দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ

করোনায় যখন গোটা বিশ্ব আক্রান্ত, থমকে গেছে পৃথিবীর সব গতি, অর্থনীতি-শিল্প-সাহিত্য-সামাজিক সম্পর্ক, সবকিছুতেই নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হচ্ছে। পৃথিবীর শুরু থেকে বর্তমানের এই সময়কাল পর্যন্ত, পৃথিবীর এমন রূপ কেউ কখনো দেখেনি। আমরাও এর বাইরে নয়। তারপরও কোন কিছুতেই জীবন যে থেমে থাকে না, মৃত্যুর ভেতর দিয়েও যে মানুষ বাঁচে, এগিয়ে যায়, যেতে চায়, এই সময়কাল তার বড় প্রমাণ বহন করছে। 

শিল্প-সাহিত্য জীবনবিচ্ছিন্ন নয়, জীবনের রক্তে-মাংসে শিল্পসাহিত্য প্রবাহমান স্রোতের মতো। মহামারী মহাদূর্যোগে সৃষ্টিশীলতা কখনো বন্ধ্যা নদী হয় না। বহমান নদীর মতোই তা এগিয়ে চলে, নতুন স্বরূপে নতুন উদ্যমে। নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ শিল্প সাহিত্যবিষয়ক নিয়মিত ওয়েবিনার আয়োজন করে অনন্য এক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। বাংলাদেশে বোধ হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে শিল্প-সাহিত্য নিয়ে এ ধরণের আয়োজন একমাত্র নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগই করছে। 

এ পর্যন্ত এ বিভাগ থেকে ছয়টি আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘বাংলা মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের ধারা’, ‘বাংলা বিপ্লবী উপন্যাসের ধারা’, ‘করোনাকালের শিল্প-সাহিত্যের গতিপ্রকৃতি’, ‘কবিকণ্ঠে কবিতা ও আলোচনা’, ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন’ এবং ‘প্রবহমান বাংলা ভাষার গতি-প্রকৃতির ধরন’। 

এসব বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার অংশগ্রহণ করেছেন- নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, উপউপাচার্য প্রফেসর প্রকৌশলী ড. হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন ও প্রফেসর এবং খ্যাতিমান কবি-গবেষক প্রফেসর ড. অনীক মাহমুদ, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক শিল্পবোদ্ধা এএসএম কামাল উদ্দিন, কবি-গবেষক বিলু কবীর, কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও প্রফেসর কবি সরওয়ার মুর্শেদ,  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রবন্ধিক-গবেষক শহীদ ইকবাল, কবি-গবেষক ও বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ড. তপন বাগচী নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ড. রকিবুল হাসান, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ আল জাহেরি মাহমুদ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশিষ্ট গবেষক ড. মাসুদ রহমান, সাংবাদিক-লেখক-গবেষক ও দৈনিক মানবকণ্ঠের দীপঙ্কর গৌতম, এনইউরি অ্যাডিশনাল রেজিস্ট্রার আবুল হোসেন কবি ও মাসিক মোহনা সম্পাদ ইসরাফিল হোসেন, লন্ডন থেকে অংশগ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধ ও নজরুল গবেষক ড. তাহা ইয়াসিন, বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের  অধ্যাপক ড. সত্যজিৎ দত্ত, কবি-কথাশিল্পী দৈনিক ইত্তেফাকের সাহিত্য সম্পাদক ফারুক আহমেদ, কবি  ও দৈনিক জনকণ্ঠের সাহিত্য সম্পাদক মিলু শামস, সাংবাদিক-শিশুসাহিত্যিক ড. জ্যোৎস্নালিপি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জয়নাব বিনতে হোসেন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আরিফা বিশ্বাস, কবি ও নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষক শারমিন সুলতানা তন্বী ও পশ্চিমবঙ্গের কবি-কথাসাহিত্যিক সুতনু হালদার, গবেষক-প্রাবন্ধিক ড. এম. আব্দুল আলীম, পশ্চিমবঙ্গের কবি-গল্পকার বন্যা ব্যানার্জী ও বাংলা টিভির সংবাদ উপস্থাপক কবি শাকিল আহমাদ রুমী। 

এ সব ওয়েবিনার আয়োজন করে নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ রীতিমতো দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাহিত্যচর্চার সাথে নিজেদের সাহিত্যচর্চা এবং নিজেদের শিল্পসাহিত্য নিয়ে আলোচনামূলক যে কাজটি ওয়েনিারের মাধ্যমে করছে, তা রীতিমতো দায়বোধের পরিচয় যেমন বহন করে, তেমনিভাবে এও প্রমাণ করে যে, কোন মহামারীই মানুষের শিল্পক্ষুধাকে হত্যা করতে পারে না। বরং নব উদ্যমে নতুন ধারায় তা এগিয়ে যায়, এগিয়ে নিতে হয়। নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ এই কঠিন সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। 

এনএস/