নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মুখ খুললেন টিউলিপ
প্রকাশিত : ০৮:৫০, ৭ জানুয়ারি ২০২৫ | আপডেট: ১১:৫৮, ৭ জানুয়ারি ২০২৫
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে যুক্তরাজ্যে। লন্ডনে শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাওয়া ফ্ল্যাটে বসবাস করেছেন টিউলিপ। অবশেষে এ নিয়ে মুখ খুললেন যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
টিউলিপ সিদ্দিক যুক্তরাজ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি।
তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অব মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি লিখেছেন টিউলিপ। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
খবরে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা এক চিঠিতে মন্ত্রিত্বের কোনো বিধি লঙ্ঘন করেছেন কি না সে বিষয়ে তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন টিউলিপ।
চিঠিতে টিউলিপ লিখেছেন, গত কয়েক সপ্তাহে আমি গণমাধ্যমের বিষয়বস্তু হয়েছি, যার অনেক কিছুই সঠিক নয়। যেখানে আমার আর্থিক ও আমার পরিবারের বাংলাদেশের সাবেক সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক উঠে এসেছে।
তিনি আরও লিখেন ‘আমি একদম স্পষ্ট যে আমি কিছু ভুল করিনি। যাইহোক, সন্দেহ এড়ানোর জন্য আমি চাই আপনি স্বাধীনভাবে এগুলো নিয়ে সত্য প্রতিষ্ঠা করবেন।’
সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে লন্ডনের কিং’স ক্রস এলাকায় অবস্থিত ২ শয্যাকক্ষের একটি ফ্ল্যাট ২০০৪ সালে বিনামূল্যে টিউলিপ সিদ্দিককে আবদুল মোতালিফ নামের এক ব্যবসায়ী উপহার দিয়েছিলেন বলে জানানো হয়।
মোতালিফ বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১ লাখ ৯৫ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা) দিয়ে ২০০১ সালের জানুয়ারিতে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন আবদুল মোতালিফ। বেশ সস্তাতেই পেয়েছিলেন তিনি, কারণ একই বছর আগস্ট মাসে সেই ফ্ল্যাটটির পার্শ্ববর্তী আরেকটি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ডে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯ কোটি ৭৯ লাখ ৯৭ হাজার টাকা)।
যুক্তরাজ্যের ইলেক্টোরাল রোল ডেটার তথ্য বলছে, ২০০৪ সালে উপহার হিসেবে পাওয়ার পর কিং’স ক্রসের সেই ফ্ল্যাটটিতে কয়েক বছর ছিলেন টিউলিপ। এরপর তার অন্য ভাই-বোনরা ছিলেন আরও বেশ কয়েক বছর।
বর্তমানে ফ্ল্যাটটি ভাড়া দিয়েছেন টিউলিপ। সেখান থেকে বাৎসরিক ৯০ হাজার পাউন্ড (১ কোটি ৩৫ লাখ ৬৮ হাজার টাকা) উপার্জন হচ্ছে তার।
নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার আগ পর্যন্ত লেবার পার্টির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাজ্য শাখার ‘লবিং ইউনিট অ্যান্ড ইলেকশন স্ট্র্যাটেজি টিম’-এ সংশ্লিষ্ট ছিলেন তিনি। তার নির্বাচনে জয়ের ক্ষেত্রেও এ সংশ্লিষ্টতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
তবে কোনও নির্বাচনী হলফনামায় ফ্ল্যাটটির বিষয়ে উল্লেখ করেননি টিউলিপ।
এএইচ
আরও পড়ুন