ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪

নখের সৌন্দর্য, নখে মড়ন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১৩, ৯ মে ২০২০

নখের সৌন্দর্য্য অনেকটা ব্যক্তিত্বের সঙ্গে জড়িত। কারণ, ভঙ্গুর বা বিবর্ণ নখ অনেক সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেয়। তবে চিন্তার কিছু নেই। বিভিন্ন ধরনের মিশ্রণ ব্যবহার করে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

ভারতের রূপবিশেষজ্ঞ অ্যাশমিন মুনজাল ও ‘মি ক্লিনিক’য়ের ত্বকবিশেষজ্ঞ রিধি আরিয়া নখ সুন্দর রাখার বেশ কয়েকটি উপায় জানিয়েছেন।

অলিভ অয়েল ও লেবুর রস
এক চা-চামচ অলিভ অয়েলের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে নখের উপর মালিশ করে, কিছুক্ষণ রাখুন। তারপর সারারাত পাতলা ‘ম্যানিকিউর গ্লাভস’ পরে ঘুমান। সকালে উঠে পাবেন সুন্দর নখ।

লবণ
দুই চা-চামচ লবণ ও দুই ফোঁটা লেবুর রস কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট হাত ডুবিয়ে রাখুন। সপ্তাহে দুবার এই পদ্ধতি চালিয়ে যান।

ডিমের কুসুম ও দুধ
নখের জন্য আর্দ্রতা ধরে রাখা প্রয়োজন। এজন্য ডিমের কুসুম ও দুধের মিশ্রণ নখে সারারাত মেখে রাখুন।

ভ্যাসলিন
পেট্রোলিয়াম জেলি নখের জন্য উপকারী। অন্য কিছু করতে না পারলেও সব মৌসুমে দিনে একবার নখে ভ্যাসলিন মাখুন।

ভেষজ পদ্ধতি
ক্যামোমাইল ও পেপারমিন্ট চা গরম পানিতে ভিজিয়ে নখে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। তারপর মুছে কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েলের সঙ্গে দুই চা-চামচ আটা ভালোভাবে মিশিয়ে নখের উপর ঘণ্টাখানেক রেখে দিন।

রিমুভার দূরে থাক
‘নেইল পলিশ রিমুভার’য়ে থাকে রাসায়নিক পদার্থ, যা শুধু ত্বকের নয় নখেরও ক্ষতি করে। তাই নেইলপলিশ তুলতে কমদামি সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারেন। অথবা ব্যবহার করুন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি ‘নেইল পলিশ রিমুভার’।

নারিকেল তেল
এই তেল দিয়ে নখ মালিশ করুন। কয়েক মিনিটেই পেয়ে যাবেন মসৃণ ও শুভ্র নখ।

সহজেই নখকে সাজিয়ে তুলবেন যে উপায়ে

নখের ধরনের উপর নির্ভর করে হাতের সৌন্দর্য৷ নেলপালিশ পছন্দ করেন না এমন নারীর সংখ্যা খুবই কম৷ কিন্তু রোজের অফিস, হাজারো কাজ সামলে নিয়ম মতো পার্লারে গিয়ে নখ সুন্দর করে তোলার মতো সময় কতজনের হাতেই বা রয়েছে৷ কিন্তু সময় নেই বলে কি নখের দিকে নজর না দিলে চলবে? তার চেয়ে বরং বাড়িতে বসেই নখের যত্ন নিন৷ সহজ কিছু উপায়েই নখকে সাজিয়ে তুলুন৷ হয়ে উঠুন আকর্ষণীয়৷

নখে শুধু নেলপালিশ লাগালেই তা সুন্দর হয়ে যান না৷ তার আগে বেশ কিছু পদ্ধতি আপনাকে অবলম্বন করতেই হবে৷ প্রথমে একটি তুলাতে নেলপলিশ রিমুভার লাগান৷ প্রতিটি নখ ভাল করে ওই তুলা দিয়ে মুছে নিন৷ নেলপালিশ লাগানো থাকলে তা তুলে নিন৷ পুরনো নেলপালিশের জন্য অনেক সময়ই নখে হলুদ দাগ তৈরি হয়৷ সেই দাগ তুলতে নখে লাগান টুথপেস্ট৷ মিনিটখানেক রেখে ভাল করে ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন৷

এবার নখে নেলপালিশ লাগান৷ প্রথমবার নেলপালিশ লাগিয়ে ভাল করে শুকিয়ে নিন৷ মনে রাখবেন, ভিত ঠিক মতো তৈরি না হলে বাড়ি যেমন ভেঙে পড়ে, ঠিক তেমনই নেলপালিশের প্রথম কোট ঠিকঠাক না হলে নখের সৌন্দর্যও মাটি হয়ে যেতে পারে৷ নখ ছাড়া নখের আশেপাশেও নিশ্চয়ই নেলপালিশ লেগেছে? এবার পালা সেগুলো পরিষ্কারের৷ একটি তুলোতে করে রিমুভার নিন৷ নখের আশপাশের অংশ পরিষ্কার করুন৷ এরপর আরও একবার নেলপালিশ পরুন৷ ওই নেলপালিশ শুকাতে দিন৷ শুকিয়ে গেলে একটি তুলাতে করে পেট্রোলিয়াম জেলি নিন৷ ওই পেট্রোলিয়াম জেলি নখ ও নখের আশেপাশে লাগান৷ 

ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউরই এখন ফ্যাশনে ইন৷ খুব সহজ উপায়ে বাড়িতেও করে ফেলতে পারেন ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিউর৷ নখের সামনের অংশ কিছুটা ছেড়ে একটি কার্ড রাখুন৷ ওই ফাঁকা অংশে সাদা বা অন্য কোনও হালকা রঙের নেলপালিশ লাগান৷ তাহলেই দেখবেন বাড়িতে বসেই পেয়ে যাবেন ফ্রেঞ্চ ম্যানিকিওর৷

শুধু নেলপালিশ পরলেই তো হবে না৷ নেলপালিশ কীভাবে নখে অনেকদিন একইরকম রাখবেন? তার জন্য রয়েছে উপায়৷ একটি পাত্রে বেশ কয়েকটি বরফ কুঁচি নিন৷ এরপর বরফগলা পানিতে কিছুক্ষণ নখগুলো ডুবিয়ে রাখুন৷ তারপর হাত ভাল করে মুছে নিন৷ আবারও লাগিয়ে পেট্রোলিয়াম জেলি৷ ব্যস! তাতেই কেল্লাফতে৷

নখ কামড়ালে ৫ ক্ষতি

অনেকে অভ্যাসবশত আবার অনেকে মানসিক চাপে নখ কামড়ান। কিন্তু আপনি কী জানেন আপনার এই অভ্যাসটির কারণে আপনার গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে? চলুন জেনে নিই সেই স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো কী কী।

১। আঙ্গুলের প্রদাহ
অনেকে সারাক্ষণই নখ কামড়ান। নখ কামড়ানোর জন্য সব সময় মুখে হাত ঢুকিয়ে রাখেন। এতে করে মুখের লালায় উপস্থিত রাসায়নিক আঙ্গুলের ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। এর ফলে আঙ্গুলের প্রদাহ হতে পারে এবং নখের  ক্ষয় হতে পারে।

২। নখের বিকৃতি
নখের একটি স্তর হচ্ছে ম্যাট্রিক্স। নখ কামড়ালে নখের ম্যাট্রিক্স ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে নখের আকারে বিকৃতি দেখা দিতে পারে বা নখকুনির সমস্যা হতে পারে।

৩। নখের সংক্রমণ
নখ কামড়ালে ব্যাকটেরিয়া বা পরজীবী মুখ থেকে নখের মূলে প্রবেশ করে। এর ফলে নখে সংক্রমণ হতে পারে। প্যারোনাইসিয়া হচ্ছে সবচেয়ে সাধারণ সংক্রমণ যার ফলে নখ ফুলে যাওয়া, ব্যথা করা ও লাল  হয়ে যাওয়া এবং পুঁজ জমা হওয়ার মতো সমস্যা হয়।

৪। পাকস্থলীর ভাইরাস
সকল ধরনের ময়লার সংস্পর্শে আসে হাত। আর এসব ময়লা জমা হয় নখের নীচে। যখন আপনি এই জীবাণুযুক্ত আঙ্গুল মুখে দেন তখন আপনি নিজেকে ঠান্ডা থেকে শুরু করে পাকস্থলীর ইনফেকশনের মতো বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় ফেলেন।

৫। দাঁত ভাঙ্গা এবং জিঞ্জিভাইটিস

দীর্ঘমেয়াদী নখ কামড়ানোর অভ্যাস দাঁতের মূলের সকেটের ক্ষতি করতে পারে। এর ফলে দাঁত ভাঙ্গার মতো সমস্যা হতে পারে। আমেরিকান জার্নাল অফ অর্থোডন্টিকস এন্ড ডেন্টোফেসিয়াল অর্থোপেডিক্স এ প্রকাশিত গবেষণা মতে, দীর্ঘমেয়াদী নখ কামড়ানোর অভ্যাসের ফলে মাড়িতে জিঞ্জিভিটিস হয়।

দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাসে হতে পারে মৃত্যু: গবেষণা

দাঁত দিয়ে নখ কাটার বদঅভ্যাসটি আমাদের অনেকেরই আছে। এটি মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। এটি ত্বকের জন্য মারাত্মক সেপসিস রোগের কারণ। যার কারণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে অন্তত ৬০ লাখ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। গবেষকরা এমনটিই দাবি করেছেন।

ইংল্যান্ডের সাউথপোর্ট শহরের বাসিন্দা লুক হ্যানোম্যানেরও অভ্যাসটি (দাঁত দিয়ে নখ কাটা) ছিল। আর এই অভ্যাসই তাঁকে মারাত্মক বিপদে ফেলেছিল! কপাল জোরে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন লুক।

লুক জানান, দাঁত দিয়ে নখ কাটতে গিয়ে ভুলবশত ত্বকের কিছুটা অংশ কেটে ফেলেন তিনি। বিষয়টিকে তেমন আমল দেননি তিনি। কিন্তু ঘটনার পরের দিন থেকেই একটা জ্বর জ্বর ভাব, কাঁপুনি, দুর্বলতা অনুভব করেন তিনি।

কিন্তু এই বিষয়গুলিকেও তেমন গুরুত্ব না দিয়ে নিয়মিত অফিস যাতায়াত করতে থাকেন তিনি। কিন্তু সমস্যা হল ঘটনার দিন তিনেক পর। রাতে নির্দিষ্ট সময় ঘুমাতে গেলেও পরের দিন ঘুম ভাঙল দুপুর ২টা নাগাদ। এত দীর্ঘ সময় এর আগে কখনোই ঘুমাননি লুক।

চিকিত্সকের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই চোখ কপালে উঠল তাঁর। চিকিত্সকরা পরীক্ষা করে জানান, আর একদিনও দেরি করলে তাঁকে বাঁচানোই যেত না। এর পর হাসপাতালে দিন চারেক চিকিত্সার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন লুক।

চিকিত্সকরা জানিয়েছেন, দাঁত দিয়ে নখ কাটার সময় ত্বকের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে সেপসিস হয়েগিয়েছিল তাঁর। চিকিত্সকদের মতে, যে কোনো ছোটখাট সংক্রমণ (ইনফেকশন) থেকেই সেপসিস হতে পারে। সাধারণত আমাদের শরীরে কোনো ইনফেকশন হলে তা এক জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকে এবং সারা শরীরে তা ছড়িয়ে পড়া থেকে তাকে আটকায় আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কিন্তু সংক্রমণের মাত্রা তীব্র হলে তা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে সারা শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।

এটিই হল সেপসিস। এটি মোটেই উপেক্ষা করার মতো বিষয় নয়। সেপসিস এবং সেপটিক শকের কারণে প্রতি বছর সারা বিশ্বে অন্তত ৬০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়।

সেপসিসের মূল উপসর্গ: প্রচণ্ড দুর্বল ভাব,কথা জড়িয়ে আসা,শ্বাস কষ্ট হওয়া,প্রবল কাঁপুনি বা পেশিতে ব্যথা,সারাদিনে একবারও মুত্রত্যাগ না হওয়া,ত্বক বিবর্ণ হয়ে যাওয়া

সূত্র : বিলাটোরিডটকম,  সংবাদ প্রতিদিন, দ্য হেলথ সাইট
এস ইউ এ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি