দুদকের মামলায় এমপি শওকতের জামিন
প্রকাশিত : ১২:০৭, ৪ ডিসেম্বর ২০১৭
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা দুই মামলায় নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. শওকত চৌধুরীকে দুই মাসের মধ্যে বেসিক ব্যাংককে ৫ কোটি টাকা পরিশোধ করার আদেশ দিয়েছেন সুপ্রীমকোর্ট। টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাকে আবারও জেলে যেতে হবে বলে সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন।
সোমবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে গত ২২ অক্টোবর মো. শওকত চৌধুরীকে ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা না দিলে তার জামিন বাতিল করা হবে মর্মে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে লিভ-টু-আপিল করেন জাতীয় পার্টির এ সংসদ সদস্য।
আদালতে সংসদ সদস্য শওকতের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন, এ এম আমিনুদ্দিন ও শেখ ফজলে নূর তাপস। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ ও ১০ মে শওকত চৌধুরীসহ ব্যাংকটির নয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বংশাল থানায় দুটি মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ব্যাংকটির ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও বংশাল শাখার সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মো. হাবিবুল গনি, চাকরিচ্যুত অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, ফার্স্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার শিরিন নিজামী, সাবেক সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট মো. সফিকুল ইসলাম, সাবেক ভাইস-প্রেসিডেন্ট পানু রঞ্জন দাস, সাবেক ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইখতেখার হোসেন, সাবেক অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার দেবাশীষ বাউল, সাবেক এক্সিকিউটিভ অফিসার ও বর্তমানে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিসার আসজাদুর রহমান।
অভিযোগে বলা হয়, ২০১২ এর ডিসেম্বর থেকে ২০১৫ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ৩৭টি এলসি খুলে মেসার্স যমুনা এগ্রো কেমিক্যাল, মেসার্স এগ্রো কেমিকেল লিমিটেড ও উদয়ন এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নামে অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশে তিনি এ ঋণ জালিয়াতি করেন। পরে যা সুদে আসলে শত কোটি টাকার ওপরে চলে যায়। তাই, ২০১৬ সালে ৮ মে ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ৮১৫ টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। একই বছর ১০ মে, ৯৩ কোটি ৩৬ লাখ ২০ হাজার ২১৩ টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সংসদ সদস্য শওকতসহ ৯ জনের নামে আরেকটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এরপর ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে শওকত চৌধুরী হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। পরে নিম্ন আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এদিকে এই মামলার অপর আসামিরা গত বছর জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, প্রধান আসামি শওকত চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। তাই তারাও জামিন পেতে পারেন।
এরপর গত বছরের ২৪ নভেম্বর জামিন বাতিলে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত সংসদ সদস্য মো. শওকত চৌধুরীকে ৫০ দিনের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে জমা দিতে বলেন। তবে সেই আদেশের বিরুদ্ধে লিভ-টু-আপিলে যান সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরী।
এমজে/ এআর
আরও পড়ুন