দুবাইয়ে বিস্ময়কর স্থাপনা কুরআনিক উদ্যান
প্রকাশিত : ২০:৩৯, ৯ এপ্রিল ২০১৯
সংযুক্ত আরব আমিরাতের গড়ে তোলা হয়েছে কুরআনিক উদ্যান বা ‘হলি কুরআন পার্ক’। দেশটির দুবাই প্রদেশের আল-খাওয়ানিজ অঞ্চলে ৬৪ হেক্টর জমির ওপর গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্ক। পবিত্র কোরআনের বর্ণিত ঘটনার আলোকে মূলত এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
গত ২৯ মার্চ এ কুরআনিক পার্কের উদ্বোধন করা হয়। এরপর সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
এক অফিসাল টুইটে বলা হয়েছে, কুরআনিক পার্ক গড়ে তোলার মূল উদ্দেশ্য হলো বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ধর্ম-বর্ণের মানুষের সঙ্গে বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতির সেতুবন্ধ। কুরআনে বর্ণিত বিভিন্ন সৃষ্টি, উদ্ভিদ ও ঘটনার সঙ্গে মিল রেখেই তৈরি করা হয়েছে এ কুরআনিক গার্ডেন।
এ কুরআনিক গার্ডেনে রয়েছে মূল প্রবেশদ্বার, প্রশাসনিক ভবন, ইসলামিক বাগান, শিশুদের খেলার স্থান, দর্শনীয় স্থান, উন্মুক্ত আঙ্গিনা এবং কুরআনের অলৌকিক ঘটনার বর্ণনাসমৃদ্ধ এলাকা।
কুরআনে বর্ণিত ঘটনার কোনো বর্ণনার চিত্রায়ন ও সাজসজ্জা বাদ যায়নি এ পার্কে। এ পার্কে রয়েছে মরুদ্যান, পাম বাগান, নয়নাভিরাম লেক, চলমান রাস্তা এবং সাইক্লিনিং ট্র্যাক ও হাঁটার রাস্তা।
কুরআনে বর্ণিত দারুচিনি, জলপাই, মরিচ, রসুন, পেঁয়াজ, মরিচ, গম, আদা, কুমড়া, তরমুজ, তেঁতুল, আঙ্গুর, কলা, ডুমুর, ডাল, ভুট্টা, বার্লি, শসা, আম, কাছিড়, তুঁত এবং বিভিন্ন মসলার উদ্ভিদ দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে এ কুরআনিক পার্ক।
কুরআনিক গার্ডেনে এমন কিছু উদ্ভিদের বাগান রয়েছে, যা দ্বারা ভেষজ চিকিৎসা করা যায়। এখানে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণ দৃষ্টিনন্দন ঝরনা। গ্লাস নির্মিত স্বচ্ছ ভবন। কুরআনের বর্ণনায় একটি গুহার আবহও তৈরি করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত ৫৪ প্রজাতির মধ্যে ৩৫টি পার্কের অভ্যন্তরে প্রদর্শিত হচ্ছে। অবশিষ্ট ১৫টি গ্রিন হাউজে প্রদর্শিত হবে এবং আরো ২০টি প্রজাতি পার্কের বাইরে প্রদর্শিত হবে।
পার্কে একটি টানেল আছে, যা অলৌকিক ঘটনার অডিওসহ চিত্র তুরে ধরতে ব্যবহার হচ্ছে। পর্যাপ্ত খোলা জায়গা এবং পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে এ কুরআনিক পার্কে। প্রকল্পটি নির্মাণে দুবাই মুদ্রায় ২৭ মিলিয়ন অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।
কোন টিকেট ছাড়াই দর্শনার্থীরা প্রবেশ করতে পারবেন। এই পার্ক সর্বশেষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু মুসলমানদের জন্য নয়, এই পার্ক সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। কোরআনের বর্ণিত ঘটনার আলোকে প্রতিটি বিষয় এখানে তুলে আনা হয়েছে মানুষের অনুধাবনের জন্য।
এছাড়া এই উদ্যানে আছে গ্লাস হাউজ, শিশুদের খেলার স্থান, দর্শনীয় স্থান, কোরআনে বর্ণিত ঘটনার বর্ণনা সমৃদ্ধ এলাকা। আগত দর্শনার্থীর সুবিধার্থে প্রতিটি নির্মাণের পাশে লিখে দেওয়া হয়েছে কোরআনের বর্ণিত ঘটনার প্রসঙ্গিক আয়াত। এখানে কৃত্তিম গুহা নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া ডিজিটাল মিডিয়া রয়েছে, যেখানে ঘটনার আলোকে প্রাসঙ্গিক ভিডিও দেখানো হচ্ছে। এই পার্কটি বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষের সঙ্গে বুদ্ধিভিত্তিক যোগাযোগের সেতু বন্ধন রচনা করবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
এই পার্ক মুসলমানদের আগ্রহী করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া মুসলমানের অর্জনগুলো অন্য ধর্মের মানুষকে আগ্রহী করছেন দেশটির কর্তৃপক্ষ।
কেআই/