দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে হলুদের ঢেউ
প্রকাশিত : ২০:০৬, ১১ জানুয়ারি ২০২২
দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে এখন হলুদের ঢেউ। মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। পাশাপাশি কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দের আভা ফুটে উঠেছে।
দিনাজপুর কৃষি অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানান, এবারে জেলায় ২০ হাজার ৫০২ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কৃষকেরা কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরণায় এবারে ২২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ অর্জিত করেছে। ফলে লক্ষ্যমাত্রা অতিরিক্ত ২ হাজার ১৯৮ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ অর্জিত হয়েছে।
তিনি জানান, শুক্রবার কৃষি বিভাগের মাঠ পরিদর্শন দিবস উপলক্ষে জেলার বিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে সরিষার ফলের জমি পরিদর্শন করেছেন। এসময় তিনি কৃষকদের সাথে কথা বলে সরিষা উৎপাদনের ব্যাপক সফলতার বিষয় অবগত হয়েছেন।
তিনি বলেন, ফসলের মাঠগুলো সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে। মাঠে পরিচর্চার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। এবারে জেলায় সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে ২৩ টন সরিষা বীজ ১৩টি উপজেলার কৃষকদের মধ্যে কৃষি প্রণোদনা হিসেবে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ৫০ টন সার ও ৩ টন কীটনাশক কৃষকদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। কৃষকেরা যাতে সঠিক সময় সরিষা জমিতে চাষ করতে পারে সে বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ কর্মীরা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি জানান, কৃষি বিভাগের বিশেষজ্ঞ দল দীর্ঘ সময় গবেষণা করে সরিষার উন্নত জাত উদ্ভাবন করেছেন। উন্নত জাতের সরিষা বারি-৫, ৬, ৭ ও ৯ জাতের সরিষা বীজে এবার কৃষকদের সরবরাহ করে চাষ করার জন্য উৎসাহ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জমিতে যে অবস্থায় সরিষা রয়েছে তাতে প্রতি হেক্টরে ৬০ মন করে সরিষা ফলন অর্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই সরিষা অনেকেই উঠাতে পারবেন। এই সময়ের মধ্যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন অর্জিত হয়েছে সরিষা এবার জেলায় ব্যাপক সফলতা আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সদর উপজেলার আউলিয়াপুর গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর তিনি এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করে। চলতি বছর তিনি ২ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছে। তেলের চাহিদা মেটাতে তিনি বেশি করে সরিষার চাষ করেছেন। একই বক্তব্য দেন বিরল উপজেলার ফরক্কাবাদ গ্রামের কৃষক হরেন্দ্র বর্মন ও বীরগঞ্জ উপজেলার সুজালপুর গ্রামের কৃষক হারেস আলী। তিনি বলেন, আমরা ছোট বেলায় সরিষা তেল দিয়ে তরকারি রান্না খেয়েছি। তখন কোনো রোগ বালাই কম ছিল। এখন ভেজাল তেলের কারণে প্রতিটি ঘরে রোগ বালাই লেগেই রয়েছে। এ জন্য অনেকে এখন সরিষা চাষ করে তেল নিজেরা ভেঙ্গে নিয়ে পরিবারের খাওয়ার জন্য সরিষার চাষে ঝুঁকে পড়েছে।
এসি
আরও পড়ুন