নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও পুলিশের ভূমিকা
প্রকাশিত : ১১:৫০, ২০ আগস্ট ২০১৮ | আপডেট: ২০:০৩, ২০ আগস্ট ২০১৮
শুরুতেই বলে নিচ্ছি পুলিশ বাংলাদেশের এ আবহমান টিপিক্যাল সমজা ব্যবস্থারই একটা বাস্তব সত্য। সমাজের অন্য উপাদানগুলোর মতই পুলিশেরও কিছু ভুল ত্রুটি (deviations) রয়েছে। যেভাবেই হোক পুলিশ আলোচ্য আন্দোলনের একটা অংশ হয়ে গেছে, সেটা নিতান্তই পেশাগত দায়িত্ববোধ থেকেই।
অধিকন্ত পুলিশ আন্দোলনের একটা বড় অংশ এই মতে যে এই আন্দোলনের সঙ্গে পুলিশ একমত ও নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের একটি বড় স্টেইকহোল্ডারও বটে। নিঃসন্দেহে বলা যায়, সবার অংশগ্রহণে এই আন্দোলন আজ সবার কাছে প্রশংসিত। পুলিশসহ অনেকেই এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছে এবং আন্দোলনের ফলাফল আজ সবখানেই ইতিবাচকভাবেই উপলব্ধ। এই আন্দোলন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহারকে উল্লেখযোগ্যভাবে অভিজ্ঞতা লাভ করেছে।
বলা বাহুল্য হবে না যে, সাম্প্রতিক গণআন্দোলনগুলোর হালে পানির ফোয়ারা ফোটাচ্ছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো। আর সেখানেই বিপত্তি! পানি ঝড় হয়ে আসার কারনে বুমেরাং হয়ে যাচ্ছে স্বাভাবিক আন্দোলনগুলো। যাই হোক গুজব পীড়ায় সমাজ যখন আক্রান্ত, তখন এটা বলাই যায় যে, গণতান্ত্রিক চেতনার বিকাশ গুজবের কাছে কেন পরাজিত হবে। মোদ্দা কথাটা এখানেই। পুলিশ আইনের ভাষ্য নিয়ে পটে আগমন করলো তখনই; যখনই এই গুজব সহিংসতাকে উস্কে দিল আর সেটা জননিরাপত্তার খাতিরেই। স্বভাবতই পরে পুলিশ বেশ কিছু মামলা রুজু করে ও প্রায় অর্ধশত মানুষকে আইনের আওতায় নিয়ে আসে।
এর মধ্যে অনেকেই ছাত্র ও কয়েকটি মাইনর রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ অবশ্যই সহানুভূতিশীল এসব কোমলমতি ছাত্রদের ওপর। সম্মানিত কমিশনার মহোদয়ও আন্তরিক এইসব ছাত্রদের আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে। আর সেটার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। হয়তো ভিন্ন মতাবলম্বীরা বলবে এদের ওপর জুলুম বা এসল্ট করা হয়েছে, সেটা ১০০% মিথ্যা সেটা জামিনপ্রাপ্তদের কাছে শুনলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
এটা এখানে বলা প্রণিধানযোগ্য যে, যারা আতংক ছড়াচ্ছে যে সবার ফেসবুক প্রোফাইল সাইবার ইউনিটে ঘাটাঘাটি করা হচ্ছে সেটা ডাহা মিথ্যা বই কিছু না। আমি এখানে কাজ করি, আমি যা বলছি তাই কোট করবেন। সম্মানিত কমিশনার স্যার এর আদেশে আমরা মোটামুটি ১০০+ প্রোফাইল নিয়ে কাজ করছি, যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহিংসতার আহবান জানিয়েছে বা সহিংসতাকে উস্কে দিয়েছে।
তাই সাধারন কোমলপ্রাণ ছাত্রছাত্রী ভাইবোনদেরকে বলতে চাই যে, আতংকিত হবার কিছু নাই, পুলিশ তোমাদের কে খুজছে না বরং তোমাদের এই মহান ত্যাগকে শ্রদ্ধা জানায়। তবে বরাবরের মতই পুলিশ সাইবার ভাওলেন্স (social media enabled violence) কে রুখে দেবে ও সেখানে কোনো ছাড় নেই। আগেই বলা হয়েছে যারা আইনের আওতায় এসেছে তারাও আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই ন্যায়বিচার পাবে।
এই চিন্তার বাইরে গিয়ে পুলিশ আগ বাড়িয়ে অতি উতসাহী আচরণ করে নাই বা করবে না। তবে সাইবার ভাওলেন্স কারীদের ছাড় দেয়া হবে না। অতএব, সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা নিশ্চিন্তে থাকবে এবং তাদের জন্য শুভকামনা ও ঈদ মোবারক!!
*লেখক : ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার।
** লেখার মতামত লেখকের। একুশে টেলিভিশনের সম্পাদকীয় নীতিমালার সঙ্গে লেখকের মতামতের মিল নাও থাকতে পারে।