‘নকল সারের বিরুদ্ধে এসিআই এগ্রিবিজনেস’
প্রকাশিত : ২৩:২৬, ৭ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ১০:০৬, ৮ আগস্ট ২০১৮
ড. এফ এইচ আনসারী
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গত ৭ জুন জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উত্থাপন করেন। আর ২৮ জুন পাস হয় বর্তমান সরকারের মেয়াদের ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার শেষ বাজেট। বাজেট পাসের প্রায় মাস খানেক পর এসে কৃষিখাতে এর প্রভাব নিয়ে কী ভাবছেন দেশের কৃষিখাত সংশ্লিষ্টরা তা জানার চেষ্টা করেছে একুশে টেলিভিশন অনলাইন। এছাড়াও নিরাপদ সড়কের দাবিতে সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলনে কেমন প্রভাব পড়েছে কৃষিখাতে তাও বোঝার চেষ্টা করা হয়। এসব বিষয়সহ বেশকিছু বিষয়ে ইটিভি অনলাইনকে সাক্ষাৎকার দেন এসিআই এগ্রি বিজনেস এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এফ এইচ আনসারী। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ইটিভি অনলাইনের সহ-সম্পাদক শাওন সোলায়মান।
ইটিভি অনলাইন: বাজেটের আগের অনুমানের সঙ্গে বাজেট পাস হওয়ার পরের চিত্র কেমন দেখছেন? এবারের বাজেটে কৃষি খাতের বরাদ্দ নিয়ে কী মনে করছেন?
ড. এফ এইচ আনসারী: আমার যেটা ধারণা ছিল যে, বাজেটে অন্তত দুইটা বিষয়ে গুরুত্ব দিবে। এগুলো হলো গবেষণা এবং কৃষি সম্প্রসারণকে। কিন্তু বাজেটে এবং বাজেট বকৃতায় দেখলাম যে, গবেষণা নিয়ে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। যতটুকু দেওয়া হয়েছে তাতে খুব একটা আশাব্যঞ্জক কিছু মনে হয় না। এটা দিলে ভালো হতো। আমাদের দেশে পাবলিক খাতে গবেষণা করা হবে এমনটা মনে করলে সেটা খুব একটা ভালো কিছু হবে না। বিশ্বের কৃষিখাতে গবেষণার ৮৫ শতাংশই হয় প্রাইভেট খাতে। তবে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি অর্থায়ন করা যেতো গবেষণার জন্য তাহলে ভালো কিছু হতে পারতো।
আর দ্বিতীয়টি হলো কৃষি সম্প্রসারণ যেহেতু অনেক বড় একটা জায়গা, অনেক কৃষিবিদ কাজ করেন তাই তাদের কার্যক্রমকে বাড়ানোর জন্য ভাতা বাড়ানো যেতে পারতো। তাদেরকে চলাচলের জন্য জ্বালানী দেওয়া, আইটি সরঞ্জাম দেওয়া; এগুলো যদি দেওয়া যেতো তাহলে আধুনিক যোগাযোগ ও কৃষি যন্ত্রপাতি পেলে তারা কিন্তু আরও দক্ষভাবে সেবা দিতে পারতো। সেটি নিয়ে কিন্তু বাজেটে খুব বেশি কিছু বলা হয়নি। বাজেটে কিছু ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। ধরেণ এক কেজি ধান উৎপাদন করতে সার ও ডিজেলে যে ভর্তুকি সরকার দেয় তাতে দেড় টাকার মতো খরচ বেঁচে যায়। এটা খুব বেশি কিছু না। গড়ে দেখা যায় চার টন ইল হয় ধান থেকে। এটাকে যদি পাঁচ টন করা যায় তাহলে কী দাঁড়াবে? আপনার রিটার্ন হবে প্রায় ৩০ শতাংশ।
এর ফলাফলটা কী দেখেন। এখন যদি এক কেজি ধানের উৎপাদন খরচ হয় ২২ টাকা তাহলে সরকারের ভর্তুকির পর খরচ হবে ২০ টাকা। কিন্তু প্রযুক্তি বাড়িয়ে এর উৎপাদন খরচ ১৩ টাকায় আনা সম্ভব। এতে কিন্তু কৃষকের লাভ হচ্ছে সাত টাকা। তাহলে ধানের দাম কমবে। কৃষক লাভবান হবেন। ভোক্তা কিনেও খুশি থাকবেন। সরকার যেকোন সময় এই কাজটা করতে পারেন। আর এটা করা উচিৎ।
ইটিভি অনলাইন: তো সরকার এমনটা কেন করছে বলে আপনি মনে করেন?
ড. এফ এইচ আনসারী: আমার মনে হয় সরকার এই খাতের উন্নয়নের গুরুত্বটা সেভাবে বুঝে উঠতে পারতেছে না। এটাকে ঠিকভাবে ‘অ্যাড্রেস’ করতে পারতেছে না। আরও বিষয় আছে। আমাদের দেশের জাতীয় চাহিদা অনেক। রাস্তাঘাট বানাতে হবে, বিদ্যুৎ দিতে হবে। গরিবদের সাহায্য করতে হবে, মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে থাকতে হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি করতে হবে। এর মধ্যে কৃষি! সরকার করবে কোনটা?
আমি যদি বলি যে, চাইলেই সব সম্ভব তাহলে তো হলো না। সরকারকে তো আয় করে এসব করতে হবে। ধার নিয়ে করতে পারবে না। আর করলেও সেটা তো আমিও সমর্থন করব না। কারণ সরকারের ধার করা মানে আমারও ধার করা। সেই কারণেই আমি মনে করি যে, সবকিছুর সঙ্গে সমন্বয় করে এই খাতের আরও উন্নয়ন করতে হবে।
ইটিভি অনলাইন: এমন পাওয়া না পাওয়ার মাঝে সাম্প্রতিক সময়ের আন্দোলনে পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়েছে। কৃষিতে এর প্রভাব কেমন ছিল?
ড. এফ এইচ আনসারী: প্রভাব অবশ্যই নেতিবাচক। কতগুলো শস্য আছে যেগুলো চাষের পর বেশিদিন রাখা যায় না। বিক্রি করে দিতে হয়। তো এধরণের কৃষিজাত শস্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব অবশ্যই তো পরেছে। তবে আন্দোলন যেহেতু গণপরিবহণ সংক্রান্ত ছিল সেহেতু কিছু পণ্য মালবাহী ট্রাকে করে আসতে পেরেছে।
ইটিভি অনলাইন: পণ্যের দাম বেড়েছে...
ড. এফ এইচ আনসারী: যুক্তিসংগত। সরবরাহ না থাকলে চাহিদার অনুপাতে দাম বাড়তে। কিছু তো করার নেই। যদিও কিছু ট্রাক চলেছে। তবে যেহেতু অনেক ট্রাক এবং ট্রাক চালকের কাগজপত্র জনিত সমস্যা ছিল তাই অনেক ট্রাকই চলাচল করতে পারেনি। এতে সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে। দাম বেড়েছে পণ্যের। আমাদের নিজেদেরই সমস্যা হয়েছে। আমাদের এসিআই এগ্রিবিজনেস থেকে যেসব পণ্য যেমন- কৃষি ওষুধ, বীজ, সার এগুলোরই সরবরাহ করতে পারেনি। আর ট্রাকের ভাড়া এতো বেড়ে গেছে যে, আমাদের সরবরাহ ব্যয় অনেকখানি বেড়ে গেছে।
ইটিভি অনলাইন: আবার কিছু আঞ্চলিক জেলা পর্যায়ে পণ্যের দাম কমেছে। কৃষকদের শস্য মজুদ হয়ে যাওয়ায় ন্যায্য দাম পাননি তারা।
ড. এফ এইচ আনসারী: এটা আমরা সবাই বুঝতে পারি। এ ধরণের কাজে নেতিবাচক প্রভাব পরে। কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। আর এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য বিকল্প কোন ব্যবস্থা নেই। বীমা নেই, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নেই, সামাজিক ব্যবস্থা নেই...
ইটিভি অনলাইন: কী ব্যবস্থা থাকতে পারতো?
ড. এফ এইচ আনসারী: ব্যবস্থা যা থাকতে পারতো তা আসলে আলোচনা করে বের করতে হবে। আমার যা মনে হয় এমন একটা ব্যবস্থা থাকতে পারে যে, কৃষক যা উৎপাদন করবে তার দাম পাবে। কারণ লাভ-ক্ষতি যাই হোক সরকার বুঝবে। ইউরোপে আছে, অ্যামেরিকান দেশগুলোতে আছে। কিন্তু সেই ব্যবস্থা আমাদের দেশগুলোতে বাস্তবায়ন করা বেশ কঠিন। যেমন ধরেন, মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশের সরকার কৃষকদের বললো টমেটো উৎপাদন করতে। সরকার তারওপর একটা মূল্য ধরে সাবসিডি (ভর্তুকি) দেবে। সে মার্কেটে যে দাম পাবে তাতে বিক্রি করবে। সরকার ভর্তুকি দেবে। এটা একটা মডেল হতে পারে। আবার ধরেন ইউরোপে একটা ব্যবস্থা আছে যে, কেউ যদি এক হাজার একর জমির ওপর চাষাবাদ করে তাহলে সরকার তাকে একটা ভর্তুকি দেয়। এরপর মার্কেটে যে দামে তিনি পণ্য বিক্রি করেন দেখা যায়, তার উৎপাদন খরচ তার থেকে কম। তাই সে পণ্য থেকে লাভ পান।
কিন্তু আমি আগেও বলেছি যে, আমাদের দেশে যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আরও আছে, আমাদের বাজেটও বেশি নয়। আমাদের দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন কম তাই সেদিকেও সরকারকে নজর দিতে হয়। আমাদের দেশে আয়কর খাতে সরকারের আয় কম। সেহেতু উপরের মডেলগুলোর মতো ব্যবস্থা করা সহজ নয়। করতে গেলো আরও অনেক বছর সময় লেগে যাবে।
ইটিভি অনলাইন: সার সরবরাহের সমস্যার কথা বলছিলেন। এমনটা হলে কৃষিখাত ক্ষতির সম্মুখীন হবে না?
ড. এফ এইচ আনসারী: অবশ্যই ক্ষতি হবে। যে হার আজকে দেওয়ার কথা সেটি হয়তো কিছুদিন পর দিতে হবে। সার হয়তো দেবে কিন্তু এতে হয়তো দেরি হবে। সমস্যা তো আর সব দিন থাকবে না। কিন্তু এই দেরির ফলে গাছের সেই আকার বৃদ্ধি হবে না। ফলে ফলন কমে যেতে পারে। তবে আশার কথা এই যে, আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত যে তথ্য আছে তাতে উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো কিছু নেই।
নকল সার নিয়ে আবারও বেশ উদ্বিগ্ন অবস্থা বিরাজ করছে। নকল সারের ক্ষতিকর প্রভাব কী আর নকল সার চেনা যাবে কীভাবে?
ড. এফ এইচ আনসারী: নকল সার খুবই ক্ষতিকর। একটা লোক আশা করে সার নিলো, প্রয়োগ করলো কিন্তু ফলন পেলো না। এটা তো খারাপ। আমাদের দেশে তো নকল সার বিক্রির বিরুদ্ধে শক্ত আইন আছে। আমার মনে হয় আমাদের দেশের উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে কার্যক্রম জোরদার করে, মনিটরিং করে তাহলে ভালো হয়। সার পরীক্ষা করে যদি নকল সার বিক্রি করতে কাউকে পাওয়া যায়, তার শাস্তি নিশ্চিত করে যদি খবরের কাগজে ছাপিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে অনেকে সাবধান হবে। এছাড়া তো আর বিকল্প নেই। সার নকল করা যায়, প্যাকেট নকল করা যায়।
আমাদের কথা যদি বলেন এসিআই এগ্রিবিজনেস এই নকল সারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বাজারে গ্রাহক ও কৃষকদের আমাদের সারের ওপর একটা আস্থা আছে। আমরা গত মাসেও দেশব্যাপী আমাদের সারের ডিলারদের সঙ্গে সভা করেছি। আমরা তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি যেন তারা তৃণমূল পর্যায়ে কৃষকদের এ বিষয়ে পরামর্শ দেন। দেখেন, আমাদের দেশে মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট সারের ব্যবহার এখনও কম। আমরা কৃষকদের বোঝাচ্ছি এ বিষয়ে। কৃষকেরা এ ধরণের সার ব্যবহার করলে ফসল ও ইলের উৎপাদন বেশ ভালো হবে।
এছাড়াও আমরা যেসব প্যাকেটে সার প্যাকেটজাত করি এগুলো সিলভার প্রুফ। এটা নকল করা খুবই শক্ত, প্রায় অসম্ভব বলা যায়। প্যাকেটের গায়ে নকল নিরোধক যে স্টিকার লাগানো যায় তাও উঠিয়ে নেওয়া যায় না। স্টিকারটিও কপি বা নকল করা যায় না।
ইটিভি অনলাইন: ভিন্ন একটা বিষয়ে জানতে চাই। এসিআই এগ্রিবিজনেস চলমান জাতীয় বৃক্ষ মেলায় অংশ নিয়েছে। এখান থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
ড. এফ এইচ আনসারী: আমাদের জৈব সারের বিক্রি প্রতিবছরই দেখছি বাড়তির দিকে। অন্যান্য বছর যা বিক্রি হয়েছে এবছর তার থেকে আরও বেশি বিক্রি হয়েছে। মানুষ কিন্তু এখন ছাঁদে বা বারান্দায় বাগান করছে। ফলে শহরেও বাগানের পরিমাণ কিন্তু বেড়ে যাচ্ছে। আর মানুষ এখন এটাও বুঝে গেছে যে, মাটিকে যদি বাতাস ঢুকাতে হয়, নরম করতে হয় তাহলে অন্য কোন সার দিক বা না দিক জৈব সার অবশ্যই দিতে হবে। যার জন্য আমাদের অর্গানিক ফার্টিলাইজারের বিক্রি বেশি হচ্ছে।
এছাড়াও গাছের বেড়ে উঠতে মাইক্রো-নিউট্রিয়েন্ট লাগে। সেটা এখন অনেকেই বোঝে। রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এসব বিষয় কিন্তু এখন অনলাইনে বোঝাচ্ছেন। তাই মানুষ জৈব সারের দিকে আগ্রহী হচ্ছে।
ইটিভি অনলাইন: মেলার আরও কয়েকদিন বাকি আছে। মেলা থেকে শেষ পর্যন্ত কী আশা করছেন?
ড. এফ এইচ আনসারী: মেলা নিয়ে আমার যে আশা সে বিষয়ে আমি বলবো যে, মেলা থেকে যেসমস্ত জাত বা উদ্ভিদ বিক্রি হয় তার একটি সার্টিফিকেট সিস্টেম (সনদ ব্যবস্থা) থাকা দরকার। কারণ আমার অভিজ্ঞতা আছে যে, যখন কোন গাছের বা চারার ফুল ফল থাকে না তখন বিক্রেতারা বলে দিচ্ছে যে, এই গাছ থেকে কী হবে। অর্থাৎ কী ধরণের ফুল বা ফল আসবে। কিন্তু দেখা যায় যে, একটা সময় পর দেখা যায় যে, কিছুই হয়নি। এক বছর পরেও গিয়ে দেখা যায় যে, ফুল বা ফল হয়নি। অথবা হলেও যে জাতের বলে বিক্রেতা বিক্রি করেছিলেন ফুল বা ফল সেই জাতের না। এতে গ্রাহক বৃক্ষ রোপনে অনুৎসাহিত হয়। তাই আমার ধারণা এতে একটি নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার।
ফুলের ক্ষেত্রে হয়তো মানা যায় যে, ফুল হয়নি। কিন্তু ফলের ক্ষেত্রে তো মানা যায় না। ধরা যাক, বিক্রেতা বললো যে, একটি গাছ থেকে এমন আম ধরবে যার ওজন হবে দুই কেজি। গাছটি বিদেশি আর তাই দামও নিলো বেশি। কিন্তু দেখা গেলো যে, আম হলো না। অথবা হলেও আশানুরূপ হলো না। এতে কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ হবে। গ্রাহকেরা অনেক সময়ই এভাবে গাছ বা চারার ভালো ভালো জাতের নাম বলে বিক্রি করে। এটা উচিৎ নয়। সেখানে সার্টিফাইড প্ল্যান্ট থাকা উচিৎ।
ইটিভি অনলাইন: এই সার্টিফিকেশনের কাজ কে করবে?
ড. এফ এইচ আনসারী: এটা আসলেই একটা বড় প্রশ্ন। তবে আমি মনে করি দেশের কৃষি অধিদপ্তরই এটা করতে পারে। মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠান যে অঞ্চল থেকে এসে মেলায় এসেছেন সেই অঞ্চলের কৃষি অধিদপ্তরই গাছ বা চারার জাতের সার্টিফিকেট দিতে পারেন। যেহেতু এগুলোর দাম অন্যগুলোর তুলনায় বেশি থাকে তাই তারা সেখান থেকেই সার্টিফিকেট নিয়ে পরেই মেলায় আসুক; এমন একটা ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে সুবিধা হবে যে এই, বেশি দামে যে অর্চার্ড গাছ বিক্রি হয় সেগুলো ঠিকমত গ্রাহকের কাছে যাবে। আর অনেক ক্ষেত্রেই গাছের দাম অনেক বেশি ধার্য করা হয়। সেক্ষেত্রে একটা নিয়ন্ত্রণ থাকবে। যেগুলো আসলেই দামি সেগুলো বেশি দামেই বিক্রি হলো। কিন্তু যেগুলোর দাম কম সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
ইটিভি অনলাইন: মেলায় অনেক সময়ই দেখা যায় যে, স্টলগুলোতে কৃষি বিষয়ে অভিজ্ঞ সেলসম্যান নেই। অথবা তিনি যে ধরণের কৃষি পণ্য বিক্রি করছেন সে নিয়ে ধারণা কম। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
ড. এফ এইচ আনসারী: এটা আসলেই একটা সমস্যা। সেলসম্যানদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়া দরকার। তাদেরকে আগে থেকে পর্যাপ্ত ধারণা দিতে হবে। দেখেন, সেলসম্যান যদি নিজেই ভালো করে না জানে তাহলে কিন্তু গ্রাহক বিভ্রান্ত হবেন। হয়তো সেলসম্যানের এমনটা উদ্দেশ্য না তবুও গ্রাহক বিভ্রান্ত হবেন। কারণ সে নিজের অজান্তেই একটা ভুল তথ্য দেবেন।
এরজন্য মেলায় যাদেরকে বিপণন এবং বিক্রয় বিভাগে রাখা হচ্ছে তাদের পড়াশোনার ব্যাকগ্রাউন্ড কৃষিবিষয়ক হলে ভালো হয়। এখনকার সময়ে এই মেলা কিন্তু শুধু মেলা না। আমরা যদি এটা বলি যে, মেলা হচ্ছে, মানুষজন গাছ দেখছে। কিছু কিনে নিয়ে যাচ্ছে এতে দেশ সবুজ হচ্ছে; এমনটা পাঁচ-দশ বছর আগে বললে হতো। এখন মেলাটা এতটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় হয়, প্রধানমন্ত্রী এটাকে উদ্বোধন করেন এবং বড় একটা সময় ধরে মেলাটা হয়। সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় এই মেলার ফলাফল কী হচ্ছে তা এখন বিবেচনা করা উচিৎ।
এসএইচ/
আরও পড়ুন