নানা রোগ থেকে বাঁচতে ডায়েটে রাখুন ১০ খাবার
প্রকাশিত : ১৫:৪২, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | আপডেট: ১০:২৭, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
পরিবেশ দূষণ, ভেজাল খাবার এবং অনিয়ন্ত্রিত জীবনের মাঝে শরীর শক্তপোক্ত থাকবে, না ভাঙন ধরবে, তা অনেকাংশেই নির্ভর করে কী ধরনের খাবার আপনার ডায়েটে জায়গা করে নিচ্ছে তার উপরে। কারণ একমাত্র খাবারেই মজুত রয়েছে সেই জ্বালানি, যা শরীরকে সচল রাখতে সাহায্য করে থাকে। তাই বাঁচার পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি শরীরকে যদি নানা রোগ থেকে বাঁচিয়ে রাখতে চান, তাহলে এই প্রবন্ধে আলোচিত খাবারগুলো খেতে ভুলবেন না যেন! আর যদি এমনটা করতে পারেন, তাহলে দেখবেন কোনও রোগই আপনার ধারে কাছে ঘেঁষার সাহস পাবে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে।
তাহলে এখন প্রশ্ন হল কী কী খাবার রয়েছে সেই লিস্টে, যা ছোট-বড় নানা রোগের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করতে পারে?
মাশরুম
নানা রোগের মার থেকে বাঁচাতে যে যে রোগগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে, তার অন্যতম হল মাশরুম। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটির ভিতরে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি উপাদান শ্বেত রক্ত কণিকার কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। ফলে জটিল হোক কী সাধারণ, কোনও রোগই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ভেঙে দেহের ভিতরে প্রবেশ করতে পারে না। ফলে রোগের মারে শরীর ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা যায় কমে।
জাম
ছোট্ট এই ফলটি বাস্তবিকই নানা রোগ থেকে শরীরকে বাঁচাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। আসলে জামের শরীরে উপস্থিত ভিটামিন সি, ই এবং বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট নানাভাবে এই কাজে সাহায্য করে থাকে। তাই এমন বিষাক্ত পরিবেশের মাঝে শরীরকে যদি বাঁচাতে হয়, তাহলে প্রতিদিন এক বাটি করে জাম খেতে ভুলবেন না যেন!
কমলা লেবু এবং পাতি লেবু
পাতি লেবু, মৌসাম্বি লেবু এবং কমলা লেবুকে চিকিৎসা পরিভাষায় সাইট্রাস ফল বলা হয়ে থাকে। এই ফলগুলোর শরীরে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, যা শ্বেত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। ফলে রোগ প্রতিরোধ করার জন্য় দেহের ভিতরে যে সৌনিকেরা প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছে, তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আর এমনটা হওয়া মাত্র দৈহিক ক্ষমতা এতটা বেড়ে যায় যে কোনও রোগই কামড় বসাতে পারে না।
রাঙা আলু
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, এই সবজিটিতে উপস্থিত বিটা-ক্যারোটিন এবং নানাবিধ উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়ে উঠতে সময় লাগে না। আর এমনটা যখন হয়, তখন যে কোনও রোগই মারণ ছোবল মারতে পারে না, তা কি আর বলার অপেক্ষা রাখে!
ব্রকলি
এই সবজিটিতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন এ, সি এবং ই। সেই সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু উপকারি খনিজও। এই পুষ্টিকর উপদানগুলো শরীরকে ভিতর থেকে এতটাই শক্তিশালি করে দেয় যে অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা একেবারে শূন্যে এসে দাঁড়ায়। প্রসঙ্গত, ব্রকলি যে পরিবারের সদস্য, ফুলকপিও সেই একই পরিবারের একজন। তাই ব্রকলি খেতে ইচ্ছা না হলে কবজি ডুবিয়ে ফুলকপি দিয়ে বানানো নানা পদও খেতে পারেন। এমনটা করলেও সমান উপকার পাওয়া যায়।
দই
লাঞ্চের পর নিয়ম করে এক কাপ টক দই খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন কয়েক দিনের মধ্যেই ডাক্তারের নাম ভুলতে বসেছেন। আসলে দুগ্ধজাত এই খাবারটি শরীরে প্রবেশ করার পর শরীরে ভিটামিন এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দূর করে। ফলে একদিকে যেমন ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তেমনি অন্যদিকে হাড়ও খুব শক্তপোক্ত হয়ে ওঠে। ফলে বুড়ো বয়সে গিয়ে নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়।
রসুন
ইমিউন স্টেস্টেটকে শক্তিশালী করে তোলার পাশাপাশি হার্টকে সুস্থ রাখতে রসুনের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এতে উপস্থিত নানাবিধ উপকারি উপাদান ব্লাড প্রেসার এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। অন্যদিকে রসুনের ভিতরে থাকা সালফার, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে জোরদার করে তুলে ভাইরাল ফিবার থেকে সংক্রমণ, কোনও কিছুকেই ধারে কাছে আসতে দেয় না।
পালং শাক
প্রতিটি বাঙালিই মায়ের পেট থেকেই যে যে খাবারগুলোর প্রতি দুর্বলতা নিয়ে জন্মায়, তার মধ্যে অন্যতম হল পালং শাক। তবে এই ভাললাগাটা নানাভাবে আমাদের সুস্থ থাকতে সাহায্য করে থাকে। আসলে এই শাকটিতে উপস্থিত ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বিটা-ক্যারোটিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটনার পাশাপাশি ক্যান্সারের মতো রোগকে দূরে রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
হলুদ
অর্থ্রাইটিস রোগকে আটকানোর পাশাপাশি সার্বিকভাবে শরীরকে চাঙ্গা রাখতে হলুদের কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এতে উপস্থিত অ্যান্টি-ইফ্লেমেটরি প্রপাটিজ এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, হলুদে কার্কিউমিন নামেও একটি উপাদান থাকে, যা শরীরকে রোগমুক্ত রাখতে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে।
আদা
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, আদায় উপস্থিত জিঞ্জেরল নামে একটি উপাদান শরীরের ভিতরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ কমাতে দারুন উপকারে লাগে। সেই সঙ্গে যে কোনও ধরনের যন্ত্রণা উপশমেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
সূত্র: বোল্ডস্কাই
একে//