নারায়ণগঞ্জের অলিগলিতে বেপরোয়া কিশোরগ্যাং (ভিডিও)
প্রকাশিত : ১১:২৬, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
নারায়ণগঞ্জের অলিগলিতে বেপরোয়া কিশোরগ্যাং। উঠতি বয়সের কিশোররা জড়িয়ে পড়েছে নানা অপরাধমূলক কাজে। গত এক বছরে প্রায় পঞ্চাশজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গ্রেফতার গ্রেপ্তার হয়েছে ২৫০ কিশোর।
একুশে টেলিভিশনের কাছে বিশেষ সাক্ষাৎকারে নাম-পরিচয় গোপন করে কথা বলেন কিশোরগ্যাংয়ের এই সদস্য। জানান বড় ভাইদের নির্দেশে তারা মানুষ খুন, অপহরণ, হাত কাটা, ভাঙচুর-লুটপাটসহ সব ধরনের অপকর্ম করে থাকেন। এর জন্য পারিশ্রমিক পান বিভিন্ন রেটে।
এই সদস্য জানায় অন্ধকার জগত থেকে বের হতে চাইলেও পারে না তারা। সবাই বড়ভাইদের কাছে আটকা।
এক দলে সাধারণত ১৫ থেকে ২০ জন থাকে। ধারালো অস্ত্র হাতে দল বেঁধে চলা, প্রকাশ্যে কুপিয়ে জখম, মেয়েদের উত্যক্ত করাসহ ভাংচুর করে থাকে। নেপথ্যে ছত্রছায়ার বড় ভাইরা সব সময় থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। পুলিশ প্রশাসন বা নেতা সবার সঙ্গেই খাতির ঐ বড় ভাইদের।
জানা যায়, গত চার বছরে অর্ধশতাধিক সংঘর্ষের ঘটনায় নয় জনকে হত্যা করা হয়েছে।
২০২২ সালের ১৭ মে ফতুল্লার ইসদাইর এলাকায় সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে খুন হন দশম শ্রেণির ছাত্র ধ্রুব দাস। একই বছর ৬ এপ্রিল শামীম নামের এক যুবককে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২৫ এপ্রিল গার্মেন্টস শ্রমিককে ছুরিকাঘাত করে হত্যা
২০২২ সালের ১৮ জুলাই ফতুল্লায় ইমন নামে এক যুবককে গলা কেটে হত্যা। একই বছর ২৯ জুন চাষাঢ়ায় মাদকের স্পট নিয়ে বিরোধে নিহত রাজমিস্ত্রী রুবেল। ১০ আগস্ট বন্দরের ইস্পাহানী ঘাট এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা যায় মিহাদ ও জিসান। ২০১৯ সালের ২৭ জুলাই ফতুল্লার মোটরসাইকেলের লাইটের আলো চোখে পড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে শাকিলকে কুপিয়ে হত্যা
২০১৯ সালের ৩১ জুলাই ফয়সালকে পিটিয়ে হত্যা করে পাঁচ কিশোর।
সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, পারিবারিক অসচেতনতা, প্রভাবশালীদের আশ্রয় আর দরিদ্রতার কারণেই বেড়ে চলেছে কিশোরগ্যাংয়ের আধিপত্য। ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম সমাধানে পুলিশের বিশেষ ফোর্স দিয়ে এলাকায় টহল দেয়ার দাবি জানান।
রফিউর রাব্বি বলেন, “শহরটা যদি আতঙ্কের শহর হিসেবে রাখা যায় তাদের অবৈধ ব্যবসাগুলো সহজেই নির্বিঘ্নে করতে পারে।”
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খোরশেদ বলেন, “প্রশাসনের সহযোগিতা চাই, একমাত্র প্রশাসনভাবেই এটা প্রতিরোধ করা সম্ভব।”
পুলিশ সুপার জানান কিশোর নিয়ন্ত্রণে এলাকাভিত্তিকভাবে নাম সংগ্রহ করা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফার রাসেল বলেন, “বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যেকটা এলাকায় এই কালচার বন্ধের জন্য নামগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে।”
তিনি জানান কিশোর অপরাধের সাথে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।
এএইচ
আরও পড়ুন