ঢাকা, রবিবার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

‘নিরাপদ অঞ্চল’ ঘোষণা দিয়ে ইসরায়েলি হামলা, ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৮, ১৪ জুলাই ২০২৪

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নিজের ঘোষিত নিরাপদ এলাকায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো অন্তত ২৮৯ জন।

শনিবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার আল মাওয়াসি এলাকাকে নিরাপদ এলাকা ঘোষণা করে ইসরায়েল। তবে নিজেদের ঘোষিত সে এলাকাতেই ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে তারা। এলাকাটি গাজার দক্ষিণের খান ইউনিসের কাছাকাছি অবস্থিত।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, আল মাওয়াসিতে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।

অন্যদিকে হামাসের দাবি, এলাকাটিতে ইসরায়েল মানবিক অঞ্চল ঘোষণা দিয়ে সেখানে ফিলিস্তিনিদের আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।

ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা জানান, হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে লক্ষ্য করে আল মাওয়াসির উন্মুক্ত এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। এলাকাটিতে কেবল হামাসের সদস্যরা ছিলেন। কোনো বেসামরিক লোক এলাকাটিতে ছিলেন না।

ওই কর্মকর্তার দাবি, খান ইউনিসে হামাসের কমান্ডার রাফা সালামাকেও এই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেখানে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ওই কর্মকর্তা।

তবে হামাসের নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করার ইসরায়েলি দাবিকে মিথ্যা বলে অভিহিত করেছে হামাস। এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠী বলেছে, ফিলিস্তিনি নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করার ইসরায়েলি দাবি এটাই প্রথম নয়। অতীতেও তাদের এমন দাবি অসংখ্যবার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।

আল-মাওয়াসির একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, হামলার স্থানটি দেখে মনে হচ্ছে সেখানে বড় ধরনের ‘ভূমিকম্প’ আঘাত হেনেছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, ধ্বংসাবশেষ থেকে ধোঁয়া উড়ছে এবং স্ট্রেচারে করে হতাহতদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। লোকজনকে ‍শূন্য হাতে বিশাল গর্তের ধ্বংসস্তূপে মরিয়া হয়ে উদ্ধার তৎপরতার চেষ্টা চালাতে দেখা গেছে।

হামাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ঘোষিত নিরাপদ অঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর এই হামলা উত্তেজনার গুরুতর বৃদ্ধি। এর মাধ্যমে ইসরায়েল যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছাতে আগ্রহী নয়, সেটি পরিষ্কার।

আল-মাওয়াসির কাছে কুয়েতের স্থাপিত একটি ফিল্ড হাসপাতালের ভিডিওতে ব্যাপক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি দেখা যায়। সেখানে হাসপাতালের মেঝেতে আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

খান ইউনিসের নাসের মেডিক্যালের চিকিৎসকরা বলেছেন, হাসপাতালে প্রচুরসংখ্যক হতাহত মানুষকে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার মতো পরিস্থিতি নেই।

হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মাদ দেইফ ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর অন্যতম প্রধান টার্গেট। বন্দিদশা থেকে পালিয়ে এবং একাধিক হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে ফেরা দেইফের অবস্থান ঘিরে ইসরায়েলি বাহিনীর মাঝে ধোঁয়াশা রয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে মনে করা হয় তাকে। ওই দিন ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও আরো ২৫১ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে হামাস। পরে সেদিনই গাজায় সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। গত ৯ মাস ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে গাজা উপত্যকায় ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে।

এমএম//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি