নির্বাচনের ২০ মাসেও পাস হয়নি গাকসুর বাজেট
প্রকাশিত : ২২:৪৬, ২৮ অক্টোবর ২০১৯
নির্বাচনের ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত পাস হয়নি গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (গাকসু) বাৎসরিক বাজেট। ছাত্র সংসদের নামে নির্দিষ্ট কোনও বাজেট পাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও তা দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না। এমনকি অনেক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অর্থাভাবে।
এদিকে, নির্দিষ্ট অর্থ বরাদ্দ না থাকায় বিশেষ কোনও কাজ দৃশ্যমান করতে না পারায় বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গাকসু’র একাধিক নেতা।
নির্বাচনের ২০ মাস পেরিয়ে গেলেও ছাত্র সংসদের শিক্ষার্থী বান্ধব বিশেষ কোনও কার্যক্রম না থাকায় এবং আয়-ব্যয়ের সুষ্ঠু কোনও হিসাব না থাকায় ক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বাজেট সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রশ্ন তোলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণ ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক মোঃ রনি আহম্মেদ।
তিনি বলেন, ‘বাজেট পাস না করে টাকা দিলে সে টাকা কোথা থেকে দেয়? কারোর ব্যক্তিগত টাকা দেয় নাকি? কত টাকা, কিভাবে, কোথা থেকে দেয়? সেটা উন্মুক্তভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সামনে হিসাব দেয়া উচিৎ। তবে আমি আগেই বলেছি, যেখানে মেয়াদ উত্তীর্ণ প্রশাসন ও অবৈধ ভিসি দিয়ে চলছে একটা বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে ভাল কিছু আশাই করা যায় না।’
বাজেটের বিষয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি (ভিপি) মোঃ জুয়েল রানা বলেন, ‘আমাদের অভিষেকের পরে বাজেট দেয়ার কথা ছিল। অভিষেকের পরে ছাত্র সংসদের সঙ্গে ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ভিসি ম্যাম, ডীন, বিভাগীয় প্রধান, রেজিষ্ট্রারস্যারসহ অনেকেই বসেছিলেন। সেখানে তাদের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে বাজেট দেয়ার কথা হলেও আমাদের এখনও কোনও বাজেট দেয়া হয়নি। আমাদের হাতে অনেক কাজ আছে, কিন্তু বাজেট ছাড়া কাজ করতে আমাদের প্রচুর পরিমাণ সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। অনেক সময় আমাদের টাকা ধার করে অথবা নিজেদের পকেট থেকে দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু এভাবে কতটুকু করা যায়। অতিসত্বর যদি আমাদের বাজেট বুঝিয়ে দেয়া হয়, তবেই আমরা ক্যাম্পাসে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করতে পারবো।’
গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল হাসান শিপন বলেন, ‘অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে আমাদের মুক্ত মঞ্চের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিন্তু অক্টোবরের এখন প্রায় শেষ, তবুও একমাসে কোনও কার্যক্রম আমরা দেখতে পায়নি। এদিকে বাজেট না থাকায় আমাদের ধার করে অথবা নিজেদের পকেট থেকে টাকা দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আমাদের হাতে অনেক কাজ, কিন্ত বাজেট না থাকলে আমরা তা করবো কিভাবে? আমরা আশা করি, আমাদের যত সমস্যা আছে তা দ্রুত সময়ের মধ্য প্রশাসন থেকে সমাধান করা হবে।’
বাজেট সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে জানতে গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডাঃ লায়লা পারভীন বানুর (চলতি দায়িত্ব) সঙ্গে কথা বলতে কয়েকদিন তার অফিসে গেলেও তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে দেখা করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের (১৫ ফেব্রুয়ারী) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন গাকসু নেতারা। নির্বাচনের ৬ মাসের মাথায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্র সংসদ বন্ধের নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। নিষেধাজ্ঞা জারির সাত মাস আঠারো দিনের মাথায় ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
পরে এ বছরের ১২ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে অভিষেক হয় গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নেতাদের।
এনএস/
আরও পড়ুন