দেশজুড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় ধস, বিপর্যস্ত জনজীবন
প্রকাশিত : ০৮:৪৯, ৩ জানুয়ারি ২০২৫
সারাদেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় ধস নেমেছে। এতে শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। দেশ জুড়ে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে রাজধানীসহ সারাদেশ। অনেক এলাকায় সূর্যের দেখা পাওয়া না গেলেও কিছু কিছু এলাকায় দুপুরের পর মিলেছে সূর্যের আলো। সূর্যালোক না থাকায় দিনে শীতের তীব্রতা বাড়ছে, এ অবস্থা আজও বিরাজ করবে। তবে আগামীকাল শনিবার (৪ ডিসেম্বর) তাপমাত্রার উন্নতি হতে পারে। এরপর ৯ জানুয়ারি আবারো শীত তীব্রভাবে জেঁকে বসতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
ঢাকা শহরে এ মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকার কথা ২৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) তা ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসে।
অন্যদিকে ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান ২ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়ায় ঢাকা শহর কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে। সারা দেশেই বেড়েছে শীতের তীব্রতা ও কুয়াশার ঘনত্ব। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে যাওয়ার চিত্র শুধু ঢাকা শহরেই নয়, আরিচায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে, রাজশাহীর বাদলগাছিতে বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হলেও গতকাল তা ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। বগুরায় বুধবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হলেও গতকাল তা ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস নেমে যায়। টাঙ্গাইলে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নেমে আসে ১৫ দশমিক ৪ ডিগ্রিতে।
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমে যাওয়া প্রসঙ্গে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, দিনে সূর্যের আলো দেখা গেলে শীতের অনুভবতা কমে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ অনেক এলাকায় সূর্যের দেখা পাওয়া যায়নি। এতে শীতের অনুভব বাড়িয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া দিনেই মানুষ প্রয়োজনের খাতিরে ঘর থেকে বের হয় তাই অনুভবও বেশি পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাতের তাপমাত্রার তেমন পরিবর্তন হয়নি। তাই রাতে আগে যেমন শীত অনুভব হয়েছে এখনো তাই হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কুয়াশার চাদর প্রবেশ করে। ভারতের উত্তর প্রদেশ ও দিল্লি থেকে আসা সেই কুয়াশার চাদরের কারণে সূর্যের আলো ভূপৃষ্ঠে প্রবেশ করতে পারে না বলে দিনের তাপমাত্রা বাড়তে পারে না। আর দিনের তাপমাত্রা বাড়তে না পারলে শীতের অনুভব অনেক বেড়ে যাবে। ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসায় শীতের অনুভবতা বেশি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এজন্য বছরের এ সময়ে গ্রামেগঞ্জে গরু, ছাগলকে চটের বস্তা পরিয়ে দিতে হয় শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে।
কুয়াশার চাদরে দেশ ঢেকে গেলেও দেশ জুড়ে শৈত্যপ্রবাহ দেখা যায়নি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপাত্ত অনুযায়ী গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে সিলেটে ২৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমেনি।
আবহাওয়ার এ চিত্র কতদিন থাকবে জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ফোকাস্টিং কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, দেশজুড়ে শৈত্যপ্রবাহ দেখা না গেলেও শীতের অনুভব বেড়েছে। কুয়াশার চাদর ও শীতের অনুভবতা আজ শুক্রবার পর্যন্ত থাকতে পারে এবং শনিবার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে।
আবার কবে শীতের তীব্রতা বাড়তে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওমর ফারুক বলেন, ‘৯ জানুয়ারির পর আবারো তাপমাত্রা কমতে পারে। তখন মাঝারি মাত্রার শৈত্যপ্রবাহের মুখোমুখিও হতে পারে দেশ।’
এসএস//
আরও পড়ুন