নাগরিকত্ব ত্যাগীদের এনআইডি বাতিলের সিদ্ধান্ত
প্রকাশিত : ২০:২৫, ২২ মার্চ ২০২৫

যে সকল ব্যক্তি বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করবেন তাদেরকে ভোটার তালিকা থেকে তাৎক্ষণিক বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি জাতীয় পরিচয়পত্রও (এনআইডি) বাতিল করা হবে। এমনকি বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করার শর্তে অন্য কোনো দেশের নাগরিক হলে সেই ব্যক্তির ভোটাধিকারও থাকবে না বলে জানিয়েছে ইসি।
এক্ষেত্রে তথ্যের কোনো ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশনস) ও নির্বাচন সহায়তা শাখার উপ-সচিবকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
নির্দেশনায় ইসি সচিব উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগকারী ব্যক্তিদের ভোটার তালিকা ও এনআইডি থেকে তাৎক্ষণিক বাদ দিতে হবে। এক্ষেত্রে তথ্যের কোনো ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে পদক্ষেপ নিতে হবে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রায় দেড় কোটির মতো প্রবাসী বসবাস করেন। এদের অনেকে সংশ্লিষ্ট রেসিডেন্সি নেওয়ার জন্য বা সিটিজেনশিপ নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করে থাকেন। তাদের নামও ভোটার তালিকা থেকে কর্তন হতে পারে, একই সঙ্গে বাতিল হতে পারে এনআইডি। এছাড়া এমন ব্যক্তিদের ভোটার না করার সিদ্ধান্ত এর আগে নিয়েছে সংস্থাটি।
প্রবাসীদের ভোটার করার ক্ষেত্রে এইসব বিষয় খেয়াল করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের সম্প্রতি বার্তা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সংস্থাটির এনআইডি অনুবিভাগের সহকারী পরিচালক সরওয়ার হোসেন এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সকল মাঠ কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।
এতে বলা হয়েছে, দ্য বাংলাদেশ সিটিজেনশিপ রুলস-১৯৭৮ এর ৪ নম্বর রুল অনুযায়ী, বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব অর্জনকারী বিদেশি নাগরিকের ক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন ও ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য সুরক্ষা সেবা বিভাগ হতে ইস্যু করা নাগরিক সনদ, বিবাহের প্রমাণপত্র ও স্বামী/স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র দাখিল করতে হবে।
এছাড়া বাংলাদেশের কোনো নাগরিক যদি অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করার জন্য বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেন, বিষয়টি উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করে ভোটার তালিকা হতে তার নাম কর্তন করা হবে।
জানা গেছে, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইতালি, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত ও মালয়েশিয়া এই সাতটি দেশে দূতাবাসেরর মাধ্যমে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনা করছে ইসি। এক্ষেত্রে অনলাইনে আবেদন করে দূতাবাসে এসে ছবি তুলে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হচ্ছে। এর আগে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীর আবেদন তার নিজ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার দ্বারা তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে নিচ্ছে ইসি।
এই সাত দেশ থেকে মোট আবেদন পড়েছে ৪২ হাজার ২৬৯টি। এদের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছে তিন হাজার ৪০১টি আবেদন। আবেদনকারীর উপজেলা নির্বাচন অফিসে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন আছে ২০ হাজার ১৮৪টি আবেদন। তদন্ত শেষে আবেদন অনুমোদন হয়েছে ১৭ হাজার ৬০৭ জনের। অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে ৪৫৭ জনের আবেদন। আর সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আঙুলের ছাপ ও ছবি নেওয়া হয়েছে ২২ হাজার ১২৮ জনের।
সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে, ১৮ হাজার ৫৮৯টি। আর সবচেয়ে কম আবেদন পড়েছে মালয়েশিয়ায় ৭৮৪ জন। গত বছরের মে থেকে এই আবেদনগুলো এসেছে।
এসএস//
আরও পড়ুন