল ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি সেটি নিয়েও কাজ শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে রেজিস্ট্রার শাহুলের ছুটির মেয়াদকাল উল্লেখ করা হয়নি।
রোববার (৬ আগস্ট) থেকে পূর্ব-নির্ধারিত সব ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ফারহান উদ্দিন আহমেদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মাহিউদ্দিন ও সিনিয়র অফিসার জাভেদ রাসেল পদত্যাগ করেছেন। ইতোমধ্যে তাদের পদত্যাগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ফারহান উদ্দিন আহমেদের অব্যাহতি প্রত্যাহার করে তাকে পুনরায় নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে ছাত্রী লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করছে। এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। একই সঙ্গে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে গঠিত অনুসন্ধান কমিটি তাদের কাজ অব্যাহত রেখেছে।
কর্তৃপক্ষ দাবি করে, এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশা করছে, শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখা এবং ছাত্রছাত্রীদের একাডেমিক কার্যক্রম বিঘ্নিত না হওয়ার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে আন্দোলনের মুখপাত্র নোমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সিদ্ধান্তে আমরা অনেক আনন্দিত। আমাদের প্রাথমিক দাবি মেনে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে সে কারণে আমরা (শিক্ষার্থীরা) বৈঠকে বসেছি। সভা শেষে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে তিনি জানান।
গত রোববার (৩০ জুলাই) চাকরিচ্যুতির জের ধরে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শাহুল আফজাল ও সহকারী রেজিস্ট্রার মো. মাহিউদ্দিন ও জাভেদ রাসেলের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ল বিভাগের শিক্ষক ফারহান উদ্দিন আহম্মেদকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। ওই সময় ফারহান অভিযোগ করেন, তাকে অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এ অন্যায় তিনি মেনে নিতে না চাওয়ায় তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। এরপর শিক্ষক ফারহানের পক্ষে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমটিও গঠন করা হয়। আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষাতেও অংশ নেয়নি। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে অংশ নেন শিক্ষক ফারহানও। এতে তার বিরুদ্ধে আন্দোলন উস্কে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে তিনি আন্দোলন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।
ডব্লিউএন
আরও পড়ুন