ঢাকা, বুধবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দামি গাড়িতে বাড়ি এসে গরু জবাই করে খাওয়াতেন প্রশ্নফাঁস চক্রের মিজান

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৩৫, ১৬ জুলাই ২০২৪ | আপডেট: ১১:৩৭, ১৬ জুলাই ২০২৪

Ekushey Television Ltd.

বিসিএস প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় জড়িত লালমনিরহাটের মিজানুর রহমান মিজান। অল্প সময়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যান তিনি। প্রায়ই দামি গাড়ি নিয়ে বাড়িতে এসে গরু জবাই করে খাওয়াতেন এলাকাবাসীকে।

এলাকায় তিনি ধর্মপ্রাণ এবং দানশীল ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি। তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের মহিষখোঁচায় গড়ে তুলেছেন ৩ তলা বিশিষ্ট মসজিদ।  বাবার নামে করেছেন ২ তলা বিশিষ্ট হাফেজিয়া মাদ্রাসা।

মিজানুর রহমান লালমনিরহাটের বাড়িতে আসলে বিভিন্নস্থান থেকে লোকজন তার সাথে দেখা করতে আসতেন। প্রায়ই তিনি ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে দাওয়াত দিয়ে গরু জবাই করে পুরো এলাকাবাসীকে খাওয়াতেন। এছাড়া ঈদ এবং শীত মৌসুমে এলাকার মানুষকে শাড়ি-লুঙ্গি ও কম্বল উপহার দিতেন। 

তবে কৌশলী মিজান নিজের পৈতৃক ভিটায় বাড়ি ছাড়া আর কোন সম্পদই করেননি। 

লালমনিরহাটের মহিষখোঁচা ইউনিয়নের মৃত আবু বক্কর সিদ্দিকের পুত্র মিজানুর রহমান মিজান। পড়াশোনার সুবাদে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন ২০০৯ সালে। সেখানে একযুগ আগে তার সাথে পরিচয় হয় বিজি প্রেসের কর্মচারী এটিএম মোস্তফার সাথে। মোস্তফা তখন মিজানকে নিজের গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে নিয়োগ দেন। আর তখন থেকেই মিজান জড়িয়ে পড়েন প্রশ্নফাঁস চক্রের সাথে। 

পরে ২০১১ সালে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে বিজি প্রেসের কর্মচারি মোস্তফার চাকরি চলে গেলে প্রশ্নফাঁস চক্রে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার শুরু হয় মিজানের। দামি গাড়ি নিয়ে শুরু হয় নিজ গ্রামে ঘন ঘন আসা যাওয়া।

নিজেকে ঢাকার বড় ঠিকাদার ও ম্যাক সিক্স প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী নামে একটি প্রতিষ্ঠানের এমডির পরিচয় দেয়া শুরু করে মিজান। এলাকার মোড়ে মোড়ে নিজের ছবিসহ পোস্টার টানিয়ে এবং অসহায় মানুষদের সাহায্য সহযোগীতা করে সবার মন জয় করেন। 

২০২২ সালে আদিতমারী উপজেলা আওয়ামি লীগের পুর্ণাঙ্গ কমিটিতে সহ-সভাপতির পদ বাগিয়ে নেন মিজান। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। 

পদ পেয়ে প্রশ্নফাঁসের পাশাপাশি সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের নাম ভাঙ্গিয়ে শুরু করেন চাকরি বাণিজ্য। অল্প সময়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে যান মিজান। দেশের বিভিন্ন জায়গায় নামে বেনামে ব্যাংক ব্যালেন্সসহ অঢেল সম্পত্তির মালিক হন তিনি। কৌশলে সে নিজ গ্রামে কোন সম্পত্তিই ক্রয় করেননি। তবে তার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের মহিষখোঁচায় গড়ে তুলেছেন ৩ তলা বিশিষ্ট মসজিদ। বাবার নামে করেছেন ২ তলা বিশিষ্ট হাফেজিয়া মাদ্রাসা।

প্রায়ই দামি গাড়ি নিয়ে বাড়িতে এসে গরু জবাই করে খাওয়াতেন এলাকাবাসীকে। গ্রামবাসীদের আর্থিক সহযোগিতা করতেন। আর মিজানুরের প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার ব্যাপারে জানেনই না এলাকাবাসী।  সবাই তাকে  বড় ঠিকাদার ও দানশীল ব্যক্তি হিসেবেই জানেন।

তবে তিনি বাড়িতে আসলে আশপাশের বহু মানুষ তার সাথে দেখা করতে আসতো বলে জানান এলাকাবাসী।

সম্প্রতি পিএসসির প্রশ্নফাঁস এবং চাকরি বাণিজ্য চক্রের মিজানুর রহমান মিজানের কুকীর্তি বেড়িয়ে আসে। যা গ্রামের সহজ-সরল মানুষ বিশ্বাসই করতে পারছেন না।

প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় জড়িত থাকায় ১৩ জুলাই আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ জরুরি সভা ডেকে মিজানুর রহমান মিজানকে দল থেকে বহিষ্কার করে।

এ ঘটনায় তার সর্বোচ্চ সাজা প্রার্থনা করেন তারই একসময়ের রাজনৈতিক সহকর্মীরা।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি