নারী ও শিশু প্রতি সহিংসতা
দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান ৪ আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার
প্রকাশিত : ১৭:২৫, ১১ মার্চ ২০২৫

দেশে নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা একশনএইড বাংলাদেশ, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ। পাশাপাশি এসব ঘটনায় অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের আহ্বানও জানিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো।
নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতা রোধে সরকারের নেওয়া সাম্প্রতিক ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানায় সংগঠনগুলো। তারা জানায়, ধর্ষণের ঘটনায় ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত এবং ৯০ দিনের মধ্যে বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রশংসনীয়। আমরা এর জরুরি কার্যকর ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন আশা করি। ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানাচ্ছি। এছাড়া ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিতে মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ধর্ষণ আইনের সংস্কার এবং ভুক্তভোগী ব্যক্তি ও সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করার দাবি জানাচ্ছি।
সারাদেশে নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে সাহসী শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সমাজকর্মী ও সচেতন নাগরিকদের প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রতিক্রিয়ায় এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ও সংহতি প্রকাশ করার কথা জানায় সংগঠনগুলো।
সম্প্রতি আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে ২৯৪ জন নারী ও শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন, যার মধ্যে ৯৬টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে এবং ৪৪ জন শিশুও রয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে এই অপরাধের হার উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে ১০৭ জন নারী ও কন্যাশিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ৫৩টি ধর্ষণের ঘটনার মধ্যে ৩৮ জন নারীর বয়স ১৮ বছরের কম। একইসাথে মোরাল পুলিশিং, মব ভায়োলেন্স এবং জেন্ডার ন্যায়বিচারের অপব্যাখ্যার হার আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। এই উদ্বেগজনক প্রবণতা শুধু ভুক্তভোগীর ভোগান্তিই বাড়াচ্ছে না, বরং তাদের ন্যায়বিচার এবং সুরক্ষা চাওয়ার ক্ষেত্রেও নিরুৎসাহিত করে।
যৌথ বিবৃতিতে সংগঠনগুলো জানায়, নারী, কিশোরী ও শিশুদের প্রতি যেকোনও ধরনের সহিংসতা বা হয়রানি মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আমরা সরকার ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নারী ও মেয়েশিশুদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ও দায়িত্বশীল ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা একটি বিস্তৃত শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি নারী ও শিশুদের জন্য নিরাপদ চলাচল, নাগরিক স্বাধীনতা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা দাবি করছি। তদুপরি, আমরা ভুক্তভোগীদের প্রাধান্য দিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে অপরাধীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই। এর পাশাপাশি ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সর্বোচ্চ সুরক্ষা ও মর্যাদা নিশ্চিতের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে আইনি সংস্কার করার দাবি জানাই।
‘আমরা বিশ্বাস করি, নারীর প্রতি সহিংসতা কঠোরভাবে দমন করার মাধ্যমে দেশে ন্যায্যতা, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
এমবি//
আরও পড়ুন