ঢাকা, সোমবার   ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ

মুহাম্মদ নূরন নবী

প্রকাশিত : ১২:০৭, ১৫ মে ২০২৪

তাপমাত্রার তীব্রতায় বৈশ্বিক উষ্ণায়নের সরাসরি প্রভাব দেখছে বাংলাদেশ। এমন বাস্তবতায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার থেকে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে ফিরতে জনমত বাড়ছে। তবে প্রযুক্তি ও উপকরণের উচ্চমূল্যে ব্যাহত হচ্ছে গ্রীন এনার্জি উৎপাদন। আর এসব কারণে নীতিমালা তৈরি করলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে পিছিয়ে বাংলাদেশ।

কার্বন গ্যাসের শক্তিশালী স্তর সূর্যের তাপ ফিরতে দিচ্ছে না বায়ুমণ্ডলে। আবার এ ধরনের গ্যাস উৎপাদনের উৎসও কমছে না। দেশে জলবিদ্যুৎ, সৌর বিদ্যুতের ব্যবহার পুরনো, পারমাণবিক বিদ্যুতেও এগিয়েছে দেশ। কাপ্তাইয়ের পর জলবিদ্যুৎ প্রকল্প আর আসেনি। সৌর বিদ্যুতেও অতটা সফলতা দেখা যায়নি। পুরনো প্রযুক্তি, দাম বেশি ও সোলার প্যানেলে জায়গাও বেশি প্রয়োজন হয়।

দেরিতে হলেও দেশের স্থলভাগে এখন কমপক্ষে দশটি বায়ু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ চলমান। কিন্তু সমুদ্র বুকে সম্ভাবনা সত্ত্বেও তেমন চেষ্টা নেই। নদী প্রধান দেশ হলেও তীরে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নেই। বলা হচ্ছে, কম চাপে বাণিজ্যিক উৎপাদন লাভজনক হবে না নদীর তীরে। সে কারণে প্রযুক্তিও সহজলভ্য নয়।

কক্সবাজার ৬০ মেগাওয়াট উইন্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট ম্যানেজার প্রকৌশলী মুকিত আলম খান বলেন, “আমাদের এই কোস্টাল এরিয়া ছাড়া যদি আমরা বাংলাদেশের ভেতরের দিকে যাই সেই এনার্জি প্রডাক্টশনটা অনেক ক্ষেত্রেই ড্রপট করবে। সেটা আসলে বাণিজ্যিকভাবে সফল হবেনা।”

এসব কারণে দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দাম তুলনামূলক বেশি। সবুজ জ্বালানির উৎপাদন প্রযুক্তি ও অবকাঠামো নির্মাণে এখন পর্যন্ত চীন, নরওয়ে, ডেনমার্কের মত দেশের ওপর নির্ভরশীল। সংশ্লিষ্টদের মত, ব্যবহার বাড়লে প্রযুক্তির দামও কমে আসবে, কমবে উৎপাদনের খরচও। 

প্রকৌশলী মুকিত আলম খান বলেন, “এই মুহূর্তে টেকনোলজি কিনে আনা ছাড়া কোনো সেকেন্ড সোর্স নেই। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে কাঁচামালের দরকার হয়, যেগুলোর যোগান বাংলাদেশে নেই।”

কথা হচ্ছিল চীনের এই উদ্যোক্তার সাথে।  নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিনিয়োগকারীরা মুখিয়ে আছে শুধু দরকার বাধাগুলো সরিয়ে ফেলা। 

শুধু প্রযুক্তি ও প্রযুক্তিপণ্য কিনতে ভিনদেশের দিকে না তাকিয়ে এদেশের উপযোগী করে উপকরণ তৈরিতে আরও গবেষণা বাড়ানো প্রয়োজন বলেই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। 

কয়লা, তেল, এলএনজির মতো জীবাস্ম জ্বালানিগুলোই মূলত বিদ্যুৎ উৎপাদনে সবচেয়ে বড় উৎস। এই উৎসগুলো গ্রীন হাউস গ্যাস নিঃসরনের জন্য দায়ী। যার কারণে আমরা অব্যাহতভাবে তাপদাহ-দাবদাহের মতো ঘটনা দেখি। কিন্তু বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ উৎপাদনও থামিয়ে রাখা যাবেনা সেই বাস্তবতায় সারাবিশ্বের দেশগুলো  নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যুগছে। তারা স্বৈরবিদ্যুৎ এবং বায়ুচালিত বিদ্যুতের দিকে যাচ্ছে তখন আমরা কেন পিছিয়ে থাকবো। কক্সবাজারের এই বায়ুকল বিদ্যুৎ উৎপাদন করে সেই আশার আলোই দেখাচ্ছে।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি