নুসরাতের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ
প্রকাশিত : ০৮:৪১, ১০ এপ্রিল ২০২০
আজ ১০ এপ্রিল, ফেনীর আলোচিত সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী (আলিম পরীক্ষার্থী) নুসরাত জাহান রাফির প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।
গত বছরে দেশে ঘটে যাওয়া আলোচিত ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল এটি। তবে বছর পেরিয়ে গেলেও নুসরাতের পরিবারের কান্না এখনো থামেনি। শেষ হয়নি অপেক্ষার প্রহর, তারা এখন শুধুই আসামিদের ফাঁসি কার্যকর চায়।
২০১৯ সালের ৬ এপ্রিল। নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাদে নুসরাতের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। একজন মানুষের শরীরের ৮০ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়ার পরও বেঁচে থাকার যে কষ্ট তা সে সময় মানুষকে নাড়া দিয়েছিল। সেই আলোচিত নৃশংস অগ্নিসন্ত্রাসের পর তার মৃত্যুর এক বছর অতিক্রম হল আজ।
ওই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়াও সমাজের প্রায় প্রতিটি স্তরে এ ঘটনা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছিলেন নুসরাতের মা শিরিন আখতার। ওইদিনই অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর তার অনুগত কিছু সাবেক ও বর্তমান ছাত্র জনমত গঠন করে সিরাজকে জেল থেকে বের করে আনার জন্য।
তারা ৩ এপ্রিল সিরাজের সঙ্গে কারাগারে পরামর্শ করে এসে ৪ এপ্রিল মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে নুসরাতকে খুন করার পরিকল্পনা নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৬ এপ্রিল নুসরাত মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে খুনিরা পরিকল্পিতভাবে সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে নুসরাতকে হত্যার চেষ্টা চালায়। ঘটনাস্থল থেকে নুসরাতকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর তাকে স্থানান্থর করা হয় ফেনী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় সেখান থেকে নুসরাতকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। এ ঘটনায় নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল মামলা দায়ের করেন। কয়েকদিন নির্মম যন্ত্রণা নিয়ে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত।
এই মামলায় ২৮ মে অভিযোগপত্র দাখিলের পর ২০ জুন অভিযোগ গঠন করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। পরে সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ৩০ সেপ্টেম্বর আদালত রায়ের জন্য ২৪ অক্টোবর নির্ধারণ করেন। মামলাটিতে মাত্র ৬১ কার্যদিবসে ৮৭ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক গ্রহণ করা হয়।
২৪ অক্টোবর রায়ে ১৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ। পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে একলাখ টাকা করে জরিমানা দণ্ডেও দণ্ডিত করেন।
এসএ/