ঢাকা, মঙ্গলবার   ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

নারী আইনজীবীকে ধর্ষণের চেষ্টা, মামলায় এসআইসহ আসামি ৫

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৩২, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

রাজবাড়ীতে এক নারী আইনজীবীকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়ে ধর্ষণ চেষ্টা, শ্লীলতাহানী ও ৩০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর গ্রহণের অভিযোগে পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই)সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। 

সোমবার রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই আইনজীবী। 

এ ঘটনায় রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শেখ মফিজুর রহমান মামলাটি রাজবাড়ী সদর থানার ওসিকে এফআইআর করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। 

মামলার আসামিরা হলেন- রাজশাহী মহানগরের চন্দ্রিমা থানার ছোট বনগ্রামের মৃত ইমাম শেখের ছেলে শেখ আব্দুল্লাহ, রাজশাহীর চরঘাট থানার চকবেলঘরিয়া গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে ও রাজশাহী আরএমপি বোয়ালিয়া থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মোঃ মাহফুজুর রহমান, লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী থানার আদিতমারী গ্রামের মোঃ ওয়াহিদ উল আলমের ছেলে ও বর্তমান রাজশাহী শাহমখদুম থানার শাহমখদুম এলাকার বাসিন্দা মোঃ জাহিদ উল আলম, রাজশাহীর রাজপাড়া থানার চন্ডিপুর গ্রামের মোঃ শাহিন ইসলাম মোল্যার ছেলে রোমান ইসলাম ও মোঃ ছালাম।  

মামলার অভিযোগে জানা যায়, আদালত থেকে বের হয়ে প্রধান সড়কে গেলে ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটার দিকে রাজবাড়ী জেলা পরিষদ ডাক বাংলোর সামনে ট্রাফিক আইল্যান্ডের নিকট তাকে আটক করে পুলিশ। গাড়ীতে একজন নারী কনষ্টেবল থাকলেও পূর্বপরিকল্পিতভাবে নারী আইনজীবীকে নিয়ে যাওয়ার সময় রাতে তার উপরে শারীরিক মানসিক নির্যাতন করার জন্য মহিলা কনস্টেবলকে বমিভাব বন্ধের কথা বলে ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ায়। গাড়ীর ভেতরে আলো বন্ধ করে গাড়ীর ভিতরে ভৌতিক পরিবেশ সৃষ্টি করে এসআই মোঃ মাহফুজুর রহমান হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। 

ওই সময়ে মোঃ জাহিদ উল আলম ও মোঃ ছালাম নারী আইনজীবীর গায়ে হাত তোলে এবং চর ও থাপ্পড় মারতে থাকে। এ সময় চলন্ত গাড়ীতে আব্দুল্লাহ ও এসআই মোঃ মাহফুজুর রহমান শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। পড়নের কাপড় চোপড় আংশিক ছিড়ে ফেলে। মোঃ ছালাম ও রোমান ইসলাম শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিতে থাকে। এক পর্যায়ে  জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা।

দস্তাদস্তি ও ভুক্তভোগীর চিৎকারে মহিলা কনস্টেবল জেগে উঠে। ফলে তারা চুপ হয়ে যায়।

গত ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল দিবাগত রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার সময়ে (২ এপ্রিল) ওই নারী আইনজীবীকে নিয়ে রাজশাহী জেলার বোয়ালিয়া থানায় পৌঁছায়। যাবার পর থানায় একটি কক্ষে আটক রাখা হয়। পরের দিন ২০২৪ সালের ২ এপ্রিল রাজশাহী চীফ মেট্রেপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মহানগর আদালতে চালান দেয়। 

পুলিশ রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এসআই মাহফুজুর রহমান ২০২৪ সালের ১৬ এপ্রিল থেকে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত রিমান্ডে এনে নারী আইনজীবীকে শারীরিক, মানসিক নির্যাতন শুরু করে। রিমান্ডের সময় অন্য কোন সাধারণ লোকজন রিমান্ড কক্ষে উপস্থিত না থাকার আইনুনানুগ সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও এসআই মাহফুজুর রহমান অন্যায়ভাবে রিমান্ডের কক্ষে শেখ আব্দুল্লাহ, জাহিদ উল আলম, রোমান ইসলাম ও মোঃ ছালামকে রাখে। রিমান্ডের সময়ে তারা সার্বক্ষনিকভাবে দাঁড় করে রাখে। তারা ভিডিওচিত্র ও স্থিরচিত্র ধারণ করে। যা আদালতে যাওয়ার আগেই প্রকাশ পায়।

রিমান্ডে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তার নিকট ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে তারা। না দিলে জীবনে শেষ করে ফেলবে বলে হুমকি দেয় বলে অভিযোগে জানা যায়।

এএইচ


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি