ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪

নোবিপ্রবি জিপিএর প্রাধান্য, ভর্তি-ইচ্ছুকদের ক্ষোভ

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ১৮:৩৪, ১৯ নভেম্বর ২০২১

এবছর এইচএসসি পরীক্ষায় অটোপাশের বিষয়টি মাথায় রেখে ঢাকা, চট্টগ্রাম, জগন্নাথ ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল থেকে ২০ নাম্বার রেখেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, গুচ্ছভুক্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের জন্য আলাদা নম্বরই রাখেনি। 

কিন্তু নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জিপিএ-১০০ নাম্বার, এসএসসিতে যথাক্রমে ৫০ এবং জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে দেওয়া অটোপাশের এইচএসসিতে ৫০ নাম্বার রেখেছে। বলা চলে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় ফলাফলের ওপরই এখন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নির্ভর করছে। নোবিপ্রবির ভর্তি সার্কুলার প্রকাশ করার পর পরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে অনেক ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা। জিপিএতে-১০০ নাম্বার এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক বলে দাবি করেন তারা।

জিএসটি স্কোর ৬২.৫ পাওয়া একজন ভর্তিচ্ছু তানভীর শরিফ বলেন, জিপিএর উপর ১০০ নাম্বার রাখা আমি অযোক্তিক মনে করছি। জিপিএর ১০০ রাখা মানে জিপিএর নাম্বার দিয়ে মূলত মেরিট পজিশন নির্ধারণ করা হচ্ছে। আমি ৬২.২৫ পেয়েও যারা ৪৫ পেয়েছে তাদের নিচে পড়ে যাচ্ছি শুধু মাত্র জিপিএর উপর ১০০ নাম্বার রাখার কারণে। তাহলে গুচ্ছ ভর্তি পরিক্ষা নেয়ার যৌক্তিকতা কি। জিপিএর নাম্বারের উপর নির্ধারণ করেই মেরিট প্রকাশ করতে পারতো। আর তাছাড়া এবার যেহেতু এইচএসসিতে অটো পাশ দিয়েছে আর এই অটোপাশে সঠিক মেধার মূল্যায়ন হয়নি তাই বিতর্কিত রেজাল্টের উপর নাম্বার রাখা আদৌ ঠিক মনে করিনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যথাসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিবে বলে আমি আশা করি। 

নুর মোহাম্মদ আতিক নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, যেখানে ঢাবি,চবি,জবি, জাবি সহ আরও অনেক ভার্সিটি ২০ এর বেশি জিপিএ মার্ক রাখেনি, সেখানে নোবিপ্রবিতে জিপিএ ১০০ নাম্বার এটা মোটেও যৌক্তিকতা নেই। এখন একজন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় পেলো ৩০ তার জিপিএতে আছে ১০০ আরেকজন পরীক্ষায় ফেলো ৫০ তার জিপিএতে আছে ৭৫ তাহলে ৩০ পাওয়াটা এগিয়ে গেলো না? এটা'ত চরম বৈষম্য। এ বছর অটো পাস, ভুরিভুরি জিপিএ ফাইভ, এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিবেচনা করা উচিত।

পলাশ হাসান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, নোবিপ্রবিতে জিপিএ এর উপর যেই ১০০ মার্ক দিয়েছে তা অযৌক্তিক! জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় তারা দুই বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমে ১০০ নাম্বার রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে শিক্ষার্থীদের উৎকন্ঠায় তারা তাদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে ২০ নাম্বার এ রূপান্তর করেন। আমরা আশা করব নোবিপ্রবি প্রশাসনও শিক্ষার্থী বান্ধব হিসেবে আমাদের উৎকন্ঠার কথা এবং এবারের অটোপাশের কথা চিন্তা করে জিপিএ এর উপর যেই ১০০ মার্ক দিয়েছেন তা থেকে সরে এসে ২০/১০ এ রূপান্তর করবেন।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ দিদার-উল-আলম বলেন, ভর্তি পরীক্ষার জিপিএর বিষয়টি এ মুহুর্তে আমার খেয়াল নেই। আমি জিপিএ সম্পর্কে ঠিক বলতে পারব না। বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য ভর্তি কমিটির আহবায়কের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী ভর্তি কমিটির আহবায়কের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। 

এ বিষয়ে নোবিপ্রবি ভর্তি কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সেলিম হোসেন বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএর যে সিদ্ধান্ত হয়েছে এটি ভর্তি কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত। করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা এবারে এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলেও এসএসসি পরীক্ষার সময় তারা পড়াশোনা করেই পরীক্ষা দিয়েছে সেইদিক বিবেচনায় আমরা জিপিএ কে গুরুত্ব দিয়েছি। এখন যারা আবেদন করবে আমাদের ভর্তি কমিটির সিদ্ধান্ত মেনেই আবেদন করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, যেহেতু জেএসসি এবং এসএসসি ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসি'র ফলাফল দেওয়া হয়েছে সুতরাং এটা অটোপাশ হলেও ভ্যালুলেস নয়। কারণ যারাই জেএসসি এবং এসএসসি ভালো করেছে তারাই কিন্তু এইচএসসিতে ভালো করেছে। যেহেতু বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ জানিয়েছেন ২৩ তারিখ একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিং রয়েছে সেখানে আমরা বিষয়টি আলোচনা করবো।
কেআই//


Ekushey Television Ltd.










© ২০২৪ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি