ঢাকা, রবিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৫

Ekushey Television Ltd.

দেশে ফেরার অপেক্ষায় ১৫৪ নারী গৃহকর্মী

সৌদি আরব প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১৬:১১, ১৬ এপ্রিল ২০২০

দেশের ফেরার অপেক্ষায় বাংলাদেশী নারীরা

দেশের ফেরার অপেক্ষায় বাংলাদেশী নারীরা

Ekushey Television Ltd.

দেশে ফেরার অপেক্ষায় সৌদি আরবে কাজের ভিসায় যাওয়া ১৫৪ জন বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মী। রাজধানী রিয়াদ দূতাবাসে বিভিন্ন সমস্যায় আশ্রয় নেয়া এসব নারী গৃহকর্মীর আইনী প্রক্রিয়া সঠিক সময়ে শেষ না হওয়ার কারণে তারা দেশে ফিরতে পারেনি।

এদিকে, বর্তমানে সৌদির আইনী প্রক্রিয়া শেষ হলেও মরণব্যধি করোনার বিস্তার ঠেকাতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আটকে পড়েন তারা। সৌদিতে গিয়ে বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ দূতাবাস রিয়াদের সেফহোমে আশ্রয় নেন ১৫৪ জন বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মী। এছাড়া সৌদি আরবের বিভিন্ন মর্গে থাকা বাংলাদেশি কর্মীদের লাশ স্থানীয়ভাবে দাফন করার জন্য বলা হচ্ছে।

রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ কাউন্সিলর মোঃ মেহেদী হাসান জানান, বর্তমানে আমাদের সেফহোমে ১৫৪ জন বাংলাদেশি নারী গৃহকর্মী রয়েছেন। অনেক আগে থেকেই তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছিলো। আমাদের অনুরোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সেফহোমে এসে ফিঙ্গারপ্রিন্ট (আঙ্গুলে ছাপ) নিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, সকল আইনি জটিলতা কাটিয়ে ১৩৫ জনের ফাইনাল এক্সিট ভিসা পাওয়া গেছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ আছে। যে কারণে তাদেরকে পাঠানো যাচ্ছে না। বিশেষ ফ্লাইটের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। ফ্লাইট শিডিউল পাওয়া গেলে ১৩৫ জনকে দেশে পাঠাতে কোনো আইনি বাঁধা নেই। 

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ১৩টি প্রদেশের ৩ হাজার ৪৪৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শ্রমিকদের বাসস্থান হিসাবে ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছে সৌদি সরকার। বিভিন্ন শ্রমিক ক্যাম্পে গণবসতিতে থাকা বিদেশি শ্রমিকদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানায় স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।

দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, সৌদি আরবের পুর্বাঞ্চলে (দূতাবাসের অধীক্ষেত্র) স্বাভাবিক মৃত্যুবরণকারী ৬০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি প্রবাসীর লাশ বিভিন্ন মর্গে রয়েছে। এ লাশগুলো স্থানীয়ভাবে দাফনের জন্য সৌদি কতৃপক্ষ বার বার তাগিত দিচ্ছে। 

সূত্রটি জানায়, মৃত প্রবাসীর পরিবারের সম্মতি না পাওয়ায় স্থানীয়ভাবে তাদেরকে দাফন করা সম্ভব হচ্ছে না। সূত্রটি আরও জানায়, একদিকে দাফনের জন্য চাপ, অন্যদিকে পরিবার থেকে সম্মতি না পাওয়ায় মৃত্যদেহগুলোর ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বিপাকে আছেন দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট শাখা। 

এদিকে, ঢাকা সিভিল এভিয়েশনের তথ্যমতে, আগামী ৩০ এপ্রিলের আগে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের সম্ভাবনা নেই।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলে দায়িত্বপালনকারী দূতাবাসের আইনী সহায়তাকারী বলেন, প্রতিদিনই বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাংলাদেশিদের স্বাভাবিক (করোনা ভাইরাস নয়) মৃত্যুর খবর আসছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন থেকে এসব মরদেহ দাফনের জন্য চাপ দিচ্ছে। অন্যদিকে মৃত প্রবাসীদের পরিবার আরও দুইমাস অপেক্ষা করতে বলছে। এ নিয়ে আমরা বেশ বেকায়দায় আছি।

এই আইনী সহায়তাকারী বলেন, মৃতদের পরিবার থেকে স্থানীয়ভাবে দাফনের অনুমতি দিলে ধর্মীয় রীতি মেনেই মৃতদেহ দাফন করা হয়। যেহেতু এখনো পর্যন্ত করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ হওয়া ফ্লাইট কবে চালু হবে সেটা অনিশ্চিত। সেহেতু দীর্ঘদিন মরদেহ মর্গে ফেলে না রেখে স্থানীয়ভাবে দাফন করে ফেলাই শরীয়ত সম্মত।

এ বিষয়ে শ্রম কল্যাণ কাউন্সিলর মেহেদী হাসান বলেন, মৃত প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে স্থানীয়ভাবে মরদেহ দাফনের আবেদন করলে আমরা দ্রুত অনাপত্তিপত্র দিয়ে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। 

এদিকে, বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্বজুড়ে এক অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে বৈশ্বিক অর্থনীতি। বেকার হয়ে পড়ছে লাখ লাখ মানুষ। অনিশ্চিত এক পথে হাঁটছে গোটা পৃথিবী।

এনএস/


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি