ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪

নদী ভাঙ্গনে বদলে যাচ্ছে মানচিত্র (ভিডিও)

প্রতিনিধিদের খবর

প্রকাশিত : ১৪:৪৩, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ১৪:৪৫, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

তীব্র নদী ভাঙ্গনে বসতবাড়ি ও কৃষিজমি হারাচ্ছেন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কয়েক ইউনিয়নের মানুষ। দক্ষিণের জেলা বরগুনার বিভিন্ন এলাকার বেশকিছু গ্রামের আয়তনও বদলে যাচ্ছে ভাঙ্গনের কবলে পড়ে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ভাঙ্গন ঠেকাতে প্রয়োজনীয় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ফলে ভাঙ্গনও থামছে না। 

করতোয়া নদীর ভাঙ্গনে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মানচিত্র বদলে যাচ্ছে।  এবছর বর্ষার শুরু থেকেই উপজেলার তালুককানুপুর ও নাকাই ইউনিয়নের বেশকটি গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়ে। ভুক্তভোগীরা জানান, ভাঙ্গন রোধে স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করা হলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড পদক্ষেপ নেয়নি।   

ভাঙ্গনে দুই ইউনিয়নের কয়েক গ্রামের এক হাজার ঘরবাড়ি ও শতাধিক একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো অন্যের জায়গায় কোনো মতে বসবাস করছে। আবার কেউ কেউ আশ্রয় না পেয়ে অন্যত্র চলে গেছে।

নদী ভাঙ্গনের শিকার মানুষরা জানান, জায়গা-জমি যা ছিল তা ভেঙে নদীতে চলে গেছে। আমরা এখন ফকীর অবসায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ভাঙ্গন রোধে একটা সমীক্ষা প্রতিবেদন করা হচ্ছে। সেটি সম্পন্ন হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মো: হাফিজুল হক বলেন, “সমীক্ষা শেষ হয়ে গেলে সেই প্রতিবেদনের আলোকে নদী ভাঙন রোধে প্রকল্প প্রণয়ন করা হবে।”

এদিকে, দক্ষিণের জেলা বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের তেতুলবাড়ীয়া গ্রামের রত্তন হাওলাদারা এখন আর বাঁধ ভাঙ্গার আতঙ্কে ভোগেন না। ভিটেমাটি সবই বিলীন পায়রা নদীতে। থাকতে হচ্ছে সরকারি জমিতে।  

চার সন্তানের মা সুমি বেগম। স্বামী মৎজীবী। তিনি জানালেন, নদী গর্ভে চলে গেছে তাদের সবটুকু সম্পত্তি। এখন বেড়িবাঁধের পাশে অসহায় জীবনযাপন করছেন তারা। শাহআলম মিয়া, ছালমা বেগম, নুরুল ইসলামের অবস্থাও একই কথা। 

নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব মোঃ রত্তন হাওলাদার বলেন, “এখন অন্যের জায়গায় থাকছি।” সুমি বেগম জানান, ৪টি সন্তান নিয়ে এই রাস্তায় খুব কষ্টে আছি।

নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষরা জানান, ছয় মাস আগে বাঁধ দেয়া হয়। সেই বাঁধও এখন ভাঙছে।

বরাবরের মতই ঝূঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামতের আশ্বাস দিয়েছে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিব বলেন, “বাঁধ সংরক্ষণ এবং নদী সংক্রান্ত প্রকল্প প্রস্তাবনা দাখিল করা হয়েছে।”

জেলা প্রশাসক জানান, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তরা আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, “সরকারি সামাজিক বেষ্টনির আওতায় তাদেরকে কিভাবে আনা যায় সে বিষয়ে আমরা চেষ্টা করবো।”

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বরগুনা জেলায় ২২টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বেরিবাঁধ রয়েছে। এরমধ্যে নিশানবাড়ীয়া, তেতুলবাড়ীয়া, জয়ালভাঙ্গা এলাকা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। এসব এলাকার বহু পরিবার নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হয়ে গেছে।  

এএইচ


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি