নিউগিনীর মানুষেরা যে কারণে হাড় দিয়ে ছুড়ি বানাত
প্রকাশিত : ১৩:২১, ৬ মে ২০১৮ | আপডেট: ১৩:৩১, ৬ মে ২০১৮
নিউগিনীর মানুষেরা একসময় মানুষ ও জীবজন্তুর হাড়গোড় দিয়ে ছুড়ি বানাতেন। প্রাণীর হাড় দিয়ে বানানো এই ছুড়ি তাদের কাছে ছিল ব্যাপক জনপ্রিয়। সম্যক যুদ্ধে এক দূর্দান্ত অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হতো এই ছুড়ি।
নিউগিনীর জনগন মূলত দু’টি উৎস থেকে এই হাড় সংগ্রহ করতেন। ক্যাসোয়ারি নামক ক্ষীপ্র গতিতে উড়তে সক্ষম একটি পাখির পায়ের হাড় এবং নিজেদের পূর্ব পুরুষদের মৃতদেহ থেকে এই হাড় সংগ্রহ করতো তারা।
রয়েল সোসাইটি ওপেন সায়েন্স জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে এমনটাই জানা গেছে।
সাংস্কৃতিক নৃতত্ত্ববীদ পল রসকো জানান যে, ‘নিউগিনীর পূর্ব পুরুষদের মধ্যে যারা জীবতকালে সম্যক যুদ্ধে নিজেদের সাহস ও শক্তির পরিচয় দিয়েছে তাদের উরুর হাড় দিয়ে ধারালো ছুড়ি তৈরি করত।’
সে সময় আত্মিক ও আধ্যাত্মিক বিষয়ের খুব প্রভাব ছিল। বিষয়টা এমন যে, জনমতে এই ধারণা ছিল যে, মৃত বাবা তার সন্তানের ওপর দৃষ্টি রাখছেন। আর আপনি যুদ্ধে আপনার বাবাকে নিয়ে যাচ্ছেন। তাই তখনকার সময়ে হাতিয়ার বা অন্যান্য অস্ত্রে বাবা বা তার বাবা এমন ব্যক্তিদের হাড় ব্যবহার করা হতো।
১৯৭০ সাল পর্যন্তও নিউ গিনীর বাসিন্দাদের মধ্যে এমন অস্ত্রের ব্যাপক প্রচলন দেখা যায়। বিশেষ করে সেপিক অঞ্চলের পুরুষেরা বড় ধরণের হামলা অথবা ছোট আকারে অ্যাম্বুশ হামলায় এসব অস্ত্র ব্যবহার করতো।
সম্যক হাতাহাতি যুদ্ধে এই ধরণের ছুড়ি বেশি ব্যবহৃত হতো। ধারালো এই অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষে গলা কেটে দেওয়া হতো।
অস্ত্র ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবেও দেওয়া হতো এসব অস্ত্র। এমনকি অলংকার হিসেবেও অনেকে সাথে রাখতেন এসব ছুড়ি। সাথে এসব ছুড়ি থাকার অর্থ ছিল ‘শক্তি ও বিপদ’। বহনকারী শক্তি এবং সম্ভাব্য আক্রমণকারীকে সতর্কতাস্বরুপ তাঁকে বিপদের কথা মনে করিয়ে দিতে এই ছুড়ি বহন করা হতো বলে জানান রসকো।
সূত্রঃ সিএনএন
//এস এইচ এস// এআর